অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৩

কপিবাজ


: হ্যালো ভাই, লেখাটা কি আপনার?
- হ্যা আমার
: আপনি সিওর?
-(উত্তর নাই)
: উত্তর দেন ভাই
- না ভাই আমার না,
: তাইলে কারটেসী ছাড়া পোস্ট দিলেন যে? এইটারে তো চুরি কয়
- ভাই মাইন্ড কইরেন না, আমি একটা মেয়েকে পটানোর চেষ্টা করছি। সে আবার গল্প পছন্দ করে। তাই অনেকের লেখাই পোস্ট করি
: ও, আমার লেখা পড়ে ওই মেয়ে পটবে?
- জানিনা ভাই, পটতে পারে
: আইচ্চা তাইলে কপি কইরেন
– থ্যাংক ইউ ভাই
: আরেকটা জিনিস, ওই মাইয়ারে কইয়েন আমারে ব্লক মারতে, শুধু আমারে না , যাদের লেখা কপি করেন সবাইকে ব্লক মারতে বইলেন।
- ক্যান ভাই?
: আমার লেখা পড়লে আমারে চোর কইব। আপনি কি চান আমারে চোর ভাবুক?
- আচ্ছা কমুনে
*কপি বাজদের প্রতি সদয় হোন,
তারা সাধে কপি দেয় না। জয় হোক
কপি বাজদের

শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

গানের একমাত্র শ্রোতা (ছোটগল্প)

-আপু, তুই আসলে, আসলে একটা ই, মানে চরম বিরক্তিকর।
হেডফোন টা কান থেকে খুলতে খুলতে আদৃতা জবাব দিলো
*কিছু বলছিস?
-কি যেনো বলে? ও, বয়রা হয়ে গেছিস নাকি? বলছি তুই একটা উচ্চমাত্রার বিরক্তিকর বস্তু।
*বয়রা হব কেন? বিরক্তিকর মানে? তোর সমস্যা কি?
-এই যে সারাক্ষন কানের ভিতর হেডফোন লাগিয়ে রাখিস, একটা সময়ের জন্য তো কান থেকে ওই বস্তু তোর সরে না।
*তাতে তোর কি? যা পড়তে বস
-তোর দেখিস কানের ডাক্তারের সাথে বিয়ে হবে। যে সবসময় তোর কানের চিকিৎসা করবে।
*জ্বী না। আমার বিয়ে হবে একটা গায়কের সাথে, যে শুধু আমার জন্য গান গাইবে।
-হুম, হেডফোন আর মোবাইল টাকেই বিয়ে করে ফেল, সারাদিন তোর কানের কাছে প্যাঁ প্যাঁ করবে।
*বেশি প্যাঁচাল পাড়িস না, যা ভাগ।

-যাচ্ছি যাচ্ছি আজ গ্রাম থেকে সেই ছেলেটা আসছে।
*কোনটা?
-সজল
*ভেজাল ! আব্বুর ওই গাইয়্যা ক্ষ্যাত টা!?
তিশা আর আদৃতার কাছে ঢাকার বাইরে মানেই গ্রাম, আর সেখান কার মানুষেরা গ্রাম্য ক্ষ্যাত। গ্রামের ক্ষ্যাত রা মূর্খ হয়। সুগন্ধ-দুর্গন্ধের মাঝে পার্থক্য বোঝেনা।
-আচ্ছা আপু, সজল ভাইয়া কে দেখে তো আমার গ্রামের ক্ষ্যাত মনে হয় না, ভালই তো স্মার্ট লাগে। তুই তার নাম শুনলে এমন করিস ক্যান?
*হ বলেছে তোকে? তোর ভালো লাগলে তুই ওই ভেজালের সাথে প্রেম কর। আমার কানের কাছে ঘ্যনর ঘ্যনর করিস না।
-আপু, আমার বয়ফ্রেন্ড আছে, আমি কেনো আরেকজনের সাথে প্রেম করব? তোমার বয়ফ্রেন্ড নাই তাই তুমি কর।
*আমার বয়ফ্রেন্ড নাই তো কি হয়েছে? আমার পিছনে কত ছেলে ঘোরে জানিস? আমিই তাদের পাত্তা দেই না।
-পাত্তা দাও না নাকি চান্স পাও না তা আমি কিভাবে বলব?
*তোর পাকনামি বন্ধ করলি? এইটুকু মেয়ের বয়ফ্রেন্ড আছে সেটা আবার আমাকে বলছে, আম্মুকে সব বলে দেবো
-আপু আমি এইটুকু না, এক বছর পর আমার আঠারো হবে, আর তুইও আমার চেয়ে মাত্র তিন বছরের বড়।
*ওকে, মেনে নিলাম আপনি বড়, আমার চেয়েও বড়। এবার ওই ভেজাল টা আসলে আপনি তাকে সামলিয়েন একটু
-আমার স্কুল আছে, কোচিং আছে, তোকেই সামলানো লাগবে রে। আর সম্মান দেয়ার জন্য তোকে থ্যাঙ্কস
ভেজাল টা আদৃতার ঘাড়েই চাপছে। আদৃতার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। রাগ হলে আদৃতা ঘরের ভিতর পায়চারি করে। ভেজাল টা আসলেই তার মাথায় এক বালতি জল ঢেলে দিতে হবে।
-দেখতো আদৃ কে এলো? দরজা টা খুলে দিয়ে আয়।
আদৃতার আম্মুর গলা শুনেই আদৃতা বুঝে গেলো ভেজাল টা চলে এসেছে। এবার ওকে আচ্ছামত টাইট দিতে হবে। দরজা খুলেই অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ভেজাল টার দিকে।
-আ_আমি সজল, আন্টি আংকেল কেউ বাসায় নেই।
গলা খাকারী দিয়ে কথা গুলো বলল সজল
*আসুন
সজল কে একটা ঘর দেখিয়ে দিয়ে রান্নাঘরে গেলো আদৃতা।
-আম্মু, ক্ষ্যাত টা কতদিন থাকবে?
*কিসের ক্ষ্যাত?
-ওই যে সজল না ভেজাল কি যেনো নাম
*কি আবোল তাবোল বলছিস? ছেলেটা ভালো স্টুডেন্ট, দেখতেও ভালো, আর তুই ওকে ক্ষ্যাত বলছিস??
-তুমি তো ওর চুলের অবস্থা দেখোনি আম্মু। দেখলে বুঝতে ক্ষ্যাত না পাখির বাসা
*তোর ওতো চুল নিয়ে ভাবা লাগবে না , ওকে গিয়ে বল কিছু লাগবে নাকি, যা লাগে দিস
-আপনার কিছু লাগবে?
*না লাগবে না। (কিছুটা নড়েচড়ে সজল কথাটা বলল)
আদৃতা চলে যেতে গিয়ে আবার ঘুরে তাকিয়ে বলল
-আপনার চুল গুলোর ওই অবস্থা কেনো?
*কি অবস্থা?
-এই যে পাখির বাসার মত।
*ও, বাসের জানালার পাশে বসে ছিলাম তো তাই বাতাসে এলোমেলো হয়ে গেছে
-বিদ্ঘুটে পাখির বাসা
*আচ্ছা এই মেয়ে শুনুন, আমাকে এক গ্লাস পানি দিন প্লিজ
-আমি এই মেয়ে না, আমার নাম আদৃতা, আর একটু আগেই বললেন আপনার কিছু লাগবে না, ওকে দিচ্ছি
*আ…দৃ….তা, ছোট্ট নাম, অনেক সুন্দর। আমি কোনো গল্পের বই টই আনিনি, আমাকে কিছু বই দিয়ে যেতে পারবেন?
-ছোট নাম এতো টেনে বলার কি আছে? আদৃতা ছোট না মাঝারী নাম । যা দরকার একবারে বলুন, বারেবারে বিরক্ত করবেন না।
*আচ্ছা ঠিক আছে, আমি একটু শেভ করব। শেভিং ক্রীম আর স্যভলন আনতে ভুলে গিয়েছি। আংকেলের থাকলে একটু দিয়ে যাবেন প্লিজ
-উফ! ডিসগাস্টিং। ওক্কে
আদৃতা সজল কে ঈশপের গল্পের বই দিয়ে গেছে। ঈশপের গল্প পড়ার ইচ্ছা নেই সজলের।
মুখে খোচা খোচা দাড়ি বিশ্রী লাগছে। শেভ টা করে ফেলতে হবে। শেভ করতে গিয়ে বাধল বিপত্তি। কিছুতেই ফেনা হচ্ছে না। সম্ভবত শেভিং ক্রিম টা ভালোনা।
আদৃতা কে ডাক দিয়ে সজল বলল
*আপনার বাবার শেভিং ক্রিমে ভেজাল আছে , কিছুতেই ফেনা হচ্ছে না।
-মোটেও না। বাবা তো ঠিকই শেভ করেন।
আদৃতা খেয়াল করল স্যাভলনের টিউব খোলা। আদৃতা রাগ চরমে নিয়ে বলল
-ভেজাল আপনার মাঝে। আপনি স্যাভলন ক্রিম লাগিয়ে বলছেন শেভিং ক্রীমে ভেজাল! আসলেই আপনি ভেজাল
সুন্দরী মেয়েদের রাগের অভিব্যাক্তি খারাপ লাগে না। সজলেরও খারাপ লাগছে না। তাই সে হাসি ছাড়া কিছুই দিতে পারছে না। হাসি টা আসলেই ক্ষ্যাত মার্কা ছিল যা আদৃতা কে আরো রাগিয়ে দিল
“ডুবুরি হয়ে ডুব দিয়েছি প্রেমেরই সাগর জলে, চাতুরি জানে #ঝিনুকমালা ভুলব না তার ছলে” সন্ধ্যার পর গীটারের বাজনার সাথে সুন্দর একটা গান ভেসে আসছে। গানটা বাসারই কেউ গাইছে। ভালই লাগছে গানটা। গানের উৎসের দিকে এগিয়ে গিয়ে আদৃতা বুঝল গানটা সজল গাইছে। বাহ কন্ঠ টা তো খারাপ না, গীটারও ভালোই বাজায়। কিছুক্ষন দরজায় দাঁড়িয়ে গান শুনতে লাগলো আদৃতা । একি আদৃতা ক্ষ্যাত টার গান শুনছে কেন? নিজেকেই প্রশ্ন করে । দরজা ঠেলে ধমকের সুরে বলে
-গান গাইছেন কেন?
গান থামিয়ে সজল জবাব দিল
*গান গাওয়া তো খারাপ না
-হ্যা খারাপ। তাও আবার প্রেমের গান গাইছেন
এটা বলেই বেরিয়ে যেতে গেলো আদৃতা
“আকাশ কাদে বাতাস কাদে কাদে আমার মন…”
-একি? আবার গান গাইছেন?
*স্যাড, স্যাড গান। আপনি বললেন প্রেমের গান গাওয়া যাবে না তাই স্যাড গান গাচ্ছি
-প্রেম ভালোবাসা ছাড়া আপনার মাথায় কিছু নেই?
*আছে তো,
“আমি ফাইস্যা গেছি, হো আমি ফাইস্যা গেছি, আমি ফাইস্যা গেছি মাইনকা চিপায়”
এবার আর হাসি থামিয়ে রাখতে পারলোনা আদৃতা। হাসতে হাসতেই বলল।
-এটা আবার কি গান ?
*প্রেমের কিংবা স্যাড গান না । কমেডি গান
-থাক থাক আপনাকে আর গাওয়া লাগবে না। অনেক সুন্দর গান গাইতে পারেন আপনি
গ্রামের ক্ষ্যাত টা গীটার বাজাতে পারে ভালোই, সাথে গলাটাও দারুন। স্মার্ট গ্রামের ক্ষ্যাত টা গায়ক হিসেবে ভালই।
“এই মেয়ে ভাবছো কি আনমনে? পড়েছি তোমার প্রেমে, ভালোবাসবে কি আমায়?”
-এমন গান তো আগে শুনিনি
*কিছু কিছু গান নতুন করে তৈরী হয় যার শ্রোতা একজন থাকে সবসময়
কিছু কিছু গানের একমাত্র শ্রোতা হতে পারাটাও ভাগ্যর ব্যাপার

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩

ফেসবুকের প্রতারনার হাত থেকে ছেলে এবং মেয়ে উভয়কে সতর্কীকরণ


সেঃ-হাই
আমিঃ-তুমি তো তোমার ভাইকে ভুলেই গেছ। (কারন নামটা ছিল আমার এক লিস্টেড সিস্টার এর নাম, তাই আমি আমার বোন ভেবেই কথা বলছিলাম)
সেঃ-আপ্নাকে কি ভোলা যায়। মিস ইউ সো মাচ। (এখানেই আমার খটকা লাগে, কারন আমার এই বোন কখনো আমাকে আপনি বলেনি। প্রোফাইলে ঢুকে দেখি ইনি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে নেই, কিন্তু আমার আপুর সব ছবি দিয়ে আইডি টা খোলা। লাইক অপশনে দেখলাম লুল বালকদের আকৃষ্ট করার জন্য বেশ কিছু এডাল্ট পেজে লাইক দেয়া। আমি তবুও তার সাথে কথোপকথন চালিয়ে যেতে লাগলাম)

আমিঃ-আহা দরদ যেনো উথলে পড়ছে! কেমন আছেন?
সেঃ-ভালো না
আমিঃ-কেন? :o
সেঃ-অসুস্থ
আমিঃ-তো ডাক্তার দেখান
সেঃ-টাকা নাই, আমাকে কিছু টাকা ধার দিতে পারবেন?
আমিঃ-কত লাগবে?
সেঃ-২০০০ দিলে আপনার সাথে হোটেলে যাবো
আমিঃ-আমি হোটেলে খাই নয়া
সেঃ-আরে কিছুই বোঝেন না দেখি (সংক্ষেপিত)
আমিঃ-টাকা কিভাবে পাঠাতে হবে সেটা বলেন

আমাকে একটা বিকাশ নাম্বার দিলো
আমি তাকে কিছুক্ষন পর বললাম টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি
সে বলল কই টাকা আসেনি তো
আমিঃ- টেকনিক্যাল্ প্রবলেম থাকতে পারে, আবার দিচ্ছি
সে ঘন্টা খানেক পর বলল এখনো আসেনি
আমিঃ-নাম্বার ভুল ছিলো হয়ত, আবার দিচ্ছি
এরপর সে আমার ইনবক্স এ কিছুক্ষন পর পর মেসেজ দিতে লাগলো এখনো আসেনি, এখনো আসেনি
অতঃপর সে আমাকে গালিগালাজ আরম্ভ করল এবং ব্লক করল।

এখন আসল কথায় আসি, আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে। সেদিন এক ছেলে আমাকে একটা মেয়ের আইডি লিঙ্ক দিয়ে বলল ভাই এটাকে চেনেন? দেখলাম এটাও আমার ফ্রেন্ডলিস্টের একজনের নামে ফেইক আইডি হয়ত কোনো পেত্নী খুলেছে। তবুও বললাম চিনি, কি হয়েছে?
ছেলেঃ- এই মেয়ে আমার কাছ থেকে ১০০০০ টাকা খেয়েছে, আমার সাথে ৩মাস প্রেম করেছে, আমি একটা ফোন গিফট করেছি
আমিঃ-কোনোদিন দেখেছেন একে?
ছেলেঃ-না, আমি এর ছবি দিয়ে পর্ণগ্রাফি বানিয়ে ছড়িয়ে দেবো
আমিঃ-থামেন ভাই, এইটা ওই মেয়ের ছবি না। ওই মেয়ে আসলে কোনো পেত্নী হবে তাই অন্যের ছবি দিয়ে আপনার সাথে প্রেম করেছে। আপনি ওর জন্য আরেকটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে পারেন না।

আরেক ছেলে আমাকে বলল আমার সাথে অনেকদিন একটা মেয়ের বন্ধুত্ব, আজ সে হঠাত করেই আমার কাছে ৫০০০ হাজার টাকা চেয়ে বসে, আমি বিকাশ করতে গিয়েও করলাম না। কারন মেয়েটা অনেক দুরের, জাস্ট ফেবুতেই পরিচয়, তাই ভাবলাম আপনাকে জানিয়ে নেই

ছেলেদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ফেসবুকে কোনো মেয়ে রুপি আইডির মিষ্টি কথায় ভুলবেন না। আইডি টা কোনো ছেলের কিংবা পেত্নির কিংবা কোনো বাজারির হতে পারে। আপনার শত ঘনিষ্ট হোক, তবুও সে কখনোই হাজার হাজার টাকা চাইবে না। আর ভাবুন একটা মেয়ে হাজার হাজার টাকার জন্য আপনাকে কেন বলবে? তার টাকার দরকার হলে তার বাবা মা কে বলবে। আর কি প্রয়োজনে টাকাটা লাগবে সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে নিজের সতর্কতাটা নিজের কাছেই। এতে হয়ত কারো সাথে আপনার বন্ধুত্ব নষ্ট হবে, কিন্তু আপনি ধোকার হাত থেকে বেচে যাবেন।

এবার মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলি, অনেক মেয়েই ফেসবুকে এসে প্রেম করেন। কিন্তু এমনো হয় যার সাথে প্রেম করছেন সে একাধিক মেয়ের সাথে প্রেম করছে(সবার ক্ষেত্রে না)। বাস্তব জিবনে আপনার বিএফ অন্য কারো সাথে প্রেম করলে সেটা হয়ত ধরতে পারবেন কিন্তু ভারচুয়াল জগতে ধরা ততোটা সহজ না। শেষমেশ ধোকা খেয়ে কান্নাকাটি করবেন। অনেক মেয়েই আবার ফেবু সেলিব্রেটি টাইপের কিছু ছেলের প্রেমে পড়ে যান। সেই সেলিব্রেটি আবার বুইড়া ভাম হতে পারে। নিজের ২০-৩০ টা ছবি তাকে দিয়ে বসেন। পরে সে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে, আপনার ছবি পর্ণ সাইটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। আবার এই ছবিগুলো দিয়েই ফেইক আইডি খুলে ছেলেদের ব্ল্যাকমেইল করা হয়। এই ছবি সংগ্রহকারীরা একটা সক্রিয় চক্র। এরা একাধিক মেয়ের কাছ থেকে ছবি নিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে। তাই আপুদের বলছি বিশ্বস্ত কেউ না হলে তাকে এভাবে ছবি দেবেন না। এবার প্রশ্ন আসতে পারে কেউ বিশ্বস্ত কিনা তা কিভাবে বুঝবো? এমন অনেকে আছে যাদের বিশ্বাস না করে পারা যায় না। [কেউ #বিশ্বস্ত কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য আপনি বিভিন্ন নিক নাম, সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিচিতি দিয়ে ২-৩ টা ফেইক আইডি খুলুন, সেই আইডি গুলো কে নিজের ফ্রেন্ডলিস্টে রাখবেন না। আইডি খোলার কিছুদিন পর কাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তির বিশ্বস্ততা পরীক্ষা করুন। সে যদি বিশ্বস্ত না হয় তবে অপরিচিত মানুষ পেয়ে আপনাকে ফাদে ফেলানোর চেষ্টা করবে। একাধিক আইডি দিয়ে একই ব্যাক্তির সাথে চ্যাট করলে আপনি খুব সহজেই বুঝবেন সে বিশ্বস্ত কিনা যদি আপনার ন্যূনতম জ্ঞান থাকে। (এটা ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)] আমি বলছি না বিশ্বস্ত কেউ একেবারেই নেই, অবশ্যই আছে যেগুলো আপনি নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করলেই খুজে পাবেন।

এবার মেয়েদের ছবি দেয়া প্রসঙ্গে বলি, আপনারা নিজের ছবি ফেবু তে আপলোড করলে তা প্রাইভেসি দিয়ে রাখুন, এমন এমন ছবি দিন এডিট করা প্রায় অসম্ভব। ছবিগুলো তে বিভিন্ন ইফেক্ট/ফিল্টার ব্যাবহার করতে পারেন, যাতে বোঝা যায় আপনি সুন্দরি কিন্তু সেটা দিয়ে কারো পর্ণগ্রাফি করার যেন ক্ষমতা না থাকে। আর সবচেয়ে ভালো হয় নিজের ছবি না দেয়া। এটা আপনার সতর্কতার জন্য।

যাই হোক অনেক কথা বললাম, হ্যাপি ফেসবুকিং। [বিদ্রঃ ফেইক আইডি গুলা যেনো কুকামে লাগাইয়েন না :p আপ্নের কাম হইয়া গেলে ফালাইয়া রাইখেন :P জুকারের ফেসবুক জনসংখ্যা আশা করি অতি দ্রুতই পৃথিবীর জনসংখ্যা কে অতিক্রম করবে ]

রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৩

ফেসবুক মেসেজ বিড়ম্বনা (রম্য)


\ফেসবুকে ঢোকার পর ফ্রেন্ড লিস্টের বাইরে থাকা ৫ জনের মেসেজ একবারে দেখে নিজেই কিছুক্ষনের জন্য আবুল হয়ে গেলাম। এগুলো তুলে না ধরে পারলাম না।

১ম জনঃ- এড মি প্লিজ। আই অ্যাম ব্লক। প্লিজ প্লিজ এড মি।
এই টাইপের মেসেজ আমার মত অনেকেই পেয়ে থাকেন এবং সবারই হয়ত আমার মত রাগ হয়। মনডায় চায় তখন ঠাডায়া একটা থাবড়া দেই >_<
আমিঃ- আমিও ব্লক আছি :'( কি যে করি
সে আবার রিপ্লি দিলোঃ- ভন্ডামী করার জায়গা পাও না। ব্লক থাকলে কেউ মেসেজ দিতে পারে?
আমিঃ- ভাবতেছি ভন্ডামী করার ১০১ উপায় নামে বই লিখব। ভালো চলবে হয়ত। কিনবেন কিন্তু। (অতঃপর আমাকে ব্লক মারা হল)
২য় জনঃ- ভাইয়া প্লিজ আমাকে এই পেজের এডমিন বানান।
আমিঃ- আমার তো কোনো পেজ নাই
২য় জনঃ- এডমিন ভাই আপনার এই পেজের কথাই বলছি
এতোক্ষনে বুঝলাম উনি আমার আইডি কে পেজ ভাবছেন। এই আবুল টা পেজ আর আইডির পার্থক্য বোঝেনা। প্রোফাইল চেক করে দেখলাম ইন আ রিলেশন শিপ উইথ অমুক পোলা। বুঝলাম এইডা পোলা মাইয়ারও পার্থক্য বোঝেনা
আমি তাকে আরিফ ভাইয়ের আইডি লিঙ্ক দিয়ে বললাম “আমার মত ছোট পেজের এডমিন হয়ে কি করবেন? ইনি এডমিন খুজছেন। ইনার কাছে গিয়ে বলুন, একবারে এডমিন বানাবে”
৩য় জন আমাকে তার প্রোফাইল পিকচারের লিঙ্ক দিয়ে মেসেজ করেছে। লিঙ্কে ঢুকে দেখলাম প্রায় ১৫০০০ লাইক । ছবিটাও ১বছর আগের। বুঝলাম উনি ফ্রেন্ডলিস্টের বাইরে থেকে লাইক কালেক্ট করছেন। আমার ভাবতে অবাক লাগে মাত্র ২-৩টা প্রোফাইল পিকচারের পেছনে এরা পুরো ফেসবুক ক্যারিয়ার টা নষ্ট করে কি লাভ পায়?
চতুর্থ জনঃ- ভাইজান রিকু দিলাম, এক্সেপ্ট করলেন না, সোজা ডিলেট মারলেন? কাজ টা ভালো করলেন না
আমিঃ- শ্রদ্ধেয় বড় ভাই, আপনার প্রোফাইল ঘুরে দেখলাম ১৮+, ২০+, ২৪+, ৩০+ বিভিন্ন মাত্রার চিত্তাকর্ষক পেজে লাইক দেয়া। তার পাশেই পবিত্র কোরআন শরীফ, মা, আল্লাহ ইত্যাদি পেজে লাইক দেয়া। আমার বয়স এখনো ১৮ হয়নি, তাছাড়া আমি এসব মাল্টি ক্যারেক্টার বুঝিনা। সব কিছু মিলিয়ে ভাব্লাম আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকার আমার কোনো যোগ্যতাই নেই। তাই স্বেচ্ছায় সরে এলাম। আর এডাল্ট পেজের উপর থিসিস করতে পারেন। অনেকদুর যেতে পারবেন।
ছাগলের ৫ নাম্বার বাচ্চার মেসেজ টা আরো ভয়ানক। ওটার কথা এখানে আর বললাম না।
[উপরের ঘটনাগুলো কারো সাথে মিলে গেলে তা পুরোটাই কাকতালীয়, এর জন্য আমি দায়ী থাকব না। ঘটনা গুলো মিলতে বাধ্য]



বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৩

পড়শির হিন্দি গান ও কিছু কথা

ভাষা আন্দোলনের সবচেয়ে প্রধান কারন ছিল সালাম, রফিক এবং সেই সময়কার মানুষেরা খুব একটা ট্যালেন্ট ছিল না। তাদের ক্ষমতা ছিল না অতিরিক্ত আরেকটি ভাষা রপ্ত করার। তাই তারা রাজপথে নেমেছিল। আসলেই তারা বোকা ছিল। কারন তাদের এই হুশ টুকু ছিলনা যে উর্দু ভাষার জাত ভাই আমাদের প্রানের ভাষা হয়ে উঠবে। মুলত অর্থগত দিক দিয়ে হিন্দি আর উর্দু প্রায় একই। আমরা এতটাই ট্যালেন্ট যে আমরা একটা বাড়তি ভাষাই শুধু শিখছি না, সেটাকে আপন করে নিচ্ছি। ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা বাংলা শেখার আগেই হিন্দি শিখে নিচ্ছে। তাদের কে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তোমার মাতৃভাষা কি তবে হয়ত তাদের কে চরম বিপত্তিতে ফেলে দেয়া হবে। আজকাল অনেকের ফেসবুক স্ট্যাটাসের ভাষা আমার কাছে অপরিচিত মনে হয় কারন তা বাংলা নয়। পথে ঘাটে চলতে গেলে বিভিন্ন দোকান পাটের ঠিকানার শেষ অংশে বাংলাদেশ লেখা আছে কিনা তা ভালো করে লক্ষ্য করে নেই। কারন শব্দ দুষনের উৎস যে বাংলা গান নয় তা আম খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারি। পড়শী, ইমরান এর মত জনপ্রিয় বাংলা(!) গানের শিল্পীদের
কিছু গানের ভাষা কেমন যেন অপরিচিত লাগছে। না আমার বাংলা জ্ঞান
এতটা দূরবল না। আমি দাবি জানাবো ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যেন একুশ তারিখ মুছে ফেলা হয়। প্রয়োজনে ২০তারিখের পর ২২ তারিখ আসবে। এবং ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ অথবা ৩০ তারিখে শেষ হবে। আরেকটা দাবি থাকবে বাংলার পাশাপাশি সেই স্পেশাল ভাষাটিকে অফিসিয়ালি স্বীকৃতি দেয়

সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৩

ইশি (ছোটগল্প)

-আম্মু ওই গুলো কি?
*কোনগুলো?
-ওই যে ওই ছেলের হাতে গোলাপী রঙয়ের?
*ওইগুলো হাওয়াই মিঠাই। ওইগুলো পচা খাবার
হাওয়াই মিঠাই দেখতে সুন্দর, ছোট্ট মেয়ে ইশির এই নতুন জিনিস খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আম্মুর কথায় বুঝে গেছে এটা তাকে খেতে দেয়া হবে না। তাই মন খারাপ করে গাড়ির ভিতর বসে রইল ইশি। খাবার টা পচা না। আসলে আম্মু টাই পচা। বাসায় গেলে ইশিকে জোর করে ঠিকই দুধ খাওয়াবে। দুধ ভাল খাবার। ইশির ভাল জিনিসের প্রতি আগ্রহ নেই। ইশির বন্ধু ফারিহা সেদিন কি যেন গুড়ো এনেছিল,পানিতে দিলেই পানি গোলাপী হয়ে যাচ্ছিল। ফারিহার কাছ থেকে ওইগুলো নিয়ে দুধে মিশিয়ে দিতে হবে। তাহলে দুধও পচা খাবার হয়ে যাবে।

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে। ওরা হয়ত চায় সারাদিন জ্যাম লেগে থাকুক । কেউ ফুল, কেউ পেপার , কেউ অন্য কিছু নিয়ে এক গাড়ি থেকে আরেক গাড়ির পাশে গিয়ে দাড়াচ্ছে সেগুলো বিক্রি করার জন্য । গাড়ির জানালার কাচ নামিয়ে জ্যাম উপভোগ করছে ইশি ।
"ওই ******, গাড়ি কি তোর বাপে কিইন্যা দিছে "
সামনে থেকে শব্দ টা ভেসে আসে । ৭-৮ বছর বয়সী একটা মেয়ে ফুল নিয়ে সামনের গাড়ির পাশে দাড়িয়ে ছিল । বড় লোকের গাড়িতে ফুলের টোকা লাগলে তা ময়লা হয়ে যায় । মেয়েটাকে দেখে ইশির মায়া হয় । নোংড়া ছেলেমেয়েদের দেখে মায়া হওয়া খারাপ কাজ ।
"আপা ফুল নিবেন? অনেক সুন্দর ফুল "
বাচ্চা মেয়েটা ইশিদের গাড়ির পাশে এসেছে । ২দিন আগে ইশি তাদের গোলাপ ফুল গাছের কাটায় হাত কেটে ফেলেছে । লাল রক্ত বেরিয়েছিল । ইশি রক্ত দেখলে ভয় পায় । হাত কাটার পর থেকে লাল রং আর লাল গোলাপের সাথে ইশির আড়ি । ইশি কেবলি বলতে যাচ্ছিল "না নিব না, গোলাপ ফুল পচা" কিন্তু তার আগেই ইশির আম্মু বলে দিল "না লাগবে না, যা"
ইশিদের গোলাপ গাছে এখন একটাও ফুল নেই । মেয়েটা চলে যাওয়ার পর ইশির মায়া বেড়ে গেল । ২টা গোলাপ কিনলে তেমন কিছুই হত না । জ্যাম কেটে গেছে , মেয়েটাও হারিয়ে গেছে ।
বাসায় ফিরে ইশি তার ড্রইং খাতায় গোলাপ ফুল আকার চেষ্টা করছে । কিন্তু কেন জানি এটা গোলাপের মত লাগছে না । রান্নাঘর থেকে আম্মুর উচু গলা ভেসে আসছে । কাজের মেয়েটা একটা গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেছে । আম্মু তার জন্য মেয়েটাকে খুব মারছে । সেদিন ইশিদের পোষা কুকুর তাদের একুরিয়াম ভেঙ্গে ফেলেছিল । আম্মু শুধু "না" বলে একটা চিতকার দিয়েছিল । ইশিদের কুকুর নোংড়া না । এই কাজের মেয়েটা নোংড়া ।
বড়রা সবসময় ভাল কাজ করে । ইশির আম্মু কাজের মেয়েটা কে মেরে ভাল কাজ করছে । ভাল কাজ ইশির ভাল লাগে না ।
-কাদিস না । দেখত আমার গোলাপ টা কেমন হয়েছে?
রান্না ঘরে গিয়ে ইশি কাজের মেয়েকে কথাগুলো বলে
*আফা গুলাপ তো রাঙ্গা অয় । আপ্নেরডা রাঙ্গা নাতো
-গুলাপ না, গোলাপ আর রাঙ্গা না , লাল, বুঝলি? আমার কাছে লাল রং নেই ।
*আমি লেহাপড়া জানিনা । গুলাপ কইলেও কিছু অইত না । আপ্নের মায়ের লাল লিফিস্টিক দিয়া রাঙ্গা কইরা দেন ।
মেয়েটা আবার রাঙ্গা বলেছে । ইশির রাগ হওয়ার কথা। কিন্তু হচ্ছেনা । কারন মেয়েটা তাকে ভাল বুদ্ধি দিয়েছে। ইশির ক্ষমতা থাকলে পুরষ্কার স্বরুপ ওকে স্কুলে ভর্তি করে দিত ।
টিফিন পিরিওডে ইশি দেখল গতকালের হাওয়াই মিঠাই ওয়ালা ছেলেটা তাদের স্কুলের সামনে হাওয়াই মিঠাই নিয়ে দাড়িয়ে আছে ।
-তোমার এ খাবার গুলো ভাল না । এতে রং মেশানো । এগুলো খেলে অসুখ করবে । আমি খেতে চাই । কিন্তু রং দেয়া বলে খেতে পারিনা । রং বাদে আনতে পারোনা?
হাওয়াই মিঠাই ওয়ালা ছেলের কাছে গিয়ে ইশি কথাগুলো বলে ।
*আইচ্ছা আফা, কাইলকের তে রং বাদে আনুম নি ।
ইশি এখন খুশি । কারন এখন সে প্রতিদিন টিফিনে হাওয়াই মিঠাই খেতে পারে । এগুলো রং করা না । তাই এগুলো দেখতেও সুন্দর না .
-তোমার নাম কি?
*বাচ্চু ।
হাওয়াই মিঠাই ওয়ালা ছেলের নাম বাচ্চু ।
-ইয়াক! এটা কি নাম?
*নাম একটা হইলেই হইল । মাইনষে আমারে বিচ্ছু কইয়াও ডাকে ।
এদের নাম নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই । বিচ্ছু নাম টা ইশির কাছে খুব বিদ্ঘুটে লেগেছে । আচ্ছা ইশি নাম বিকৃত করলে কি হবে? ইশ, বিষ , ইস্যু, টিস্যু অনেক কিছুই ইশির মাথায় ঘুরপাক খায় । থাক, ইশির কোনো বিকৃত নাম লাগবে না ।
-তোমরা কয় ভাই বোন ?
*আমার ছোড একট বইন আছে । নাম রিতু ।
অসহ্য। বিচ্ছুটা সব কিছুকেই বিকৃত করে বলছে । তবে রিতু নাম টা ইশির পছন্দ হয়েছে ।
-ঈদের শপিং করেছ ?
*শপিংকি?
-মানে ঈদের জামাকাপড় কিনেছ ?
*হা হা হা , আমগো পেটই চলে না আবার ঈদ । বইনে একটা লাল ফরক চাইছিল । দিবার পারুম কিনা কেডায় জানে ।
ইশির খারাপ লাগছে । অনেকের যে ঈদই নেই এটা আজকেই প্রথম শুনছে । ইশি ধর্ম বইতে পড়েছে ঈদ মানে খুশি । তার মানে বাচ্চুর খুশি নেই ।
আজ ইশির আব্বু, আম্মু আর ইশি #‎শপিং করতে গেছে । বাচ্চু কিছু কিনতে পারেনি। তাই বাচ্চুর জন্য কিছু কেনার ব্যবস্থা করতে হবে ।
-আব্বু প্লিজ বাচ্চু , বাচ্চুর বোন আর কাজের মেয়ের জন্য কিছু কেননা?
নিজেদের শপিং শেষে ইশির আব্বু কে কথা গুলো বলে ইশি ।
*বাচ্চু কে?
-আমাদের স্কুলে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে। ও ঈদে কিছু কিনতে পারেনি ।
*অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছ তুমি । ওরা খারাপ ছেলে । কে পোষাক কিনল বা না কিনল তা নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না । ছোট আছ তাই পাকামো করবে না ।
ইশির বাবা লাখ টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য ঈদের বাজার করতে পারেন । হাজার হাজার টাকা হারিয়ে গেলে তিনি কিছুই মনে করবেন না । কিন্তু বাচ্চুদের জন্য ৫০০ টাকা খরচ করা তার ক্ষমতার বাইরে ।
ইশি খারাপ হওয়া শিখে গেছে । এখন চাইলেই সে খারাপ কাজ করতে পারবে । ইশির লাল ফ্রক নেই । তাই স্কুল ব্যাগের ভিতর একটা সাদা ফ্রক ঢুকিয়ে রেখেছে । রোজা শুরু হয়ে যাওয়ায় ইশিদের টিফিন পিরিওডেই ছুটি হয়ে যায় । ছুটির পর আম্মু থাকে। আম্মুর সামনে বাচ্চু কে ফ্রক দেয়া যাবেনা । ইশি ইচ্ছে করেই তার ক্লাসে পানির ফ্লাক্স রেখে এসেছে ।
-তুমি গাড়িতে বস । আমি তোমার ক্লাস থেকে ফ্লাক্স টা নিয়ে আসি ।
ইশির আম্মু চলে যাওয়ার পর ইশি জোর করে বাচ্চু কে ফ্রক টা দেয় ।
ইশির আম্মু ফিরে আসার পর একটা হাইজ্যাকার ইশির আম্মুর ব্যাগ টা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ।
ইশিরা কিছুদুর এগিয়ে যেয়ে একটা জটলা দেখতে পায় । বাচ্চু হাইজ্যাকার টার পিছু তাড়া করেছিল । একটা ট্রাক এসে বাচ্চু কে চাপা দিয়ে গেছে । "বেচে আছে " "মারা গেছে " "আহহারে " বিভিন্ন শব্দ ইশির কানে আসছে । কি আশ্চর্য্য! গরীবের রক্তও লাল ! এ রক্তের রং ইশির রক্তের মতই ।
*আম্মু ওকে আমাদের গাড়ীতে করে হসপিটালে নিয়ে চলো ।
-ইশি চলো । ও বেচে নেই হয়ত । আমার ব্যাগ টা আর পাবোনা ।
ইশি পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছে । একটা সাদা ফ্রক রিতুর কাঙ্খিত লাল ফ্রকে পরিনত হচ্ছে ।
একটা সাদা ফ্রক খুব সহজেই লাল ফ্রক হয়ে যায় কিন্তু কতিপয় ধনীদের মন কখনো নরম হয়না ...............

শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৩

রাসেল ভাই এবং কাকের কাকতালীয় কর্ম (ছোটগল্প, কিঞ্চিত রম্য)

-ভাইজান সিগারেট দেই ?
*না থাক পরে খামুনে
-কিছু হইছে ভাইজান?
*না, তোরা থাক, আমি গেলাম।
রাসেল ভাইয়ের ভিতর মাস্তানি ভাবটা আর আগের মত নেই। কেমন জানি চুপসে গেছেন তিনি। সিগারেটও আগের মত টানেন না। রাসেল ভাইয়ের সিগারেটের প্রতি অনিহা অষ্টম আশ্চর্য্য ছাড়া কিছুই নয়। প্রেমে পড়লে মানুষ সিগারেট বেশি খায় নয়তো কমিয়ে দেয়। রাসেল ভাইয়ের সিগারেট থেকে পিছুটানের প্রধান কারন তানি আপু। পাড়ায় ২দিন এসেই রাসেল ভাইয়ের সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছেন।
রাসেল ভাই সুযোগে আছেন কেউ তানি আপুর সাথে খারাপ আচরন করলেই চড় মেরে তার ২৮-৩০টা দাঁত ফেলে দেবে। সবার ৩২ টা দাঁত থাকেনা।
রাসেল ভাইয়েরও আক্কেল মাড়ি উঠেনি। আরো ভাবতে থাকেন, তানির দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালে তার চোখ কানা করে দেবে, বাংলা সিনেমার নায়কের মতো তানি কে ভিলেনের হাত থেকে রক্ষা করবে। ধ্যাত!! মাস্তানদের ভাবনা জুড়ে শুধুই মারামারি। সেখানে রোমান্টিকতা নেই। তানি আপু মারামারি পছন্দ করেন না।
আজকাল তিনি চুলে স্পাইক করা ধরেছেন। কালো চশমাটা চোখে দিয়ে তানি আপুর বাড়ির সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছেন। তার চোখের দৃষ্টি তানি আপুর বাসাকে কেন্দ্র করে তার ঘাড় টাকে অটোমেটিক বাম দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে। রাস্তা দিয়ে হাটতে হলে একটু সতর্কতার সাথে হাটতে হয়। প্রেমে পড়লে চলাফেরার ট্রাফিক আইন মানা যায় না।
কপাল ভাল থাকলে কিছু কাকতালীয় ব্যাপার ঘটে যায়। এই মুহূর্তে তানি আপুর ছাদে আগমন অনেকটা তেমন কিছুই। রাসেল ভাইয়ের হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে, দৃষ্টি তার ছাদের দিকে। হঠাতই রাসেল ভাইয়ের উষ্ঠা খাওয়ার মতো অবস্থা হল। রাস্তার খানাখন্দে বেধে তার চটি স্যান্ডেল এর দফারফা হয়ে গেল। ট্রাফিক আইন মেনে না চললে এমনি হয়। তানি আপুর অট্টহাসিতে রাসেল ভাই নিজেকে খুব অসহায় মনে করছে। রাসেল ভাই নিজেকে অসহায় ভাবছে এটাও কম হাস্যকর নয়। স্যন্ডেল জোড়া হাতে নিয়ে, তানি আপুর বাসা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে, স্লো মোশন থেকে হাটার স্পীড বাড়িয়ে দিয়ে রাসেল ভাই দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করলেন।
আগের দিনের কথা ঠিকই মনে আছে । তাই রাসেল ভাই নতুন জুতা কিনেছেন। হলুদ রঙয়ের জুতা। তানি আপুর বাসার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কোনোদিন স্যান্ডেল পায়ে থাকবেন না প্রতিজ্ঞা করেছেন। হলুদ জুতা পায়ে দিয়ে তানি আপুর বাসার ছাদের দিকে তাকিয়ে হাটছেন। তানি আপু হলুদ রং একদম পছন্দ করেনা। একটা বিরক্তি নিয়ে বললেন "খ্যাত কোথাকার"। রাসেল ভাই তার হিরোইক লুকের ভিতর কোনো খ্যাত খুজে পেলেন না। রাসেল ভাই খুব সুন্দর হাসি দেয়া শিখেছেন। তানি আপুর দিকে তাকিয়ে সেটাই প্রয়োগ করলেন। ঠিক সেই সময় ইলেকট্রিক তারের উপর বসে থাকা একটা কাক প্রাকৃতিক কর্ম সারল। কিন্তু তার লক্ষ্যবস্তু ছিল রাসেল ভাইয়ের মাথা। রাসেল ভাই মাথায় হাত দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলেন ঠিক কি জিনিস তার এতো সুন্দর স্পাইক নষ্ট করল। তানি আপুর হাসি আজকেও রাসেল ভাইকে অসহায় করে ছাড়ল। এটা যে রাসেল ভাইয়ের হাসির প্রতিউত্তর ছিল না সেটা রাসেল ভাই ভালই বুঝতে পেরেছেন। মুহূর্তেই তানি আপুর বাসার ছাদের প্রতি দৃষ্টির চৌম্বকীয় আকর্ষণ নিষ্ক্রিয় হয়ে গেল। ব্যাটা কাক কে পেলে আস্ত চিবিয়ে খাবে রাসেল ভাই। ইশ কাক টা যদি রাসেল #ভাইয়ের হলুদ জুতা জোড়া কে সাদা করে দিত তাহলেও একটা কাজের কাজ হত।
তানি আপুর হলুদ পছন্দ নয়। রাসেল ভাইয়ের লাল রং পছন্দ। একটা টকটকে লাল রং এর ক্যাপ মাথায় দিয়ে তানি আপুর বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছেন। আজকের প্রাইভেসি অনেক হার্ড। জুতা জোড়া ছেঁড়ার ভয় নেই, কাক বেটা কিছু করলেও চুলের স্পাইক নষ্ট করতে পারবে না। বর্ষাকালে রাস্তার খানাখন্দে অনেক কাদাপানি জমে আছে। খানাখন্দ কে পাশে রেখে দৃষ্টির চৌম্বকীয় আকর্ষণ টাকে সক্রিয় করে এগিয়ে চলেছেন রাসেল ভাই। ট্রাফিক আইন তিনি আজকেও মানছেন না। হঠাত একটা মাইক্রোবাস রাস্তার কাদাপানি দিয়ে রাসেল ভাই কে গোসল করিয়ে দিয়ে গেল। তানি আপুর হাসিটা আজ অতটা প্রবল নয়। রাসেল বেচারার প্রতি কেমন যেন মায়া হচ্ছে। ছুটে যাওয়া মাইক্রো কে একটা ধামকি দিয়ে রাসেল ভাই আজকেও দ্রুত গতিতে হেটে চললেন। মনে মনে ভাবলেন "ব্যাটাকে আরেকবার পেলে হয়"।
রাসেল ভাইয়ের হয়ত কপালটাই খারাপ। তাই বারবার তানি আপুর বাসার সামনেই তার বিপদ হয়।
আজ তানি আপু রাসেল ভাই মুখোমুখি হেটে আসছেন। তাদের মধ্যবর্তী দূরত্ব ১০০ মিটার এর বেশি নয়। রাসেল ভাইয়ের পায়ে জুতা আর মাথায় ক্যাপ আজকেও আছে। বেচারার মন টাই খারাপ। কাদাপানি থেকে বাচার জন্য ট্রাফিক আইন মেনেই হাটছেন। তানি আপু তার পাশ কাটানোর সময় আচমকাই পিছলা খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। রাসেল ভাই দ্রুত তানি আপুর হাত ধরে তাকে পড়ে যাওয়া থেকে বাচালেন। রাসেল ভাই নিজেও বুঝতে পারেন নি কিভাবে তার হাত তানি আপুর হাত কে ধরে ফেলল। তানি আপুর মুখ লাল, লজ্জায় লাল। লজ্জাটা পিছলা খাওয়ার জন্য না রাসেল ভাই তার হাত ধরার জন্য তা ঠিক বোঝা গেলনা। এবার তানি আপু দ্রুত সেখান থেকে চলে গেলেন। ধন্যবাদ টাও দিলেন না। হয়ত ভুলে গেছেন।
এখন তানি আপুর হাসার জন্য রাসেল ভাইয়ের স্যান্ডেল ছেড়া লাগেনা, ইলেকট্রিক তারে বসে থাকা কাক কেও প্রাকৃতিক র্ম করার জন্য রাসেল ভাইয়ের মাথাকে বেছে নিতে হয় না।
-এই যে মিস্টার, বিয়ে বাড়ি থেকে আসছেন বুঝি?
রাসেল ভাই কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেল। তার বিশ্বাস হচ্ছে না তানি আপু তাকে কথাটা বলছে।
*আমাকে?
-জ্বি আপ্নাকেই বলছি,বিয়ে বাড়ি থেকে আসলেন বুঝি?
*কই না তো, কেন?
-আপনার জুতা জোড়া হলুদ হয়ে আছে। ভাবলাম মাংসের ঝোল পড়েছে হয়ত।
মুচকি হাসি দিয়ে কথাগুলো বলল তানি আপু।
*ইয়ে মানে এটার কালার হলুদ।
-খ্যাত কোথাকার, এই গরমে কেউ জুতা পরে থাকে? লাল ক্যাপ পরেছেন কেন? সাদা ক্যাপ পরতে পারেন নি?
*সাদা ক্যাপ কেন?
-সাদা ক্যাপে সাদা জিনিস পড়লে টের পাওয়া যায়না।
খ্যাত মার্কা রাসেল ভাই বিশাল চিন্তায় পড়ে গেল। তানি আপু তাকে ডেকে কথা বলেছেন। নতুন চিন্তার বিষয় রাসেল ভাই কে তিনি সাদা ক্যাপ পরতে বলেছেন।
পার্কে বসে আছেন তানি আপু আর রাসেল ভাই। আজ তার পায়ে হলুদ জুতা বা মাথায় লাল ক্যাপ নেই।
*তুমি হলুদ রং পছন্দ করোনা কেন?"
-ওটা খ্যাত কালার। আপনাকে যদি আবারো হলুদ জুতা পরতে দেখেছি তো খবর আছে।
*তোমার প্রিয় রং কি"
-সাদা
হঠাতই একটি কাক এবং রাসেল ভাইয়ের মাথা..........................................

 
Tricks and Tips