অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৩

একটি বৃষ্টিস্নাত সকাল ও ……… (ছোটগল্প)

সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল । তাই একটু দেরী করেই বাড়ি থেকে বেরোলো রাতুল । যখন পুকুর পাড়ে পৌছাল তখন টুং টাং স্কুলের ঘন্টা বাজছে । ঘন্টার বাজনা শুনেই বোঝা যায় জমির চাচা ঘন্টা বাজাচ্ছেন। জমির চাচার বয়স আগের থেকে বেড়ে গেছে। তার সাদা মাথা থেকে এখন আর কালো চুল বের করা সম্ভব নয়। সমস্ত কালো এখন ছায়া হয়ে তার মুখে জমা হয়েছে। এই ছায়াটা হয়ত চিরস্থায়ী । জমির চাচার বয়স হলেও ঘণ্টা তিনি আগের মতই বাজান। ঘন্টার বাজনা টা একটুও বদলায় নি। বদলে গেছে পুকুর পাড়ের এই আম গাছ টা, অনেক বড় হয়ে গেছে। জমির চাচার ঘন্টার বাজনা শুনতে শুনতে পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল রাতুলের। জমির চাচা ছুটির ঘন্টা বাজালেই স্কুল এর সবাই ক্লাস থেকে দৌড়িয়ে বেরিয়ে আসত। পাল্লা লাগাত কে কার আগে বেরোবে। সাথে সবার মুখ থেকে বিজয়ের আওয়াজ ভেসে আসত । স্কুল এর সামনেই ফিরোজ ভাই আচার বিক্রী করত । রূপাও ক্লাস থেকে বেরিয়ে জমির চাচার নিকট ছুটে যেত। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আচার কিনে বাড়ির দিকে ফিরত। রাতুল দুষ্টুমি করে রূপার আচারে ভাগ বসাত।
দুজনেই স্কুল থেকে ফেরার সময় এই পুকুর পাড়, এই আম গাছের নিচ দিয়ে হেটে যেত। আমের সময় ঢিল মেরে আম পাড়া ছিল রাতুলের পেশা রূপি নেশা। রূপা কে বাহাদুরি করে বলত “দেখেছিস আমার হাতের নিশানা?” রূপার সম্মতি রাতুলের মুখে বিজয়ীর হাসি এনে দিত। দুজনের এ বন্ধুত্ব কখন যে ভালবাসায় রূপ নিয়েছিল তা কেউ জানেনা, তবে বড় হওয়ার সাথে সাথে সম্পর্ক টা “তুই” থেকে “তুমি” ঠিকই হয়ে গিয়েছিল। জমির চাচার এই মেয়েটা দেখতে দিন দিন অপরুপা হয়ে উঠেছে। হয়ত নামের সাথে মিল রাখতেই এমন টা হচ্ছে । গরিবের ঘরে জন্ম, তাই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত রূপই তার সম্বল। রাতুলের ভাবনার পুরোটা জুড়ে অপরুপা রূপা। এই পুকুর পাড়ে বসে পুকুরে ডুব না মেরেই রূপার প্রেমে হাবুডুবু খেত রাতুল। দুজন দুজনের পাশাপাশি বসে বেশ সময় কাটিয়ে দিত । কিন্তু হঠাতই সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। আজ ৫ বছর পর রূপার সাথে দেখা করতে এসেছে রাতুল। তার জন্যই এই পুকুর পাড়ে ছুটে আসা।
*তুমি এখানে কেন এসেছ?
-তোমাকে দেখব বলে
*আমাকে দেখার কি আছে? যাও ফিরে যাও। আমার জন্য সময় নষ্ট করোনা।
-আমি সময় নষ্ট করছি না। তোমাকে দেখে সময়ের সদ্ব্যবহার করছি।
*এটা পাগলামি।
-আমি পাগল।
*পাগলের তো পাগলা গারদে থাকা উচিত।
-সব পাগলের ঠাই পাগলা গারদে হয় না। কিছু পাগল গাছ তলায় থাকে।
*এটা অভিশপ্ত গাছ।
-পাগলেরা অভিশাপের পরোয়া করে না।
-চুপ করে আছ কেন?
*বল শুনছি।
-আমার হাতের নিশানা দেখবে?
-চুলগুলো মুখের উপর থেকে একটু সরাবে?
*কেন?
-অনেকদিন তোমাকে দেখিনা।
*বলেছি না চলে যাও? আর আসবে না। আমাকে ভুলে যাও
-আমার #স্মৃতিশক্তি খুব একটা দূর্বল না যে কাউকে ভুলে যাব।
*তুমি কেন বুঝছ না আমাকে তুমি কোনোদিনই পাবে না।
-তুমি তো আমার কাছ থেকে পালিয়ে চলে গিয়েছ। আমাকে ধোকা দিয়েছ।
*আমি তোমার ক্ষতি চাইনি।
-তুমি আমার হাসিটাকে কেড়ে নিয়েছ
-আবার চুপ কেন?
*জানিনা
-একটু হাসবে?
*আমি হাসতে জানিনা। হাসি কেড়ে নিতে জানি
-আমি তোমার কাছে আসতে চাই।
*আমি চলে যাচ্ছি। তোমাকে আমি ঘৃণা করি। এরপর আর আমার কাছে আসবে না
-তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি আসব তোমার কাছে
*হা হা হা আমি ছলনাময়ী।
-এই যে হাসছ। শুধু শুধু মিথ্যা বললে
*আমি মিথ্যা
-তোমার হাত টা একটু দাও
*কেন?
-আমার চোখের জল জমা দেব
*তুমি একটুও বদলাও নি
-সত্যি বলছ??
*না অনেক বদলে গেছ। মোটা ফ্রেমের চশমা কবে থেকে পরছ?
-তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে। সাদা শাড়ি কবে থেকে পরছ? এটাতে তোমাকে একদম মানায় নি।
*তুমি যেদিন থেকে চশমা পরছ
-একটা মিষ্টি গন্ধ আসছে তোমার শরীর থেকে। তোমাকে একটু ছুয়ে দেখতে চাই
*আমি অদৃশ্য, আমি তোমার কল্পনা, আমি অভিশপ্ত। তুমি চলে যাও
রূপা অদৃশ্য, রূপা রাতুলের কল্পনা, কিন্তু রূপা অভিশপ্ত নয়। অভিশপ্ত ওইসব হায়েনা যারা রূপা কে ধর্ষণ করেছে। রাতুলের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে চিরদিনের জন্য। ছি ছি! রাতুল এসব কি ভাবছে! রূপা ধর্ষিতা হতে যাবে কেন? সমাজ রূপা দের ধর্ষিতা সিল মেরে দিলেই কি তারা ধর্ষিতা হয়ে যাবে?? রাতুল ধিক জানায় সমাজের এইসব নরপিচাশ দের যারা রূপা কে ধর্ষিতা অপবাদ দেয়, যারা রাতুলদের ভালবাসা কেড়ে নেয়। ধিক তাদের যারা রূপা কে পৃথিবীতে বেচে থাকতে দেয় না।
ক্রোধে চোখ লাল হয়ে যায় রাতুলের, মোটা ফ্রেমের চশমার ফাক দিয়ে দু ফোঁটা ক্রোধ বেয়ে পড়ছে। সেটা রাতুলের হাতে জমা হয়। রাতুলের হাত অদৃশ্য নয়।
আমাগাছ টার এখানে একটা মোটা ডাল ছিল, যেটাতে ফাঁসি নিয়েছিল.........ভাবনা গুলো বড় নিষ্ঠুর। ডাল টা আর নেই। গত বছর ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। হয়ত রূপার কষ্টের ভারে ভেঙ্গে গেছে। আমগাছ টার পাশে একটা বট গাছ। ঝড়ে বট গাছের ডাল ভাঙ্গেনি। বটগাছের ডাল সহজে ভাঙ্গে না। হায়েনারা আজও আড্ডা দেয় বট গাছটার নিচে। আমগাছ টা কাঁদছে। সেটা রাতুল ছাড়া কেউ বুঝছে না......

শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৩

দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা (ছোটগল্প)

-তোমার তো এখানে বসে থাকার কথা ছিলনা। তবে এখানে কেন বসে আছ?
রাতুল কে শাসানোর মত করে কথা গুলো বলতে থাকে নীলা। পাক্কা ১৫ মিনিট ধরে পুরো পার্ক তন্ন তন্ন করে রাতুল কে খুজেছে নীলা। দুজনের দেখা করার কথা ছিল পার্কের অন্য কোনায় যেখানে অনেক গুলো ফুল গাছ আছে। লাল রঙের ফুল নীলার খুব পছন্দ। রাতুল নীলা কে সবসময় লাল রঙের ফুল দিয়েই প্রপোজ করে। পার্কে আসলে যখনই নীলার অভিমান হয় তখনই গাছ থেকে একটা লাল ফুল এনে নীলা কে দেয়। আজ সে ধরনের কোনো সুযোগ নেই। নীলার দিকে না তাকিয়েই রাতুল জবাব দিতে থাকে।
এখানে অনেক ঘাস আছে তাই বসে আছি।
-তুমি কি ছাগল যে ঘাস দেখে বসতে হবে?
আমি ঘাস দেখে বসিনি, ঘাসের উপর বসে আছি। চাইলে তুমিও বসতে পার।
-আমি তোমার মত ছাগল না।
আমি জানি তুমি ছাগল না। ছাগলের স্ত্রী লিঙ্গ ছাগী।

-কি আমাকে তুমি ছাগী বললে!!!!????
এখনো বলিনি। তবে ছাগলের বউ ছাগীই হয়।
-আমি তোমার বউ না।
আমি তো বলিনি তুমি আমার বউ।
-এত কথা প্যাঁচাও কেন? তুমি একটা রামছাগল।
রামছাগলের তুর্কি দাড়ি থাকে। আমি একদম ক্লিন শেভ।
-ওহ অসহ্য! কেন যে তোমার মত ইডিয়ট এর সাথে প্রেম করি?
আমরা প্রেম করছি না। আমরা ঝগড়া করছি।
-তোমার মত #রামছাগলের সাথে আমার ঝগড়া করতে বয়েই গেছে?
আমি একটু আগেই শেভ করে এসেছি। আমার দাড়ি উঠলে চাপ দাড়ি ওঠে তা তুমি জানো
-শেভ করেছ কেন? আমার চাপ দাড়িই ভাললাগে।
তোমার মুখে কখনো দাড়ি দেখিনি। আগে তো জানতাম না তোমার দাড়ি হয়!!
-আমাকে কটা টাকা ধার দাও তো
কি করবে?
-প্রথমে একটা পিস্তল আর গুলি কিনব। তারপর তোমাকে গুলি করে মারব। গরু কোথাকার। আমি কি আমার দাড়ির কথা বলেছি? >_<
আমার কাছে সিগারেট কেনার টাকা থাকে। পিস্তল কেনার নয়
-কি তুমি সিগারেট খেয়েছ!!?? >_<
সিগারেট খেলে ক্যান্সার হয়ে মরার সম্ভাবনা আছে। তোমাকে আর কষ্ট করে মারতে হবেনা।
-একদম অলক্ষুনে কথা বলবে না। গরু ছাগল ভেড়া কোথাকার, বসে বসে ঘাস খাও
প্রিয়তমার মুখ থেকে গরু ছাগল ভেড়া ডাক শুনতে খারাপ লাগে না। বরং ভালই লাগে। অন্যান্য প্রেমিকের মত রাতুলও তার ব্যাতিক্রম নয়। সব প্রেমিক অবশ্য সিগারেট খায় না। নীলা যেইসব বিষয়ে রেগে যায় রাতুল সেইগুলোই বেশি করে। এভাবে রাগানোর ভিতর একটা ভালবাসা থাকে। নীলা কে এভাবে রাগানোর অধিকার শুধু রাতুলেরই আছে।
আমি ঘাস খাচ্ছিনা। আমি বাদাম খাচ্ছি।
-কই এতক্ষন তো খেয়াল করিনি! বাদাম কেন খাচ্ছ?
নীলার খেয়াল করার কথা না। কারন ও এখনো রাতুলের সামনে যায়নি। পেছন থেকেই কথা চালিয়ে যাচ্ছিল। তাই ঘাস খাওয়া আর বাদাম খাওয়ার পার্থক্য ধরতে পারেনি।
বাদাম খেলে ত্বক ভাল হয়।
-হঠাত ত্বক ভাল করার নেশা চাপল কেন?
আরেকটা প্রেম করব তাই
-তুমি আমাকে ছেড়ে আরেকটা ডাইনির সাথে প্রেম করবে!!??
ভালবাসার ভাগ কেও দিতে চায়না। নীলাও তার ব্যাতিক্রম নয়। রাতুল অন্য মেয়ের দিকে তাকালেই সেই মেয়ে নীলার কাছে ডাইনি।
তুমি যে ডাইনি তাতো জানতাম না।
-আমি ডাইনি না, তুমি যার সাথে প্রেম করবে তাকে ডাইনি বলেছি।
নীলার প্রিয় রং নীল নয়, কালো। রাগে নীলার মুখের রং কালো হয়ে গেছে। নীল হওয়ার কথাও নয়। কারন নীল বিষাদের রং। নীলার মনে বিষাদ নেই। সেখানে শুধুই আছে রাতুলের ভালবাসা।
ও ডাইনি না। ওর নাম নীলা
-থাকো পড়ে তোমার নীলা ফিলা কে নিয়ে। আমার সাথে কথা বলতে আসবে না।
রেগে গেলে নীলা নিজের নাম ভুলে যায়। রাতুল নীলা কে অযথা রাগাতে ভালবাসে এটা নীলাও জানে। "ভালবাসায় মান অভিমান না হলে ঠিক জমে না" এটা কোনো মনিষী বলেছেন কিনা নীলা বা রাতুল কারোরই জানা নেই। হয়ত জগতের কোনো প্রেমিক প্রেমিকারই জানা নেই। তবু সবাই মান অভিমানের খেলায় মেতে ওঠে। রাগারাগি মান অভিমান ভালবাসার মাঝে অলিখিত চুক্তি।
আমার পাশে একটু বসবে? জায়গাটা পরিষ্কার আছে।
-না বসবো না। তুমি একটা ফাযিল। আমার মন নিয়ে খেলা করবে। আমার মন নরম। তাই যখন তখন তোমার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে হবে।
একটু বসো। আমি তোমার মন নিয়ে খেলব না। তোমার চুলগুলির সাথে দুষ্টুমি করবো। তোমার চুলের মিষ্টি ঘ্রানে মাতাল হয়ে যাব
-এহ শখ কত! আমি মাতাল ছেলেকে পছন্দ করিনা।
কথাটা বলতে বলতেই নীলা রাতুলের পাশে বসল। যখন ভালবাসাটা অনুভব করা যায় তখন প্রেমিক প্রেমিকা দুজনেই মাতাল হয়ে যায়। আবল তাবল কথা বলতে ভাল লাগে। নীলাও এখন মাতাল রাতুলের ভালবাসায়। আচ্ছা মাতালের স্ত্রী লিঙ্গ কি? না থাক। সব ক্ষেত্রে ব্যাকরন টানলে চলে না। ভালবাসার কোনো ব্যাকরন হয় না।
ফুচকা খাবে? ফুচকা খেলে মাতাল হওয়ার চান্স নেই
-না। যা খাচ্ছিলে তাই খাব
বাদামের খোসাগুলো নীলার দিকে এগিয়ে দিল রাতুল। দু চারটা বাদামের খোসা মুখে চালান করে দিল নীলা। আস্ত একটা মাতাল মেয়ে। বাদামের খোসাও চেনে না। সেগুলো দিব্যি চাবিয়ে যাচ্ছে।
একটু দেরিতে চিনলেও রাতুল কে তাড়া দিতে দেরি করলো না নীলা।
পার্কে একটা ছেলে দৌড়াচ্ছে, একটা মেয়ের তাড়া খেয়ে। তারা হাপিয়ে গেলে ফুচকা ওয়ালার সামনে থামবে। ফুচকার খোসাগুলো বাদামের খোসার মত নয়। ওটা খাওয়া যায়। ভালবাসায় বিভোর জোড়া গুলো এভাবেই যুগে যুগে মাতলামির সংজ্ঞা বদলে দেবে।

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০১৩

আমার ফেসবুক বিড়ম্বনা ও আম্মুর কাছ থেকে উত্তম মাধ্যম প্রাপ্তি (হতাশা মূলক রম্য )

"জ্বলে ওঠো বাংলাদেশ, গর্জে ওঠো বাংলাদেশ" হঠাত করেই ফোনে গান টা বেজে উঠল। আসল ঘটনা এটা আমার ফোনের রিংটোন। রিংটোন টা ২ বছর ধরে আছে। ফোন থেকে ফেসবুক চালাচ্ছিলাম। হঠাত সেজো খালার ফোনে একটু বিরক্ত হলাম। তার উদ্দেশ্য আম্মুর সাথে কথা বলবে। আমিও বিরক্তি নিয়ে আম্মু কে ফোন টা দিলাম। তারা কি কথা বলল তা শুনলাম না। বড়দের কথা শুনতেও হয়না। অপেক্ষায় আছি তারা কখন তাদের বিরক্তিকর গুরুত্ত্বপূর্ণ কথা শেষ করবে।
কথা শেষ করার পর আম্মু অগ্নিচক্ষু নিয়ে আমার সামনে দাঁড়ালেন। আমি তার এমন চোখ দেখে সত্যি ভয় পেয়ে গিয়েছি। খালা আবার আমাকে নিয়ে কিছু বলল নাতো?? না না তা হবে কেন? খালা কখনো আমার নামে খারাপ কিছু বলবে না। আম্মুর ভয়ংকর চোখের দিকে তাকিয়েই বিভিন্ন হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছিলাম ।
আম্মু ফোন টা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল "সারাদিন এসবই করা হয়?"
আমি ফোন টা হাতে নেয়ার পর আসল ঘটনা বুঝতে পারলাম।
খালা ফোন দেয়ার আগে নিউজ ফিডে নিম্নোক্ত ঘটনা গুলো ঘটেছিল।
১। এক মেয়ে(সন্দেহ আছে) স্ট্যাটাস দিয়েছে "I love u frnd"। (খাইছে আমারে! এই মধুর কথাটা এখন বিষের চাইতেও মারাত্মক)
২। এক অতি মাত্রার ময়দা মাখা সুন্দরী ললনা তার ঘেডি বাকা করা বাথরুম থেকে তোলা পিক টাকে প্রোফাইল পিক করেছে। সুন্দরী ললনার পিক আমার ফোনে। (প্রোফাইল পিক চেঞ্জ করার আর টাইম পাইলি না ? বিশ্বাস কর আম্মু, এই ঘাড় ত্যাড়া মাইয়া তোমার বউমা না)
৩। এক সেলিব্রেটি আপু অতি সুন্দর সুন্দর গালি দিয়ে তার স্ট্যাটাস টিকে ১৮+ বানিয়ে দিয়েছেন। (আমি এখনো ১৮- :( বাচ্চা মানুষ। এইসব গালিগালাজ বুঝিনা :( )
শাস্তি স্বরুপ দুই সপ্তাহের কারাদন্ড প্রাপ্ত হয় আমার ফোন .। দুই সপ্তাহ আধুনিক বিশ্বের চুলকানী কামড়ানী থেকে বঞ্চিত থাকায় নিজেকে আদিম যুগের প্রানী মনে হচ্ছিল .।
মনের ভিতর খালি একটা কথায়ই ঘুরছিল
যখনই আম্মু ফেসবুকার, মাইয়ারা তখনি মারে অফার।
যখনই আম্মু চালায় ফেসবুক, ললনারা দেখায় তাদের মুখ।
আম্মু যখন দেখে সেলিব্রেটিদের স্ট্যাটাস, তখনই সেগুলো হয়ে যায় ১৮ প্লাস।
..

বুধবার, ৩ জুলাই, ২০১৩

একটাকার কাহিনী (ছোটগল্প)

“আপনি তো আচ্ছা বেহায়া মানুষ। কুষ্টিয়া থেকে দৌলতদিয়ার ভাড়া একটাকা দিচ্ছেন!? আপনি কি পাগল টাগল হয়ে গেলেন? যা ভাড়া তাই দিন।“এভাবেই বাসের হেল্পার সাহেব এক ব্যক্তির সাথে কথা কাটাকাটি করছিলেন। বাসের বাকি যাত্রীরা দৃশ্য টা ভালই উপভোগ করছিলেন। কেও হয়তো ভাবছিলেন লোকটা হয়তো টাকায় আট মন চাল কিনেই গাড়ীতে উঠেছেন।লোকটা অবশ্য চাল খাচ্ছিলেন না। জনসম্মুক্ষে চাল খাওয়া যায় না। তিনি বাদাম খাচ্ছিলেন। এক টাকায় বাদাম দেয়না।“এক টাকা দিচ্ছি, না নিলে আমাকে নামিয়ে দিন। আমি এক টাকার বেশি দিতে পারব না।“এবার হেল্পার সাহেব মনে হয় একটু বেশিই রেগে গেলেন। ভাড়া কমাতে কমাতে তিনি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন। তবুও লোকটাকে এক টাকার উপরে উঠাতে পারলেন না।
শেষবার উচু গলায় লোকটাকে ধমকাতে লাগলেন।“আপনি বাদাম খাচ্ছেন আর ভাড়া দিচ্ছেন এক টাকা? লজ্জা করছে না বাদাম খেতে?”হেল্পার এখানে ভুল বললেন। বাদাম খেতে লজ্জা লাগেনা। বাদাম খেতে হাত লাগে, মুখ লাগে, পেট লাগে।লোকটার এ সব কিছুই আছে। হাত দিয়ে বাদামগুলো মুখে চালান করতে করতে বললেন “আপনি খাবেন? লজ্জার কিছু নেই”“তোর বাদাম খাওয়া দেখাচ্ছি, দে ভাড়া দে”লোকটা ভুল বসত নষ্ট বাদাম মুখে দিয়ে ফেলেছে। থু থু করতে করতে বলল “একটাকা তো দিচ্ছিই। না নিলে নামিয়ে দিন”“ ওস্তাদ গাড়ি থামান। এই বজ্জাত টারে নামায়া দেই।-আর জীবনে যদি তোরে দেখছি আমার গাড়ীতে উঠতে” গাড়িটা কিন্তু হেল্পার এর না। হেল্পার বেটা একটু বেশিই ভুল বলে।রাজবাড়ীর কিছু আগেই লোকটাকে নামিয়ে দেয়া হল।..........................................................................................তখনও বাদাম চাবিয়ে যাচ্ছেন। আরেকটা বাস দেখে হাত মেরে থামালেন। এই বাসের হেল্পার এর জানার কথা নয় তিনি তাকেও এক টাকা দিবেনইনি নামিয়ে দিলেও পরের বাসে উঠতে সমস্যা হবে না।বাদাম শেষ। এবার নামিয়ে দিলে কিনতে হবে। বাদাম নাপেলেও অন্যকিছু কিনতে হবে।গন্তব্য ঢাকা, সাথে আছে এক টাকা............ থুক্কু ভাড়া এক টাকা.............................

ফেসবুক রম্য জেন্ডার ভেরিফিকেশন (রম্য)

সময়কাল ২০১৪......
কিরে মন খারাপ করে বসে আছিস কেন?

-দোস্ত বিরাট কেরিখেছাং হইয়া গেছে

কি হয়েছে?

-“প্রেম পিপাসু বালিকা” নামে একটা সেইরাম আইডি খুলছিলাম

ওরে হারামজাদা অইডা তুই আছিলি? এত্ত গুলা পচা তুই! আমি মাইয়া ভাইবা এতদিন তোর লগে লুলামি করছি!

-আরে আগে হুনবি তো কাহিনি। ৬ দিনে ৭০০০ ফ্রেন্ড আর ৮০০০ ফলোয়ার হইছিল।

কস কি!!!!!

-ছবি গুলাও দিছিলাম সেইরাম সেইরাম

হ এর লেইগাই তো আমি ব্রেকআপ করলাম :’(

-আরে রাখ। আইডি ডা সেলিব্রেটি আইডি বানাইতে গেছিলাম।

কেমনে?

-জুকার রে পচাইয়া একটা পোস্ট দিছিলাম। লিখছিলাম “জুকার একটা লুল। ওর আসল রুপ ও একটা প্লেবয়। আমি আমার ফোন নাম্বার দিয়েছিলাম ওকে। মাঝে মাঝেই কথা হতো। কিন্তু ওর ভাব চক্কর আমার ভাল লাগে নাই। আমার সাথে প্রেম করতে চাইছিল। আমি কেটে পড়ায় আমাকে গালি দিয়ে মেসেজ দিয়েছিল। ওর আসল নাম পোকার। খালি আমাকে পোক মারত। মাঝে মাঝে কিল ঘুষিও মারত, তখন ওকে কিলার আর ঘুষার বলতাম। আমার জন্যই ও ফেসবুক থেকে কিল ঘুষি অপশন সরিয়ে ফেলেছে। আরও কি কি অপশন যেন এড করতে যাচ্ছিল। আমি করতে দেইনি। ও খুব খারাপ। মেয়ে দেখলেই অর মাথা ঠিক থাকেনা“

তারপর?

-মানুষ জুকার রে গালি দেয়া শুরু করল। লুচ্চা খাচ্চর হাবিজাবি বলল। আমারও পপুলারিটি বাড়ছিল। মজাও পাচ্ছিলাম।
সমস্যাটা কি?

-আরে জুকারের বাচ্চা আইডি তো ব্লক করে দিছে :’(

ব্লক করলে প্রব কি? ফটো ভেরিফিকেশন করে ঠিক কর

-আরে ফটো ভেরিফিকেশন চাইলে তো কবেই ঠিক করতাম। জেন্ডার ভেরিফিকেশন চায়

কস কি! আচ্ছা সমস্যা নাই। আজকাল চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক আগাইয়া গেছে। তুই ডাক্তার এর কাছে যা। আগে তো তোর আইডি বাচা পরে জেন্ডার।

-দোস্ত ডাক্তার এর কাছে গেলে কাম হইব তো?
হান্ড্রেড পার্সেন্ট কাজ হবে

 
Tricks and Tips