অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৪

গণিতবিদ বয়ফ্রেন্ড

গার্লফ্রেন্ড যখন গণিত বোঝে…
মেয়ে: জান তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো?
ছেলে: সামথিং বাই জিরো।
মেয়ে: ওয়াও!! সো সুইট :-*

গার্লফ্রেন্ড যখন গণিত বোঝেনা…
মেয়ে: জান তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো?
ছেলে: সামথিং বাই জিরো
মেয়ে: কি??? >_< তুই আমার সাথে আর কথা বলবি না >_<

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৪

বাংলাদেশের কোন জেলার মেয়ে কেমন

দেখে নিন কোন জেলার মেয়ে কেমন।

ঢাকা: এখানে কিছু মেয়ে আছে বেশ বুদ্ধিমতি, কয়েকটা আবেগী মেয়েও পাবেন, তবে কিছু বিচ্ছু মেয়ে আপনাকে গরম তেলে ভাজবে, সুন্দরী ফিটফাট মেয়ে প্রচুর আছে (ময়দা সহ ও বাদে) তা এদের ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরলেই বুঝতে পারবেন, তবে এমন কিছু মেয়েও পাবেন যারা আপনাকে প্রান খুলে ভালোবাসবে।

চট্টগ্রাম: আপনি খুজে দেখেন এখানেও কিছু মেয়ে বয়ফ্রেন্ড কে প্রচুর ভালোবাসে, তবে আপনে যদি বিটলা টাইপ মেয়ের খপ্পরে পড়েন তবে কপাল খারাপ, মাম্মা কসম চিটাগাং এর বুদ্ধিমতি মাইয়া আপনে হালি হালি পাইবেন, সুন্দরী মাইয়া অনেক, তয় কিছু মাইয়ার আবেগ দেইখা আবেগে কাইন্দা দিবেন।

বরিশাল: কিছু মাইয়া আপনারে ছিল্লা কাইটা বিটলবন লাগাইয়াও দিতে পারে, অনেক অনেক সুন্দরী মাইয়া পাইবেন, আর বুদ্ধিমতি? সেইটা আর বলতে, দেখা যাইতেছে বরিশাইল্যা কিছু মাইয়ার কাছে আপনে ভ্যাদা, আবেগী মাইয়া খুজতেছেন? বরিশালেও পাইবেন, স্বামীরে ভালোবাসার মত মাইয়াও অনেক।

খুলনা: কিছু মেয়ে স্বামীদের প্রান দিয়ে ভালোবাসে, কিছু আছে বোকা টাইপ আবেগী, আবার কিছু বুদ্ধিমতি মেয়ে বুদ্ধিমত্তায় আপনাকেও ছাড়িয়ে যাবে, তবে এমন কিছু মেয়ে পাবেন যারা আপনার জীবনটারে ভাজা ভাজা করে দেবে, অবশ্য সুন্দরী মেয়ে আছে প্রচুর।

কুষ্টিয়া: এই এলাকার কিছু মেয়েরে দেখে মনে হবে বোকা বোকা কিন্তু এদের চেয়ে চালাক বুদ্ধিমতি মেয়ে পাবেন না, সুন্দরী মডেল কন্যা মেয়ে অহরহ আছে, আবার কয়েকটা আছে আপনার সাথে ফেভিকলের আঠার মতো লেগে থাকবে, তবে যেই কয়টা বিচ্ছু মাইয়া আছে তারা আপনারে বক্সিং মাইরা নাকও ফাটায়া দিতে পারে, সবশেষে কিছু মাটির মনের মতো আবেগী মেয়েও পেয়ে যাবেন যাদের আবেগের কাছে সবসময় আপনি পরাজিত হবেন।

রাজশাহী: এইখান কার অনেক মাইয়া সেইরাম চালাক আর বুদ্ধিমতি, সুন্দরী মাইয়ার অভাব নাই।  আবার বোকাসোকা আবেগী মেয়েও আছে, তবে কসম বয়ফ্রেন্ডকে জানপ্রান দিয়ে ভালোবাসার মতো মেয়ে কম না, বিচ্ছু গুলা থেকে সাবধান।

রংপুর: আবেগ এর বেগ ঠেকাইতে পারবেন না এই এলাকার কিছু মেয়ের আবেগ দেখে, ফাজিল টাইপ মেয়েগুলা ফতুর করে ছাড়বে, তবে পিওর ভালোবাসা দেয়ার মতো মেয়েও আছে, সুন্দরী মেয়েও কিছু পাবেন আবার অনেক বুদ্ধিমতি মেয়েও আছে।

সিলেট: এই এলাকার মেয়ের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারনা পেতে উপরের গুলো আবার পড়ুন ।

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৪

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং আমার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি

বিষয়টা একটু ফ্ল্যাশব্যাক থেকেই বলি। চতুর্থ শ্রেনীতে থাকাকালীন আমি পঞ্চম শ্রেনীর কয়েকটা বই নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছিলাম। তবে পঞ্চম শ্রেনীতে উঠে দেখলাম বই চেঞ্জ হয়ে গেছে, আমি যা ঘাটাঘাটি করেছিলাম তা আর নেই।  বই চেঞ্জ মানে শিক্ষক রাও একটু আধটু বিপত্তি তে পড়েছিল। এতবছর ধরে যে সিলেবাস অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে এসেছে সেটা পরিবর্তন হলে বিপত্তিতে পড়াই স্বাভাবিক। তাদের আগে নতুন পাঠ্যপুস্তক ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে তারপর ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দিতে হবে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মতো দেশের অনেক স্টুডেন্ট শিক্ষকদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সার্ভিস পায়নি। এটা শিক্ষকদের দোষ না, শিক্ষাব্যবস্থার দোষ।

ষষ্ঠ শ্রেনীতে উঠার পর বই চেঞ্জ হয়েছিল কিনা জানা নেই। তবে তখনও সৃজনশীল সিস্টেম চালু হয়নি। ফলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেনীতে আমরা পুরাতন ফর্মেটেই পড়াশোনা করলাম। এই ফর্মেটে পরীক্ষায় সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর করতে হতো,  গণিতের ক্ষেত্রে পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি মিলিয়ে ১০০মার্কের পরীক্ষা হতো। অনেক পোলাপাইন (সবাই না) বাজার থেকে গাইড কিনে এনে প্রশ্ন আর উত্তর মুখস্থ করতো এবং পরীক্ষার হলে উগরে দিতো। ব্যস টুকটাক এই ছিল ২০০৮সাল পর্যন্ত সারাদেশের পরীক্ষা পদ্ধতি তথা শিক্ষা ব্যবস্থা। একটা চরম সত্য কথা হলো দেশের খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য জায়গায় শিক্ষকরাই ছাত্রছাত্রীদের মুখস্থ বিদ্যায় অভ্যস্থ করিয়ে নিতেন। অনুপ্রেরনা দান কারী শিক্ষকের সংখ্যা খুবই কম, খুবই কম। ছিল, আছে হয়তো থাকবে। তাই পোলাপাইন মুখস্থ ছাড়া কিছু বুঝতো না, জ্যামিতির উপপাদ্য সম্পাদ্য তো মুখস্ত করতোই সাথে অনেকে বীজগনিত পাটিগনিতও মুখস্থ করতো। এমন অবস্থা ছিল ডিনামাইট মেরে এভারেস্ট ধসিয়ে দেয়া গেলেও মুখস্থ করার অভ্যাস ছাড়বে না পোলাপাইন।

২০০৯ সালে অষ্টম শ্রেনীতে উঠার পর চালু হলো সৃজনশীল পদ্ধতি। পোলাপাইন নামই শুনলো প্রথম চেহারা দেখা তো দূরের কথা। স্যারেরাও জানেনা এই সৃজনশীল পদ্ধতিটা আসলে কি? তাদের জিজ্ঞাসা করলেও আম আম করে মুখটা বাংলার "৫" করে রাখে। পড়াশোনাও তাই খাপছাড়া ভাবে হতে থাকলো। অল্প কিছুদিন যাওয়ার পর প্রশ্নের কাঠামো সম্পর্কে টুকটাক ধারনা পেলাম। কিন্তু চিরকাল মুখস্থ বিদ্যায় অভ্যস্থ স্টুডেন্ট সত্যিই কিছু "সৃজন" করবে সে ব্যপারে সন্দেহ করা তো দূরে থাক, বিষয়টাকে অবাস্তব বলেই মনে হলো। আমার মুখস্থ করার অভ্যাস ছিলনা দেখে টুকটাক আনন্দেই ছিলাম। প্রথম সাময়িক পরীক্ষার আগেও জানতাম না আসলে আমরা ঠিক কি সৃজন করবো। অন্যান্য সাবজেক্টে যাই হোক সৃজনশীলের নামে সবাই মুখস্থবিদ্যাই উগরাচ্ছিল। সমস্যা বাধলো গনিতে। যারা চিরকাল উপপাদ্য সম্পাদ্য মুখস্থ করে এসেছে তাদের তো গনিতের সৃজনশীল প্রশ্ন দেখে মাথা খারাপ। তার উপর গনিতে অবজেক্টিভ থাকায় প্যান্ট খারাপের উপক্রম। ফলস্বরুপ সেবার গনিতে সারাদেশেই রেজাল্ট খারাপ। অন্যান্য সাবজেক্টেও রেজাল্ট খারাপ ছিল। সে রেজাল্ট অভিভাবক কে দেখানোর পর তারা যে তার সন্তান কে স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ কান মলা দিয়েছেন এ ব্যপারে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। কারন আমাদের অভিভাবক দের শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই, তাদের চাই রেজাল্ট। এই একটা বছর আমরা বুঝলাম না সৃজনশীলে মুখস্থ করে না সৃষ্টি করে। তবে এটুকু বুঝলাম লিখতে লিখতে হাত ব্যথা হলেও লিখা ফুরাবে না।

নবম শ্রেনিতে উঠে আমরা দুইদিন পরপরই নতুন নতুন খবর পেতে থাকি। একবার শুনি সৃজনশীল সিস্টেম মার খেয়ে গিয়েছে, আরেকবার শুনি সব সাবজেক্ট সৃজনশীল হবে তো আরেকবার শুনি চার সাবজেক্ট সৃজনশীল হবে। এমন হরেক রকম নিউজ পেতে থাকি তাই প্রায় সবগুলো নিউজকেই অবিশ্বাস করলাম। গাইড ব্যবসায়ীদেরই মজা। তারা প্রথমে সাধারন পদ্ধতির গাইড বের করলো, কিছুদিন পর সৃজনশীল গাইড বের করলো। গাইড পড়ুয়ারা দুই ধরনের গাইডই কিনলো। প্রথম সাময়িক পরীক্ষা যেদিন শুরু সেদিনও আমরা জানিনা আসলে আমাদের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে না মুখস্থবিদ্যা উদ্গীরন করন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। যদিও আমার তখন মনে হয়েছিল সৃজনশীল বলে কিছু নেই। সবই মিডিয়ার সৃষ্টি। যাই হোক প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শেষে বুঝলাম গনিত বাদে সব সাবজেক্ট সৃজনশীল।

"এদেশে বাজারে সৃজনশীল পদ্ধতির হরেক রকমের গাইড পাওয়া যায়, স্টুডেন্টরা সৃজনশীল পদ্ধতির গাইড কিনে সেটা মুখস্থ করে এবং পরীক্ষায় তা উদগীরন করে। এ পদ্ধতিটা এখনো চালু আছে কারন বাজারে সৃজনশীল গাইডের চাহিদা কমে যাইনি।" এভাবেই সৃজনশীল পদ্ধতির মুখস্থবিদ্যা প্রতিষ্ঠা লাভ করলো।  দশম শ্রেনীতে উঠে খেয়াল করলাম ফিজিক্স কেমিস্ট্রিতে উচ্চমাধ্যমিকের টপিক থেকে প্রশ্ন করা আরম্ভ করেছে। মানে কি? সৃজনশীল মানেই কি মাধ্যমিক লেভেলে থেকে উচ্চমাধ্যমিক লেভেলের প্রশ্নের উত্তর করা? যাই হোক টুকটাক ৩বছর আমরা এই সৃজনশীল পদ্ধতির নামে নাস্তানাবুদ হতে থাকলাম। কারন গতানুগতিক ধারার প্রশ্ন থেকে সেগুলো অনেক জটিল ছিল আর আমরাও এ পদ্ধতিতে দক্ষ হতে পারিনি তখন।  ৩বছরে না শিক্ষকরা জানলো সৃজনশীল কি না জানলো শিক্ষার্থীরা। অবস্থাটা ঠিক গভীর পানিতে হাবুডুবু খাওয়া সাঁতার না জানা মানুষটার মতো। এই হাবুডুবু খেতে খেতেই এস এস সি পার করলাম।

কলেজে উঠে আবার আমাদের বেলায়ই সব সাবজেক্ট সৃজনশীল হলো। কলেজের শিক্ষকদেরও অবস্থা সেই একই। কিভাবে প্রশ্ন করবে কিভাবে পড়ালে ঠিক হবে সেটাই ঠিক করতে পারলো না। অনেকে সঠিকভাবে সৃজনশীল প্রশ্নটাও করতে পারেনা। মোটামুটি আমাদের মাঝে বদ্ধমূল ধারনা জন্মে গিয়েছে সৃজনশীল মানেই প্যারা। এইখানে মুখস্থের আর কোনো কারবার নেই। সম্ভবত প্রয়োজনের তাগিদেই অনেকে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছিল। তবে অবশ্যই সেটা পর্যাপ্ত নয়। সেকেন্ড ইয়ারে উঠে দেখলাম আমাদের পরের ব্যাচের সব বইয়ের সাইজ চেঞ্জ হয়ে ছোট হয়ে গেছে। মোটামুটি ভেতরের টপিকেও বেশ পরিবর্তন। আচ্ছা এই বছর বছর বই চেঞ্জ সিলেবাস চেঞ্জ কোন ধরনের রসিকতা? শিক্ষকরা এর ফলে কোনো পদ্ধতিতেই ভালোভাবে অভ্যস্থ হতে পারছে না, না পারছে ভালো করে শেখাতে।

এবারের এইচ এস সি পরীক্ষার ব্যপার তো সবাই জানেন। ব্যপক আকারে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে এদেশের স্টুডেন্টদের এক বিরাট অংশকে নীতিহীন বানানোর প্রাথমিক প্রক্রিয়া চলল। যারা এই বয়সেই এসে নীতি বিসর্জন দিলো তারা ভবিষ্যতে কেন নীতি বিসর্জন দেবেনা? আজ নীতি বিসর্জন দিতে বাধ্য করা হলো, কাল হয়তো সে স্বেচ্ছায় দূর্নীতি করবে। প্রশ্ন ফাঁসের এই জোয়ারে ক্লাসের সবচেয়ে ভালো স্টুডেন্ট টিও প্রশ্ন নিলো কাপা কাপা হাতে। তার ভয় কি লাভ রিস্ক নিয়ে? এমনিতেই সৃজনশীল তাই উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করলে বেকায়দা। তাই সে ভালো ছাত্র হওয়া স্বত্ত্বেও পারিপার্শিক অবস্থার প্রেক্ষিতে নীতিটা বিসর্জনই দিয়ে দিলো। এবার মনে করি ২০% স্টুডেন্ট স্রোতের বিপরীতে গা ভাসিয়েছে। তাদের মাঝে কিছু বিশ্বাস করেনি প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, কিছু নিজের উপর আস্থা রেখেছে থেকেছে নীতিবান আর কিছু আছে এক্সট্রা অর্ডিনারি। এক্সট্রা অর্ডিনারিদের আমি আলোচনায় না টানি। এই প্রশ্ন না নেওয়া ছাত্রটি নিজের মেধা অনুযায়ি রেজাল্ট করেছে, কেউ হয়তো এ প্লাসও পেয়েছে। অন্যসময় হলে সে হয়তো এটাকে মেনে নিতো, কিন্তু যখন দেখছে প্রশ্ন পেয়ে একজন তার চেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে তখন কি তার খারাপ লাগবে না? যখন দেখবে প্রশ্ন পাওয়া ছাত্রটি দেশের সব পাবলিক ভার্সিটি তে পরীক্ষা দিতে পারছে অথচ সে পারছে না তখনও কি তার খারাপ লাগবে না? ফিজিক্স প্রশ্ন হার্ড হওয়ায় সে এটাতে একটু খারাপ করে ফেলেছে তাই সে অনেক পাবলিক ভার্সিটি তে পরীক্ষা দিতে পারছে না, অথচ প্রশ্ন পেয়ে ফিজিক্সে ভালো করে ফেলা ছাত্রটি সব ভার্সিটি তে পরীক্ষা দিতে পারছে সেটা দেখেও কি তার খারাপ লাগবে না? প্লাস মিস হয়েছে দেখে বাবা বকছে, অথচ প্রশ্ন নিয়ে প্লাস পাওয়া ছাত্রটির বাবা তার সন্তানকে মাথায় তুলে রেখেছে তখনও কি নীতিবান ছেলেটার ইচ্ছা হবে না নীতি বিসর্জন দিতে?

অনেকেই বলবে যারা যোগ্য তারা প্রশ্ন না পেলেও প্লাস পেতো। হ্যা এটা আমিও মানি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় এইচ এস সির রেজাল্টের প্রতিফলন ঘটেনা এটা কিন্তু সত্য। অনেকেই প্লাস না পেয়েও চান্স পায় অনেকে প্লাস পেয়েও চান্স পায় না।  কিন্তু যে ছেলেটা প্লাস না পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় তাকে কি এইচ এস সির রেজাল্টের ভিত্তিতে অযোগ্য বলা যাবে? সে হয়তো প্রশ্ন না পেয়ে এ গ্রেড পেয়েছে কিন্তু নিজের যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে, তবে কি সে এইচ এস সির রেজাল্টের ভিত্তিতে প্লাস পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়া ছাত্রটির চেয়ে অযোগ্য হয়ে যাবে? তো সমস্যা কি? বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময়ই দেখা যাবে কোনটা গাছপাকা আম আর কোনটা ফরমালিন দেয়া আম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কি আসলেই যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ দিচ্ছে? তারা বিভিন্ন গ্রেডিং এর মার প্যাচে আগেই তো নীতিবান ছেলেটাকে সরিয়ে দিলো। তার বদলে সুযোগ দিলো প্রশ্ন পাওয়া ছেলেটাকে। একটু ব্যাখ্যা করি। মনে করি একজন শুধু ফিজিক্স বাদে সব সাবজেক্টে প্লাস পেয়েছে। দূর্ভাগ্যক্রমে ফিজিক্সে চলে এসেছে মাইনাস। সে নিজ মেধাতেই এ রেজাল্ট করেছে। এবার আরেকজন প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়ে সব সাবজেক্টে এ গ্রেড পেয়েছে। তাহলে তার টোটাল পয়েন্ট দাড়ালো ৪.৪। বাস্তবতা হলো এই প্রশ্ন পেয়ে ৪.৪ পাওয়া ছেলে সব পাবলিক ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবে অথচ প্রশ্ন না পেয়ে ফিজিক্সে মাইনাসধারী ছাত্রটি সব ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবেনা। ভার্সিটি গুলো না মূল্যায়ন করলো নীতিবান ছেলেকে না মূল্যায়ন করলো জিপিএ ৫ পাওয়া ছেলেকে।    বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এ ২০% ছাত্রকে যদি সুযোগ না দেয় ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার তবে কি অবিচার করা হবেনা? যেহেতু প্রশ্নফাঁস হয়েছিল তাই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর উচিত ছিল প্রাপ্ত গ্রেড কে যথাসম্ভব কম প্রাধান্য দেয়া।
     
আবার আরেকটা বিষয় লক্ষনীয় তা হলো এবছর সব বোর্ডের পাশের হারই ৮০% এর আশেপাশে, অথচ যশোর বোর্ডের পাশের হার ৬০%। অর্থাত এখানে অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় খাতা যথেষ্ঠ কঠিন করে দেখা হয়েছে ফলে সামগ্রিক ভাবে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছে এ বোর্ডের স্টুডেন্ট রা।

এইচ এস সিতে পাশ করা স্টুডেন্ট দূরের কথা, মোট প্লাস পাওয়া স্টুডেন্টদের অর্ধেকও সিট নেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে। ফলে ক্রমশই হতাশাবাদীর সংখ্যা বাড়ছে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের করছে হতাশ। সত্যি কথা জগাখিচুড়িও এর চাইতে ঢের ভালো।

"আমরা  হাটতে শেখার আগেই আমাদের পায়ে একবার ছোট জুতা, আরেকবার বড় জুতা, একবার উচু জুতা, আরেকবার নিচু জুতা, আরেকবার চাকা লাগানো জুতা পরিয়ে দেয়া হচ্ছে পরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে আমরা হাটতে শেখার আগেই অভ্যস্থ না হওয়ায় পা মচকে ফেলছি নয়তো ভেঙ্গে ফেলছি। শেষমেশ কাউকে হয়তো হুইল চেয়ারেই বাকি জীবন টা কাটাতে হচ্ছে। এই হচ্ছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা"

মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০১৪

আজ ব্যর্থ হয়েছি বলে কাল সফল হবো না এটা হতে পারেনা

আমি অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে কারো কথা পাত্তা দেই না। যে যা বলে বলুক ওসব গোনায় ধরে মন খারাপ করার টাইম নেই। আমি জানি একজন প্লাস পেলেই সে প্রকৃত মেধাবী হয়ে যাবে না, আবার কেউ প্লাস পায়নি মানে এই নয় সে মেধাবী নয়। মানুষের জীবনে ব্যর্থতা সফলতা আসবেই। আমি যদি কাল সফল হই তবে সেটাকে আমি ভবিষ্যতের প্রেরনা হিসেবে নেবো। আবার আমি যদি কাল ব্যর্থও হই তবুও সেটা ভবিষ্যতে সফল হওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইবো। মানুষের জীবনে ব্যর্থতার পেছনে থাকে ব্যর্থতা এবং সফলতা, আবার মানুষের জীবনে সফলতার পেছনে থাকে ব্যর্থতা এবং সফলতা। যে যেদিকে নিজেকে পরিচালিত করবে সে সেদিকেই যাবে। আজ ব্যর্থ হয়েছি বলে কাল সফল হবো না এমন কোনো কথা নেই। জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপই চ্যালেঞ্জ।

"…সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে আমার পা ফসকে যেতেই পারে, তাই বলে রেলিং ধরে নিজেকে সামলে নেবো না এমন টা হতে পারে না। যদি তুমি রেলিং টা ধরতে না চাও তবে গড়াতে গড়াতে নিচেই গিয়ে পড়বে"

আর কে কি বলল সেদিকে নজর দিয়ে লাভ নেই, রেজাল্টের কথা মানুষ অল্প কিছুদিন মনে রাখে। এগুলো কে খুব বেশি পাত্তা দিতে হয় না।

শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৪

মোস্ট ওয়েলকাম ২ | উড়াধুড়া "ট্যাকনোলজি" তে ভরপুর সিনেমা, শুধুই বিনোদন | মুভি রিভিউ

[স্পয়লার এলার্ট]

গতকাল জিপি তে ৪গিগাবাইট ডাটা ফ্রী পাওয়ার পর আমার শুধু একটাই অনূভুতি হয়েছিল "এ তো অসম্ভব!" আমার অনূভুতি কে সত্য প্রমান করার জন্য কিনা জানিনা ঠিক তখনই অনন্ত জলিলের মোস্ট ওয়েলকাম ২ এর পোস্টার সামনে পড়ে গেল। আসলেই তার সামনে পড়ে যাওয়ায় অসম্ভবই সম্ভব হয়ে গেছে। পোস্টারে দেখলাম গ্রামীন ফোন এই সিনেমার স্পন্সরও। তাই সিনেমাটা দেখার জন্য তর সইছিল না। সুমন আর সুদীপ্ত কে বলতেই তারা রাজী হয়ে গেল। তিনজন বেশ ভালো একটা জায়গায় গিয়ে বসে পড়লাম। যেহেতু অনন্তের সিনেমা তাই অভিনয় শিল্পীদের আলাদা করে পরিচয় করে দেয়ার প্রয়োজন নেই।

অনন্ত জলিলের সিনেমায় প্রতি মূহুর্তে চমক থাকবে না সেটা কি হয়! কিন্তু নাম দেখানো থেকেই যে চমক শুরু হবে সেটা বুঝিনাই। কোনো এক কালে একটা দোকানের উপরে দেখেছিলাম সেখানে লেখা আছে "ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার মো: আব্দুল খালেক এমবিবিএস এন্ড এল এল বি" নিচে ছোট করে চর্ম, যৌন, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজি ইত্যাদী বিশেষজ্ঞও লেখা ছিল সম্ভবত। সিনেমার পরিচয় পাট্টা পর্বে সুপার ডুপার ব্লকবাস্টার এ্যাকশন হিরো অনন্ত এতবড় নাম আর সাথে স্ক্রিপ্ট রাইটার,  প্রযোজক,  পরিচালক অনন্ত দেখে আমার সেই ইঞ্জিনিয়ার এমবিবিএস ডাক্তারের কথা মনে পড়ে গেল। ভাই পারলে ক্যামেরা ম্যানের দায়িত্বটাও নিতেন। সেলফি স্টাইলে ক্যামেরা ধইরা শুটিং করতেন। পরিচয় পাট্টা পর্বে আরো ছিল গ্রামার না গ্ল্যামার গার্ল বর্ষা (টাইটেলের ফন্ট ভালো আছিল না আসলে)। অনন্ত বর্ষারে খুব জিগাইতে মুঞ্চায় এই "সুপার ডুপার এ্যাকশন হিরো" আর "গ্ল্যামার গার্ল" এই টাইটেল দুইটা তারা কই পাইছে মানে কারা দিছে? তারা নিজেরা নিজেরা লাগাইলে ঠিক আছে :3

পরিচয় পাট্টা নিয়ে মাথা ঘামাতে ঘামাতে দেখি আল জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন আরো কি কি চ্যানেল জানি চেঞ্জ হচ্ছে । কি মুশকিল! আইলাম সিনেমা দেখতে ক্যাডা জানি প্রজেক্টরে ডিশ টিভি লাগায়া দিছে। ভালো করে খেয়াল করে দেখি নিউজ রিডার দের মুখের সাথে সাউন্ড মেলেনা। ওইত্তেরী শুরুতেই চ্যানেল গুলার কাটপিস লাগায়া দিছে! দেখা যাচ্ছে নিউজ রীডার ভারতের নির্বাচনের নিউজ পাঠ করছে আর জলিল সাহেব ডাবিং এর সময় ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কার সংক্রান্ত ভয়েস জুড়ে দিয়েছে। সারা বিশ্বের মিডিয়া এতো তোলপাড় কারন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী হাসান মইন ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু সেইটা সারা পৃথিবীতে ব্রেকিং নিউজ আকারে প্রকাশ হচ্ছে। সম্ভবত এটাই প্রথম ঘটনা কোনো কিছু আবিষ্কার হওয়ার পর সেটা ব্রেকিং নিউজ আকারে প্রকাশ হচ্ছে।

রোবট সিনেমায় দেখেছিলাম রজনীকান্ত রোবট বানাতে গিয়ে এক হাত লম্বা দাড়ি গজিয়ে ফেলেছেন। এখানে এসে দেখলাম হাসান মইন সাহেবের চুল সম্ভবত সার্ফ এক্সেল, টাইড, হুইল পাওয়ার হোয়াইট যত প্রকার পরিষ্কারক বস্তু আছে তা দিয়ে সাদার চেয়েও সাদা বানিয়ে দিয়েছে। পরে মনে হয় সাদা রংও লাগিয়ে দিয়েছে তা না হলে চুল দেখে আমার চোখ ঝলসাতো না। চুলের পর গোফের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম এ গোফ দ্বিস্তর বিশিষ্ট। দুই স্তরের রং দুইরকম। না জানি গবেষণা করতে গিয়ে আরো কয় স্তর হয়।

ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কার নিয়ে হাসান মইন সাহেব সংবাদ সম্মেলন করছেন। সে সময় দেখা গেল সামনের সারিতে বসে থাকা একজনের বুকে বোতামের মতো ক্যামেরা লাগানো। কিন্তু সেই ক্যামেরা থেকে নীল লেজার রশ্মি বেরিয়ে এসে ক্যান্সারের প্রতিষেধকের প্রেজেন্টেশন টার ভিডিও করছে। এই লেজার ওয়ালা ভিডিও ক্যামেরা বানিয়েছে যে তাকে নিয়ে একটা সংবাদ সম্মেলন করা উচিত।

ভিলেন রা সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞানী কে আক্রমন করতে আসলো আর তখনই এ্যাকশন হিরো অনন্ত জলিল হাসপাতালের দোতলার কাচ ভেঙ্গে নিচ একটা গাড়ির উপর জাম্প দিয়ে পড়লো। সাথে সাথে পাশের দুইটা গাড়ি উল্টিয়ে পাল্টিয়ে চিৎ হয়ে কাৎ হয়ে উড়ে গেল। আর অনন্তের চাপে যে গাড়ির উপর জাম্প দিয়েছিল সেটায় আগুন ধরে গেল। পরে অবশ্য কারো সাহায্য ছাড়াই আগুন নিভে গেল দোতলাতেও কোন ভাঙ্গাভুঙ্গা দেখা গেল না। ছে কি এ্যাকছন গুরু একেবারে ফাটিয়ে দিয়েজে। মাইরি বলছি। এইবার আমি মেনে নিলাম পরিচয় পাট্টা পর্বের টাইটেল ঠিক আছে।

গ্ল্যামার গার্ল বর্ষা স্ক্রিনে এসেই দেখি চাপাবাজী করছে অনন্ত তার বয়ফ্রেন্ড হেন তেন। এ তো দেখি জন্মের আগে থেকেই প্রেম হয়ে আছে। যাহোক একটু পরেই গানের দেখা পাইলাম। গানের ভিতরে জলিল সাহেব এন্টার্কটিকা মহাদেশের বরফ, মরুভূমি, উলফেনস্টেইন গেমের সিড়ি হাবিজাবি আরো বহুত কিছু দেখাইলেন। তাদের পায়ের নিচ দিয়ে এনটার্কটিকার বরফ, মরুভূমি দৌড় দিয়ে বেড়াচ্ছে, মাটি আর তাদের পায়ের মধ্যবর্তী শূণ্যস্থান দুই ইঞ্চি। অনন্ত যখন সিড়িতে বসে আছেন তার বসা সংলগ্ন স্থান এবং সিড়ির ধাপের মাঝে দুই ইঞ্চি গ্যাপ। কেউ শূণ্যে বসে থাকতে চাইলে যা হয় আর কি। মজার ব্যপার হলো বস ক্রোমা শট মারতে গিয়ে তার বসার জায়গার প্যান্ট থেকে বেশ কিছু অংশ ইন্দুর খাওয়া মতো করে খেয়ে ফেলেছে :-P [বিস্তারিত বললাম না ইশারা ইঙ্গিতে বুঝে নেন :-P ]

এইবার দেখা গেল ঢাকা শহরের একটা পিচ্চি ফকির অনন্তের কাছে গড়গড় করে ভিক্ষুক সিন্ডিকেটের তথ্য দিচ্ছে। ভাই ঢাকা শহরের ভিক্ষুক রা এত বলদ না যে আপনারে হুদাই হাড়ির খবর কইবো। পিচ্চির তথ্য মতো জলিল সাহেব ভিক্ষুক সিন্ডিকেটের লীডার কে নীতিবাক্য শোনাচ্ছে। ধুর ভাই গরীব রাও মানুষ এই টাইপ নীতিবাক্য শুনতে শুনতে কান পঁচে গেছে। তার উপর আপনে অলরেডি ওল্ড মডেলের বেশ কয়েকটা নীতিবাক্য ডেলিভারি দিয়া দিছেন। দুসরা ছাড়েন, নীতিবাক্য দিয়া উইকেট পড়বো না। বস এই বার যেই দুসরা দিলো তাতে একটা মাথাভোঁতা মোটা কাঠ ভিক্ষুক সিন্ডিকেটের লীডারের ডান পা এফোঁড় ওফোঁড় করে এক হাত বেরিয়ে গেলো। একেবারে ক্লিন বোল্ড রাইট স্ট্যাম্প ফাতাফাতা। বোল্ড করার সাথে সাথে বৃষ্টি নামার মতো করে ঘটনাস্থলে পুলিশ আর সাংবাদিক হাজির হলো। বস সাংবাদিক দেরও কিছু নীতিবাক্য ডেলিভারী দিলেন। জলিল সাহেবের হাতের আর মুখের মুভমেন্টের সাথে সংলাপের কোনো মিল নাই। অবশ্য এই ধারা তিনি পুরো সিনেমাতে বজায় রেখেছেন।  সাংবাদিক দের হাতের মাইক্রোফোন দেখে মনে হলো এগুলো কোনো পাটকাঠিতে (অথবা সরু লাঠি দিয়ে বানানো স্ট্যাম্প) এলোপাথাড়ি কচটেপ পেচিয়ে বানানো হয়েছে। সেই সংবাদ আবার দেখাচ্ছে AJ (Ananta Jalil) টিভিতে :3 এইটা দেখে প্রচুর হাসছি :-P

বিজ্ঞানী কে উদ্ধার করার সময় অনন্ত জলিল গাড়ি দিয়ে একটা গেট ভাঙলো, গেট টা কয় হাজার টুকরা হলো তার ইয়োত্তা নাই। আজ কাল গাড়ির ধাক্কায় লোহার গেট হাজার টুকরা হয়ে যায়। এই কিডন্যাপের পর বিজ্ঞানীর সিকিউরিটি জোরদার করা হলো। জলিল সাহেব গ্রামীন ফোনের থ্রিজি ব্যবহার করে করে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগাচ্ছিলেন। একটু পরে বর্ষা অনন্তের অফিসে এসে হাজির্। অনন্তও বর্ষার হাত চেপে ধরলো (নোট এইটা কিন্তু সিনেমায় পুলিশ অফিসার অনন্ত আর বর্ষার প্রথম দেখা :-P )। আর তারপরই গান শুরু হলো "হাত ধরতে দিলে দেবো ঝালমুড়ি কিস করতে দিলে দেবো ক্যাডবেরী……… চিকেন তান্দুরী" বর্ষা আফা আপনে না জলিল স্যারের প্রেমে পড়ছিলেন? তো হাত ধরার পিড়াপিড়ি করার কথা তো আপনার্। উল্টা জলিল স্যার পিড়াপিড়ি করে ক্যা? নাকি আপনারা ভুইলা গেছিলেন কে কার প্রেমে পড়ছিল? অন্ততপক্ষে চিকেন তান্দুরী খাওয়ার লোভেও তো আপনারে হাত ধরতে দেয়া উচিত কারন বেশ কয়েকবার আপনারে রেস্টুরেন্টেই দেখলাম। গানে অনন্তের ড্যান্স সে আরেক বস্তু। ড্যান্সের একেকটা মূদ্রা দেখে মনে হচ্ছিল সে ট্রাফিক পুলিশ, ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির যানজট ছাড়াচ্ছেন। বাকি মূদ্রাগুলোর কথা বললে বিষয়টা অশ্লীল হয়ে যাবে :-P

বর্ষাকে ভিলেন রা ঢাকা থেকে কিডন্যাপের চেষ্টা করে আর কোথা থেকে অনন্ত এসে বর্ষাকে মোটর সাইকেলে করে নিয়ে যায় এবং দেখা গেল তারা পাহাড়ি এলাকায়। তাদের তাড়া করতে থাকা গাড়ি থেকে ভিলেন রা পিস্তল দিয়ে গুলি করছে। সেই পিস্তল থেকে প্রথমে হোমিওপ্যাথিক শিশির সাইজ তারপর পটল সাইজ তারপর পেপে তরমুজ সাইজের মিসাইল ছুটে আসতে লাগলো। ভয়ে আছি কখন না জানি রকেট সাইজের টোমাহক ক্ষেপনাস্ত্র বাইর হয়। এইসব মিসাইল গুলা অনন্ত বর্ষাকে সাইড দিয়ে গাড়ি, ট্রাকে গিয়ে লাগলো। ভাই একটা প্রশ্ন ছিল গাড়ি গুলা কি জিটিএ ভাইস সিটি গেম থেইকা ধার কইরা আনছেন? না মানে সেইগুলা দেইখা তো অরজিনাল মনে হইলো না। তাছাড়া টুক্কাটুক্কি লাগলেই বিগ ব্যাং এর মতো ব্লাস্ট হয়ে যাচ্ছে।

এই সিনেমার সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক হলো সিনেমার গান গুলা। প্রায় প্রতিটা গানের ব্যাকগ্রাউন্ডেই ক্রোমা শট দিয়ে স্টিল ইমেজ বসিয়ে দিয়েছেন। এই কাজ টা মোড়ের মাথার কম্পিউটারের দোকানের পিচ্চিও পারে। আমি নিজেই ক্লাস সেভেনে থাকতে এই ক্রোমা শট দেওয়া শিখছি। তো কাহিনি হইলো ক্রোমা শট দিছেন ভালো কথা কিন্তু সেইগুলা আপনার পায়ের তল দিয়া নইড়া বেড়াইতেছে ক্যান? মাঝে মাঝে আপনার শরীরের পাশ দিয়ে সাদা বর্ডারও দেখা যাচ্ছে। বস এই লেভেলের পাগলামী না করলে চলতো না?

অনেক গবেষণা করে অনন্তের একটা ইউনিক ড্যান্স (ঠিক ড্যান্স না, স্ট্যাচু বলা যায়) আবিষ্কার করলাম। প্রায় প্রতিটা গানেই বেশ কয়েকবার স্ট্যাচু স্টাইলে তাকে দেখা যায়। এতে তার ডান পা ৭০° এঙ্গেলে এবং বাম পা ৮৫° এঙ্গেলে থাকে আর হাত দুটো প্রসারিত থাকে। দারুন স্টাইল না? :-D

সিনেমার এক অংশে ভিলেন নিনো হেলিকপ্টারে করে বিজ্ঞানী হাসান মইন কে নিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এক দৃশ্যে দেখা গেল অনন্ত ছোট্ট একটা জাম্প দিলেন তারপরের দৃশ্যে দেখা গেল তিনি হেলিকপ্টারের নিচে ধরে ঝুলে আছেন। ভাই আপনি যে জাম্প দিয়ে হেলিকপ্টার ধরেছেন তার প্রমান কি? আবার তার পরের দৃশ্যেই দেখা গেল দায়িত্বে অবহেলার কারনে অনন্তকে মিডিয়া ধুয়ে দিচ্ছে। ভাই তাইলে আপনে হেলিকপ্টারে ঝুইলা কি করতেছিলেন? নাকি ভুলে সিনেমায় হেলিকপ্টার শট ঢুকায়া দিছেন?

দায়িত্বে অবহেলার কারনে অনন্ত চাকরীতে ইস্তফা দিলো তারপরই পুলিশ এসে গ্রেফতার করলো। গ্রেফতারের পর উরে মাইর্। পা উপরে ঝুলাইয়া পিটাইতেছে। তারপর দেখা গেলো অনন্ত সেলের ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো। ভাই আপনে না ঝুইলা ছিলেন? নামলেন ক্যাম্নে আর বাইর হইলেন ক্যাম্নে? ধুর সুপারহিরো দিয়া সব সম্ভব। এরপর অনন্তের পেটে মিশা ঘুষি মারে কিন্তু অনন্ত এক চুলো নড়েনা অথচ মিশার হাত মচকে যায়। আগের বার পেটে চাকু মারছিল ভাগ্যিস সেইটা ভাইঙ্গা যায়নাই :-P মিশাকে প্রথমবার কন্ট্রাক্ট দেয়ার সময় তাকে নিনো ৫০মিলিয়ন ডলার দেবে বলেছিল। এবার মিশা বলল সে ৫বিলিয়ন ডলার পাবে কাজ করে দিলে। আগে ঠিক করে ডলার মিলিয়নে দিবেন না বিলিয়নে দিবেন। একেকবার একেক কথা ভালো লাগে না।

এইবার ভিলেন রা কি না কি ভাইরাস কুকুরের ভিতর পুশ করে দিলো আর তাতে সারা শহরের মানুষ আক্রান্ত হলো। পুরা শহর ছোয়াচে রোগে আক্রান্ত। মানুষ ভেদবমি করে খিচুনি দিয়ে অস্থির। এইগুলা অবশ্য কৃশ থ্রি সিনেমার কাটপিস। ডাক্তার রা ডুবুরীদের মাস্কের মতো আজব টাইপ মাস্ক পরে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। অবশেষে হাসান মইনের ক্যান্সারের প্রতিষেধক দিয়ে এ রোগ সারলো। তার মানে এইটা ছোঁয়াচে ক্যান্সার ছিল! আগে কইবেন না মিয়া। ভয় পাইয়া গেছিলাম রোগীগুলা যদি খিচুনি দিয়ে মারা যাবার পর রেসিডেন্ট ইভিলের ভূত হয়ে যেত! তাহলে তো আরেক সমস্যা হতো।

জলিল ভাইরে কিছু কই, ভাই পুরা সিনেমায় আপনার চুল ছোট আর এক জায়গায় চুল বড় সেইটা দেইখা আমার দোস্ত জিগায় "ওই নায়িকা কুনডারে?" আগে ঠিক করেন কোন সাইজের "চুল" ব্যবহার করবেন। বর্ষা যখন আপনাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আর আপনি বললেন "এই কি করছো?" সেইটা দেইখা দোস্ত হাসে আর কয় "এই নায়িকা কুনডারে?" আপনি যখন খালি গায়ে মাইরপিট করেন তখন দোস্ত জিগায় "ওই নায়িকা কুনডারে?" সিনেমার শেষ দৃশ্যে যখন বর্ষার সাথে রোমান্স করেন তখন জিগায় "ওই নায়িকা কুনডারে?" কি জবাব দিমু আপনেই কন? এত পেইন সহ্য হয়? গুলি লাগার সাথে সাথেই গাছে বিশাল গর্ত দেখা যায় আবার তারপরই গর্ত মিলিয়ে যায়। এইটা কোন প্রযুক্তি? আপনে জাম্প দেয়ার সময় ক্রেনের ছায়া দেখা যায় এমনকি ক্রেনের একটা কোনাও দেখা যায়। ভাই এইগুলা খেয়াল করেন নাই? আপনে না "ট্যাকনোলজি" ব্যবহার করছিলেন? তো পুরা সিনেমার এই দশা ক্যান? যেই ক্যান্সারের প্রতিষেধক নিয়া এত কাহিনী লাস্টে সেইটারই খবর নাই, তাইলে এত কাহিনী করলেন ক্যান? চায়না ফোনে অডিও, ভিডিও, রেডিও, ক্যামেরা, টিভি, ফ্রীজ, ফ্লাশলাইট, হিটার ইত্যাদী থাকে আপনারও তো সেই দশা। নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার সব হইতে গেলে সিনেমার অবস্থাও তো চায়না ফোনের মতো হবে। ৬টা সিনেমা তো বানিয়ে ফেলেছেন। এবার শুধু প্রযোজক হয়ে যান, প্লিজ লাগে। গ্ল্যামার গার্ল বর্ষার অভিনয়ে পুরা বিরক্ত, আপনার অভিনয় দেইখা কান্না চাপে।

সিনেমার মানুষ আছে তাই মানুষ বাচে গান টা ভালো লেগেছে। হায়দ্রাবাদে করা শুটিং টাও বেশ ভালো লেগেছে। তবে সবচেয়ে যেটা ভালো লেগেছে সেটা হলো ফারিয়া। উফ একটা মেয়ে এত্ত কিউট হবে ক্যান?? ফারিয়ার উপর অনেক আগেই ক্রাশ খেয়েছিলাম আর আজ তো পুরা প্রেমে পড়ে গেলাম :-P

একটা দু:সংবাদ হলো হল থেকে বেরিয়ে দেখি জিপি আমার ৪জিবি নেট কেড়ে নিয়েছে :-( :-( এইটা কোন ধরনের মশকরা ছিল? :-(

 
Tricks and Tips