অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৪

বাংলা সিনেমা অপছন্দ হওয়া সত্ত্বেও দেখি কারন……

আমি বাংলা সিনেমা দেখি। কিন্তু বিশ্বাস করেন আমার রুচিতে বাধে এসব দেখতে। বিশ্বাস করেন মনচায় হলের মাঝে বমি করে দেই। আমার মাইগ্রেনের প্রবলেম থাকলে আমি নিশ্চিত এসব ছাই পাশ দেখতে দেখতে আমি মারাই যেতাম। কি বানায় এসব? ছি! এবার যদি কেউ শোনে আমি বাংলা সিনেমা দেখি তবে ক্ষ্যাত বলতেই পারে। বাংলা সিনেমা দেখার কথা শুনে অনেকে ক্ষ্যাত বলেও। তবুও দেখি, কারন একসময় ভাবতাম এই মৃতপ্রায় শিল্পটাকে সাপোর্ট দিলে একদিন হয়ত মাথা তুলে দাড়াবে। এমন একটা আশা প্রায়ই উকি দেয়।  তাই শত মানসিক অত্যাচার সহ্য করেও দেখি। এখন বিচিত্র টাইপের বিনোদনের জন্য দেখি তবুও গাটের পয়সা খরচ করে। আমার মতো অনেকে আছেন যারা অপছন্দ করা সত্ত্বেও এসব ছাই পাশ দেখে। কারন আমরা চিন্তা করি ভালো সিনেমা তৈরি হলে আমাদের দেশকে এই সেক্টরে বাইরে হাইলাইট করা যাবে। কিন্তু ভালো সিনেমা আর তৈরি হয়না। আর আমরা বছরের পর এসব আবর্জনা হজম করি একটা মাত্র দুরাশায়। ভাবি ভারত যদি সিনেমা দিয়ে পৃথিবীতে নিজেদের আলাদা পরিচয় তৈরী করতে পারে তবে আমরা কেন নয়? আমাদের সিনেমার সোনালী অতীতও এই দুরাশার জন্য দায়ী। দেশের শ্রেষ্ঠ আহাম্মক গুলো সিনেমায় নাম লেখায়। সিনেমা বানায় তারা আর লজ্জা পাই আমরা। এখানে মেধাবীরা যায়না।  আপনারা যারা ক্ষ্যাত বলেন বিশ্বাস করেন আপনার রুচির সাথে আমার পার্থক্য নাই। শুধুমাত্র আমার একটা অহেতুক আশার জন্য আপনি আমাকে ক্ষ্যাত বলার সুযোগ পাচ্ছেন।
খারাপ কে খারাপ বলতে আমার আপত্তি নেই, তাকে ভালো বলে মাথায় তোলার ইচ্ছাও আমার নেই। ফ্রেন্ডলিস্টের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের গায়ে লাগলে কিছু করার নেই।

আই ডোন্ট কেয়ার | আড়াই ঘন্টার অত্যাচার | মুভি রিভিউ

মুক্তির আগে থেকেই ববির অর্ধনগ্ন একটা পোস্টারের জন্য "আই ডোন্ট কেয়ার" সিনেমাটি আলোচনায় ছিল। ববির দাবী পরিচালক ফটোশপ করে এই পোস্টার বানিয়েছেন। সিনেমায় অবশ্য পোস্টারের দৃশ্যটি পাওয়া যায়নি। হলে গিয়েও পোস্টার দেখে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ নিয়ে ঢুকে গেলাম সিনেমা দেখতে। ভীড়ের ভিতর অনেক কষ্টে একটা টিকিট জোগাড় করলাম। এই প্রথম দেখলাম শুধু পরিচালক এবং সিনেমার নাম দিয়ে সিনেমা শুরু হল। অন্য কোনো কলাকুশলীর নাম নেই।  সিনেমার মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছে বাপ্পী, ববি, নিপুন, নূতন, প্রবীর মিত্র, মিশা সওদাগর।

শুরুতেই দেখা গেল বাপ্পীকে ফাঁসির রায় দেয়া হল। রায়ের পর পুলিশ অনেকগুলো "প্রাইভেট কার(!)" এবং একটি "ঘোড়া(!)" দিয়ে বাপ্পী কে নিয়ে যাচ্ছে। সম্ভবত পুলিশ রা এখন আপডেট হয়ে আসামী নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কালার ও মডেলের প্রাইভেট কার ব্যবহার শুরু করেছে। কিন্তু সামনে একটা ঘোড়ায় পুলিশ কে দেখে মনে হলো অলিম্পিকের কোনো একটা রেস হচ্ছে যেখানে প্রতিযোগী ঘোড়া ও প্রাইভেট কার। কিন্তু যেই রাস্তা আর যেই এলাকা দিয়ে বাপ্পী কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল প্রত্যেক সিনেমায় সেই একই জায়গা দেখে চোখ পঁচে যাচ্ছে। কুঁয়োর ব্যাঙও তো এসব দেখে লজ্জা পাবে। এই পর্যায়ে বাপ্পী পুলিশ কে মেরে দৌড় শুরু করলো। তার পেছন থেকে প্রাইভেট কার গুলো হাওয়া হয়ে মোটর সাইকেলের আগমন ঘটলো। কিন্তু বাপ্পীকে ধরতে মোটর সাইকেল গুলোর বেশ বেগ পেতে হলো। এইবার দেখা গেল বাপ্পী যেই উড়ে উড়ে মোটর সাইকেল চালক কে লাথি মারছে তার ঠিক আগেই চলন্ত মোটর সাইকেল গুলো একেবারে স্থির হয়ে আছে। সবশেষে বাপ্পী ঘোড়ার সামনে দিয়ে অদৃশ্য তারে ঝুলে ঝুলে গিয়ে ঘোড় সওয়ার পুলিশ কে লাথি মারলো, লাথি খেয়ে পুলিশ কই গেল জানিনা কিন্তু বাপ্পী একেবারে ঘোড়ার ড্রাইভিং সিটে বসে গেল। কি তেলেসমাতি কারবার! ঘোড়ার সামনে দিয়ে উড়ে এসে উড়ন্ত অবস্থাতেই দিক পরিবর্তন করে ঘোড়ার উপর বসলে সুপার ম্যানও মাইন্ড খাবে।

বাপ্পী এর পর আলীরাজের কাছে তার কাহিনী বর্ণনা শুরু করলো। ফ্ল্যাশব্যাকে বাপ্পীর এন্ট্রি দেখে প্রথমে ভাবছিলাম সে কোনো মাফিয়া টাফিয়া হবে। মনে হয় ডিরেক্টর সাব এক শটের জন্য ভুলেই গিয়েছিল বাপ্পী মাফিয়া কিংবা ডন না। পরে যখন তার মনে পড়লো বাপ্পী তো ডন কিংবা মাফিয়া না। তাই এবার নিপুন কে আনলেন তার বোন হিসেবে। নিপুন দেখি আরেক চীজ। সবসময় এ্যাপ্রোন পরা তিন চারটা ডাক্তার আর দুইটা নার্স নিয়া ঘোরে। বুঝলাম না চামচা বা সখির বদলে সে একেবারে হাসপাতালে ডাক্তার নার্স নিয়া ঘোরে ক্যান? বাপ্পীর কথা শুনে মনে হল তাদের বাবা নিপুনের জন্য ডাক্তার রেখে দিয়েছেন। যেন ডাক্তার রা বাজারের খেলনা জিনিস তাই কিনে এনে রেখেছেন।

  আমাদের নায়িকা ববি গাড়ি নিয়ে গ্রামের ভিতর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। সেই কারনে বাপ্পী নায়িকা কে ধরে এনে বিচার ডেকেছে। বিচারে  নায়িকার মা নূতন কে পরিচালক ভুল করে নায়িকার পোশাক পরিয়ে দিয়েছে সম্ভবত। দর্শক নায়িকাকে  দেখে না চিল্লায়ে নায়িকার মা কে দেখে চিল্লায়। বিচার শেষে নায়িকা আর নায়িকার মা মাঠের ভিতর পানির মাঝে আছাড় খাওয়া শুরু করলো আর তখনই শুরু হল "জলের কুমীর ভাইসা গেছে পাতে"
এই ব্যাটারে পানিতে চুবাইয়া শেখানো উচিত জল আর পানি এক জিনিস। এই গানের অত্যাচার শেষ হওয়ার ২০সেকেন্ডের মাঝে শুরু হল  "রুপের মাইয়া একবার চাইয়া গো ভাব লাগাইয়া পরান কাড়িলো"
কোনোমতে এই গানের অত্যাচারও সহ্য করলাম।

দ্বিতীয় গান শেষ হওয়ার পর ববিরে দেখলাম গ্রামের খোলা পুকুরে গোসল করছে (থাক ড্রেসের কথা আর কইলাম না) আর শয়ে শয়ে চেংড়া পুলাপাইন তাদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফোন নিয়ে সেইটা ভিডিও করছে। একটা মেয়ে গ্রামের খোলা পুকুরে এই ড্রেস পরে গোসল করতে পারে তা নিশ্চিত ট্রেডমার্ক গাঁজাখোরের মাথা থেকে বেরিয়েছে। আর সেই গোসল করার দৃশ্য শয়ে শয়ে ছেলে ভিডিও করছে, নায়িকা সেদিকে তাকিয়েও দেখছে না এইটা নিশ্চিত গাঁজাখোর এলিয়েনের মাথা থেকে বেরিয়েছে। কারন মানুষের বুদ্ধির লেভেল এত নিচে নামা সম্ভব না। এতক্ষন সব ঠিকই ছিল, যেই বাপ্পী পুকুর পাড়ে এলো তখনই ববি তার ইজ্জত নিয়ে সতর্ক হলো।
শত শত পোলাপাইন ভিডিও করছে তাতে কোনো চ্যাতব্যাত নাই আর নায়কের আগমনেই ইজ্জত কা সাওয়াল। ববি বাপ্পী কে শিক্ষা দেয়ার জন্য মাজারে গেল ফকির বাবার কাছে। ফকির বাবার মাজারে আবার গান "তোমরা একতারা বাইজাইও না"। পরপর তিনটা গানে মাথা হ্যাং হইয়া গেল।
কিন্তু ববিরে দেইখা মনে হইলো মাজারে সে কামে আসেনাই, ড্যান্স দিতে আইছে। ঘুইরা ফিরা বাবার কাছে যায় আবার ড্যান্স দেয়। সে এক এপিক দৃশ্য। বাবার কাছ থেকে কি না কি ওষুধ এনে সেটা দিয়ে পায়েস বানিয়ে বাপ্পীকে খাওয়াতে গেল। উল্টা নিজেই খেয়ে কান দিয়ে ধোয়া বের করতে লাগলো। কি বিস্ফোরক পায়েস রে বাবা! এইবার শুরু হল গান। বারো মিনিটের ব্যবধানে চারটা গান। ডিরেক্টরের নিশ্চিত ডায়ারিয়ার মতো গানরিয়া হয়েছে।

একটু পর দেখা গেল নিপুন চুল আচড়াতে আচড়াতে চিরুনি তে চুল লাগিয়ে ফেলেছে আর তাই দেখে চিক্কুর দিয়ে কাঁদছে। বাপ্পী জিজ্ঞাসা করলো, "কি হয়েছে চাঁদ কি হয়েছে?" নিপুন বলল, "চুউউল" :-P
নিপুনের এই চুল পড়ার জন্য বাপ্পী সেই ব্যাটাকে ধরলো যে ব্যাটা তারে তিব্বত কদুর তেল দিয়েছিল। চামের উপ্রে ডিরেক্টর সাব তিব্বত কদূর তেল রে পঁচায়া দিলো। বাপ্পী সেই দোকানদারের মাথা ন্যাড়া করে দিল। আর তখন কই থিকা একটা লবণের বস্তা হাজির হইয়া গান গাওয়া শুরু করলো। এতটুকু দেখে নিজের চুলই সেই কদূর তেল মেখে ছিড়তে ইচ্ছা করছিল। আঠারো মিনিটের মাঝে ৫টা গান দিয়া দিছে। তাও একেকটা গান শুনলে প্রেশার বাইড়া যায়। শেষ পর্যন্ত আধাঘন্টার ভিতর ৬টা গান দেখিয়ে তার ডায়রিয়া সারলো।
এই সিনেমায় চিকন মতো একটা কমেডিয়ান রে দেখলাম। ও নায়কের লগেও থাকে নায়িকার লগেও থাকে। এই ব্যাটারে দুধভাত বানায়া থুইছে দেখি। নাহয় পরিচালক ভুলে গিয়েছিল এই চিকনা কার নায়ক না নায়িকার চামচা।
এই সিনেমায় যেসব চ্যালা প্যালা ব্যবহার করা হয়েছে সেইগুলা একেবারে ইউনিফর্ম পরা। একবার মনে হল তারা সবাই আর্মড পুলিশের ড্রেস ধার করে পরছে আরেকবার তারা RAB এর পোশাক ভাড়া করে পরছে। প্রত্যেকটা ইউনিফর্মই কোনো না কোনো বাহিনীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ন।

এদিকে নিপুন ম্যাডামের নাম তো আসমানের চাঁদ। তিনি রাস্তা দিয়ে ডাক্তার আর নার্সের দল নিয়ে লংমার্চ করে। লংমার্চ করতে করতে ঘোড়সওয়ার ভিলেনরা চাঁদ কে আক্রমন করে আর তখনই আকাশ থেকে আকাশ নেমে চাঁদ কে রক্ষা করে। নিউটন আইনস্টাইনের তত্ত্বের চেয়েও বাংলা সিনেমার এ তত্ত্ব শক্তিশালী। নায়িকা বিপদে পড়লে নায়ক আসমান থেকে পড়বে।

এক পর্যায়ে দেখলাম পুলিশের সাথে মারামারি করছে বাপ্পী। এতে নিজেদের গুলিতেই চারটা পুলিশ মারা গেল। আর শেষে মিশা এসে বাপ্পী কে খুনি বানানোর জন্য নিজেই পুলিশ কে গুলি করে মারলো। চিরকাল সিনেমায় দেখে এলাম পিস্তলে খুনির ফিঙ্গারপ্রিন্ট থাকে আর এইখানে ফাঁসি হল বাপ্পীর। এই ফাঁসির আসামি কে আলিরাজ প্যারোলে মুক্ত করে মি. টয়োটা বানালো। এই টয়োটা ববিদের বাড়িতে ঢুকলো। কিন্তু সেখানে ঢুকে ববির সাথে রোমান্স করার চেয়ে ববির মায়ের সাথে বেশি রোমান্স করলো। পরিচালক এবারও ববির চেয়ে ছোট পোশাক পরাচ্ছেন তার মা কে। আমি এইবার একদম সিওর সব পোশাক নায়িকার জন্য বানানো হয়েছিল এবং সেটাই নায়িকার মাকে পরানো হচ্ছে।

কিছু জগাখিচুড়ি মার্কা পাগলামীর পর ববি জানতে পারলো টয়োটাই সূর্য(বাপ্পীর নাম ছিল সূর্য)। এই সিনেমায় ববির ভূমিকা কি সেইটাই বুঝলাম না। হঠাত হঠাত পর্দায় উপস্থিত হয় কিন্তু কোনো কাজ নাই। পুরাই আকাইম্মা। এতক্ষন সে টয়োটার সাথে রোমান্স করছিল, যখন জানলো সে সূর্য তখন সে সূর্যের প্রেমে পড়লো। কেন পড়লো বুঝা গেল না। ববি তার মা কে বলল টয়োটাই সূর্য। বুঝলাম না টয়োটার যদি কোনো কামই না থাকে তবে ক্যান টয়োটা চরিত্রের আগমন হলো? বাংলা সিনেমার ফর্মুলা অনুযায়ী শেষ দৃশ্যে ভিলেন বনাম নায়ক মারামারি হলো এবং ভিলেন মরে সাফ হয়ে গেল। যাক কোমোমতে একটা সিনেমার অত্যাচার হজম করলাম।

সিনেমার কালার ক্যারেকশনের ঠিক নাই। পুরা সিনেমাই অন্ধকার্। আবার একশন দৃশ্যে অদৃশ্য তার দ্বারা হাস্যকর উড়াউড়ির চেষ্টা করা হয়েছে। এই উড়াউড়ি ফিজিক্সের সব সূত্র কে হার মানিয়েছে। আবার উড়ন্ত ব্যক্তিদের শার্টের পেছনের কলার পিরামিডের মতো উচু হয়ে থাকে। এই সিনেমার পরিচালক গাঁঞ্জাখোরই নয়, অসুস্থ মস্তিষ্কের। সে ববির ছবিকে ফটোশপ করে অর্ধনগ্ন পোস্টার বানিয়েছে। এইসব পরিচালক যতদিন থাকবে ততদিন আমাদের সিনেমা মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না।

শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০১৪

বাংলা সিনেমায় ঈদের শপিং | পর্ব-৩ (রম্য)

বাংলা সিনেমায় ঈদের শপিং নিয়ে ডায়লগ গুলোর তৃতীয় পর্ব দেখে নেই চলুন

২৯। ম্যাডাম এই হিল জোড়া
এত সস্তা না যে আপনি দুই টাকা দিয়ে কিনে নিবেন।

৩০। তোমার সন্তানেরা  চারদিক থেকে তোমাকে ঘিরে ফেলেছে। একটুও পালাবার চেষ্টা করবে না। চলো শপিং এ চলো।

৩১। (মাতবর সাব নায়িকার গায়ে ময়লা কাপড় দেখে) আহহারে এত্ত সুন্দর মাইয়া এইগুলা কি পরছে!!.ইসশিরে ছিড়াও গেছে দেখতাছি। তোমারে এইগুলা পরতে কইছে ক্যাডা? তুমি খালি আমার সেবা করবা। আমি সুন্দর সুন্দর জামা কিন্যা দিমু।

৩২। ডাক্তার: ধন্যবাদ আমাকে না, ঐ ভদ্রলোককে দিন। উনি সময়মতো পাখি ড্রেস না আনলে রোগিকে বাঁচানো সম্ভব হতোনা।

৩৩। শপিং ব্যাগ নিজের হাতে তুলে নিবেন না। শপিং ব্যাগ টানার জন্য আপনার স্বামী আছেন।

৩৪। শপিং নিয়ে খেলা করিসনা, একদিন এই শপিং করতে গিয়েই  মরবি।

৩৫। কংগ্রেচুলেশন। শপিং সাকসেসফুল।

৩৬। চৌধুরী সাহেব, টাকা দিয়ে ঈদের পোশাক  বিবেচনা করা যায় না।

৩৭। তোর জন্য আমার ১২ টা শাড়ি
জলে গেছে, ফিরিয়ে দে আমার ১২
টা শাড়ি।

৩৯। তুমি আমার পাখি নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছো।

৪০। না মা না, এমন কথা বলোনা।
আমি ঐ
মাস্তানের সাথে শপিং এ যেতে  পারবো না।
আমার পেটে যে রাজ এর সন্তান।

৪১। আজ হয় তুই শপিং করবি নয়তো আমি।

৪২। সানডে-মানডে শপিং ক্লোস কইরা দিমু।

৪৩। তোমাকে আমি ত্যাজ্য পুত্র
ঘোষণা করলাম। আজকের পর থেকে কখনো ঈদের শপিং এর জন্য এ বাড়িতে আসবে না।

বাংলা সিনেমায় ঈদের শপিং | পর্ব-২ (রম্য)

শপিং নিয়ে যদি বাংলা সিনেমায় ডায়লগ থাকতো তবে তা কএমন হতো? দেখে নেই এর ২য় পর্ব

১৫। ডাক্তার সাহেব আমি ঈদে কেনা সব পোশাক পরতে পারছি।
আমি আমি সব পরতে পারছি । আপনি টিকটিকির লেজের মত আমার পা গজিয়ে দিয়েছেন।

১৬। আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো, সময় মতো আপনি এই পোশাক   টি না আনলে আমার ঈদ টাই মাটি হয়ে যেত সাথে প্রেমও।

১৭। তোর সাহসতো কমনা, বামন
হয়ে তুই লাখ টাকার পোশকের দিকে হাত বাড়াস। জানিস তোর ঐ হাত
আমি কেটে ফেলতে পারি?

১৮। কে আছিস। আমার চাবুক নিয়ে আয়।। চাপকে আমি ওর ঈদের পাঞ্জাবী ছিড়ে ফেলবো।

১৯। বলতে পারেন কি দোষ ছিল আমার বাবার? কেন তার নতুন পাঞ্জাবী ছিড়ে ফেলা হয়েছিল? কি দোষ ছিল আমার নিস্পাপ ছোট্ট বোনটির? কেন তাকে একটি পাখির জন্য আত্মহত্যা করতে হয়েছিল?  বলতে পারেন আমার মায়ের গায়ে লাখ টাকার শাড়ির বদলে ৫০০ টাকার কাপড় কেন? কেন ঈদে আমরা আগের মত শপিং করতে পারিনা?

২০। ঐ চৌধুরীই আমাদের শপিং এর টাকা আত্মসাৎ করেছে। যাহ প্রতিশোধ নে। এইটা তোর মায়ের আদেশ।

২১। (মেয়েকে বিদায় দেয়ার সময় বাবা)
মনে রাখবি মেয়েরা জীবনে দুইভাবে শপিং করে। একবার মেয়ে
হয়ে বাপের ঘাড়ে চেপে, আর একবার স্ত্রী  হয়ে স্বামীর ঘাড়ে চেপে।

২২। (নায়ক কম দামি পোশাক নিয়েবাড়ি ফিরলে)
তুমি আবারো এসব ছাই-পাশ নিয়ে এসেছো? রোজ রোজ রাত
করে এসব এনে  বউয়ের
সাথে বিটলামি করতে তোমার
লজ্জা করেনা?

২৩। (বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই ঈদ এলে)
নায়িকা: এই শুনছো, আজ অফিস
থেকে ফেরার সময় আমার জন্য আচারের ফ্লেভারের একটা শাড়ি
নিয়ে আসবে কিন্তু।

২৪। রাজা ভাইয়া, লস্করের লোকজন
প্রিয়া ম্যাডামের ঈদের জামাকাপড় সব নিয়ে গেছে। 
(নায়ক) লস্করররর……

২৫। (নায়িকা বউ হয়ে আসার পর  প্রথম ঈদে)
মা আজ থেকে আপনার ছুটি, শপিং এর সমস্ত দায়িত্ব এখন থেকে আমার।

২৬। রাজু ভাই  জলদি হাসপাতালে একটা পাখি ড্রেস নিয়া চলেন। জ্ঞান ফেরার পর থিক্কা প্রিয়া ম্যাডান  খালি পাখি পাখি কইয়া ডাকতাছে।

২৭। ছিহ্। কি করে ভাবলি যে তোর
মতো একটা ইতর, লম্পটের সাথে আমি শপিং এ যাবো?

২৮। (মেয়ের শশুর বাড়িতে মেয়ের
দুরবস্থা দেখে বাড়িতে এসে) শাহানা, তোমার মেয়ে খুব ভালো আছে। খুব সুখে আছে। ওরা তোমার মেয়ের জন্য পুরো মার্কেট তুলে এনেছে।  কত্ত আদর যত্ন করলো। আমাকেতো আস্ত একটা শপিং মল দিয়ে দিচ্ছিল।

বাংলা সিনেমায় ঈদের শপিং | পর্ব-১ (রম্য)

বাংলা সিনেমায় যদি ঈদের শপিং নিয়ে ডায়লগ গুলো থাকতো তবে সেগুলো কেমন হত চলুন দেখে নেই।

১। নায়ক: চৌধুরী সাহেব টাকা দিয়ে আপনি সব কিনতে পারলেও আমার কাছ থেকে পাখি ড্রেস কিনতে পারবেন না।
চৌধুরী সাহেব: দিয়ে দাও বাবা। মেয়ে খুব জেদ ধরেছে।

২। নায়ক: তোমার এত খরচ করা দেখে বিল গেটসও লজ্জা পাচ্ছে।। নায়িকা: যাহ্!!

৩। নায়ক: মা আমার সব মনে পরে গেছে। আমার স্মৃতি ফিরে এসেছে মা। আমি সখিনার জন্য কেনা পোশাক চিনতে পারছি।
মা: হ্যা বাবা হ্যা। পোশাকের দাম শুনে তুই স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিলি। তোর স্মৃতি ফিরে এসেছে বাবা।

৪। নায়িকা: বাঁচাও। বাঁচাও।। ছেড়ে দে দোকানদার। আমি এ পোশাক কিনবো না।
দোকানদার: নিয়ে যান আপা। একেবারে ফার্স্ট ক্লাস।

৫। নায়ক: মা মা, আমি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছি।
মা: আজ তোর বাবা বেচে থাকলে এখনই তোকে ঈদের শপিং এ নিয়ে যেত (কান্না)

৬। শয়তান তুই আমার দেহ পাবি তবু পাখি পাবিনা।

৭। এই ছাড়োনা পাখিটা, কেউ দেখে ফেলবে তো।

৮। চৌধুরী সাহেব আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু আমরা মানুষ, আমারাও পাখি ড্রেস কিনতে পারি।
৯। মেমসাহেব আপনারা বড়লোক,
আমরা গরিব। ঈদের পোশাক আপনাদের কাছে খেলনা, ঈদ শেষে ছুড়ে ফেলে দেন।

১০। তোর এত্ত বড় স্পর্ধা, সামান্য
ট্যাক্সি ড্রাইভার হয়ে আমার মেয়ের
সাথে ঈদের শপিং করতে যাস!

১১। এই নির্জন বনে তোকে কেউ
শপিং এ নিয়ে যাবেনা সুন্দরী।

১২। তুমি এইখানে? আর ওইদিকে তোমার মাইয়া বসুন্ধরায়  গফুরের লগে শপাং শুপিং করতাছে।

১৩। এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে লাভ নেই। এমন ভাবে কাজ করবো যাতে শপিংও হবে মেয়েও পটবে।

১৪। মানিক এই তোর হারিয়ে যাওয়া ছোট ভাই রতনের ঈদের পাঞ্জাবী।

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৪

অনন্ত জলিল একটা চায়না মাল্টিমিডিয়া ফোন (রম্য)

অনন্ত জলিল একটা চায়না মাল্টিমিডিয়া ফোন। চায়না মাল্টিমিডিয়া ফোনে যেমন ক্যামেরা, টিভি, ফ্রিজ, হিটার, ফ্লাশলাইট, গ্যাসলাইট, এসি ইত্যাদী থাকে   তেমনি অনন্ত জলিলও একাধারে নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পপতি, ঔপন্যাসিক, ড্যান্সার, ফাইটার, লাইটার, ম্যানসিস্টার একেবারে কমপ্লিট প্যাকেজ। তবে চায়না ফোনের মাঝে মাঝেই পেটে ব্যথা, আলসার, ক্যান্সার দেখা দেয়। আবার দেখা যায় ক্যামেরা দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের মতও ছবি হয়না, ফাংশন গুলাও উল্টাপাল্টা কাজ করে। ঠিক তেমনি অনন্তের সিনেমাতেও হার্ট বের করে আনা, গানের ভিতর চিকেন তান্দুরী, আবার থ্রিডি এনিমেশনের নামে অত্যাচার টাইপ কিছু এপিক কন্টেন্ট থাকে।

বিখ্যাত ব্যক্তিদের ঈদ ভাবনা (রম্য)

ঈদের শপিং নিয়ে শুধু আমাদেরই ভাবনা নেই। বিখ্যাত ব্যক্তিরাও ঈদের শপিং নিয়ে ভেবে গেছেন অনেক কিছু। আসুন দেখে নেই কে কি ভেবেছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর:-

চারিদিকে গিজগিজ মানুষের বরষা।
শপিং মলে ঘুরে বেড়াই, নাহি ভরসা।
                    রাশি রাশি ভারা ভারা
                    শপিং করা হল সারা,
                     গিন্নি কে দেই তাড়া
                        চলো এবার বাসা
কিনিতে কিনিতে পোশাক ফুরালো টাকা পয়সা।

এতগুলো শপিং ব্যাগ, আমি একেলা।
দুই হাত জুড়ে তারা করিছে খেলা।
                    গিন্নি কে দেখি একা,
              মুখ খানি মেকআপ মাখা
                  হেটে চলে আঁকাবাকা
                            সাড়াটি বেলা,
শপিং ব্যাগে ডুবে আমি, হাটি একেলা।

কাজী নজরুল ইসলাম:-

সাম্যের গান গাই -
আমার চক্ষে পাখি-পাঞ্জাবী কোনো ভেদাভেদ নাই।
ঈদে যা-কিছু মহান্ পোশাক চির-মনোহর
অর্ধেক তার কিনিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
ঈদে যা-কিছু এলো নতুন ডিজাইন জর্দ্দা পান সুপারি
অর্ধেক তার পরিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
বিদেশী পোশাক বলিয়া কে তোমার পাখিকে করে হেয়-জ্ঞান?
তারে বল, আদি-পোশাক আর নহে,
এখন সব মডার্ন।

সুফিয়া কামাল:-

"হে কবি, নীরব কেন ঈদ যে এসেছে ধরনীতে,
শপিং মলে যাইবে না নাকি পাখি ড্রেস কিনিতে?"
কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি-
"দোকানের দুয়ার গেছে কি খুলি?
পাখির দাম কমিয়াছে কি? এসেছে কি নতুন ডিজাইন?
রমনীরা কি পাখির টানে হয়েছে অধীর আকুল?"

ফররুখ আহমদ:-

শপিং শেষ হতে কত দেরী পাঞ্জেরী?
এখনো তোমার কত সময় যাবে লেগে?
পাখি, লুঙ্গী ড্যান্স ওঠেনি কি শপিং ব্যাগে?
তুমি হাটছো দুলে দুলে, আমি ব্যাগ টানি আয়েশ ভুলে;
ঘেমে নেয়ে একাকার, শূণ্য মানিব্যাগ নাড়ি।

শামসুর রহমান:-

'এই যে আসুন, ঘুরে যান আমাদের দোকান।
বউ ছেলেমেয়ের ঈদের পোশাক কিনে নিয়ে যান
দেখিয়ে পাখি ড্রেস টিকে-
বললাম পানসেমুখো ক্রেতাকে
"এ পোশাক এনেছিলাম অনেক, এক পিসই আছে এখন,
হুহু করে বিক্রী হয়ে গেছে সবগুলো
আপনার জন্য এ এক পিসই পড়ে ছিল"

মুনীর চৌধুরী:-

মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়। বেঁচে থাকলে শপিং এ যায়। কারনে অকারনে শপিং এ যায়। সকালে বিকালে শপিং এ যায়।

লালন শাহ:-

শপিং মলে অচিন পাখি কেমনে আসে যায়,
একবার ধরতে পারলে সোহাগ করি
দিতাম তারে গায়।
কেমনে আসে যায়।

নিউটন:-

স্বামীদের মানিব্যাগ ফাকা হওয়ার হার তার উপর প্রযুক্ত শপিং ব্যাগের সমানুপাতিক এবং স্ত্রী যেদিকে রওনা দেয় স্বামীদের গন্তব্যস্থলও সেদিকে হয়।

সোমবার, ২১ জুলাই, ২০১৪

ইহা একটি ফেসবুক সম্মত বাস্তব কাহিনী

বালিকা বলিল, "আমি যাচ্ছি, আমার কিডনীর অপারেশন আছে।"
আমি তো অস্থির হয়ে গেলাম চিন্তায়। একটু পর জানতে পারলাম তাকে দুটো কিডনী লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। আরিব্বা! এতো দেখছি খেলনা মোবাইলে ব্যাটারী লাগানোর মত দ্রুত হয়ে গেলো। আমি মেডিক্যাল সায়েন্সের উন্নতিতে চমকিত হইলাম। কিন্তু বিধিবাম। একটুপর জানিতে পারিলাম কিডনীদ্বয় কাজ করছে না। এখন কি হবে? ডাক্তার সাথে সাথে বালিকার পিতা এবং স্বামীর কিডনী খুলে বালিকাকে লাগিয়ে দিলো। বালিকা এখন দুই কিডনীর অধিকারী। তার পিতা এবং স্বামীর এই মহান কাজ সবার জন্য নিদর্শন হয়ে থাকলো। কারন তারা সাথে সাথেই কিডনী খুলে দিয়ে দিয়েছেন। এবার বালিকা কোমায় চলে গেলো। আমি তো অস্থির হইয়া গেলাম। যার মারফত বালিকার খোজ জানতেছিলাম সে প্রতিবারই বালিকার কোনো না কোনো প্রশংসা করছিল। আমার হৃদয়টা ভরে গেলো। অবশ্য তাকে আমার অনুভূতিহীন রোবট মনে হয়েছে, কোমায় থাকা রোগীর জন্য তার আবেগ যথেষ্ঠ ছিল না। একটু পর বালিকা কোমা থেকে বেরিয়ে এলো। আরেব্বাহ! মেডিক্যাল সায়েন্সে কোমা দেখি এখন টয়লেটে যাওয়ার মত! আমি বালিকার উপর যতটা না ফিদা ছিলাম, তার চেয়ে বেশি ফিদা হলাম মেডিক্যাল সায়েন্সের উপর। একটু পর জানিতে পারিলাম বালিকা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছে। ওয়াও! অসুস্থ হওয়া এখন দেখি দু:স্বপ্নের মত। আমি তো আনন্দে আটখানা হয়ে গেলাম। আমার এই গুরুচন্ডালী লেখার নেপথ্যে রহিয়াছে এই বাধ ভাঙ্গা আনন্দ।
যাই, বালিকার নতুন লেখাগুলো শেয়ার দিতে হবে।  অবশ্যই ক্যাপশন থাকবে, "মৃত্যুমুখ থেকে লড়াই করে ফিরলো লৌহদন্ড বালিকা"

শুধু পর্দা দিয়েই কি ধর্ষণ ঠেকানো সম্ভব?


ফিলিস্তিনের নারীরা পর্দায় থাকে এবং তারাও ইসরায়েলীদের দ্বারা  রেপ হয়ে। বিষয়টা হল ধর্ষনের ক্ষেত্রে পুরুষদের দোষ দেয়া মানে নারীদের পক্ষ নেয়া না। কারন ওই ধর্ষক ধর্ষনের সময় বোরকাওয়ালী কেও ছাড় দেবে না, সালোয়ার কামিজ পরিহিতা কেও ছাড় দেবেনা। কোনো ক্ষেত্রেই কোনো মেয়ে বলবে না "এসো আমাকে ধর্ষন করো"। মানুষ ব্যতীত সকল পশুদের আচরনই এক, যেমন এক কুকুরের সাথে আরেক কুকুরের প্রায় সব আচরনে মিল থাকে। তেমনি পৃথিবীর সকল ধর্ষকদের আচরনে মিল থাকে। এদেরকে পুরুষের কাতারে রাখলে পুরুষ জাতির অপমান। তাই এদের পশুর কাতারে রাখাই শ্রেয়।
আর হ্যা এরপরেও অনেকে বলবে মেয়েরা পর্দা করেনা বলে ধর্ষিত হয়। তাদের কাছে ধর্ষন টা অপরাধ না। পর্দা না করাই অপরাধ। প্রমান চায় কোন পর্দা করা মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে? তাদের জন্য ফিলিস্তিনের উদাহরনই যথেষ্ঠ। আর একাত্তরে কিন্তু খুল্লাম খুল্লা  ড্রেস পরিহিতা রা ধর্ষিত হয়নি

বুধবার, ৯ জুলাই, ২০১৪

বন্ধুতে বন্ধুতে চিমটি চলে, খামচে খাবলে রক্ত তুলে দেয়া চলেনা

প্রথমত আমি ফুটবল একদম পছন্দ করিনা। বাংলাদেশে যেহেতু ব্রাজিল আর্জেন্টিনা ফ্যান বেশি তাই চাচ্ছিলাম জার্মানী জিতুক। কিন্তু এত বড় ব্যবধানে জেতার পর ব্রাজিলীয়ান প্লেয়ার এবং দর্শক দের মানসিক অবস্থার কথা ভেবে আমার নিজেরই খুব খারাপ লেগেছে। লুইজ এর কান্নাটা হৃদয় বিদারক। ঠিক এই মূহুর্তে আমার স্বদেশীদের মনে সাইক্লোন বয়ে যাচ্ছে। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে তাদের ভিতর টা। কেউ কখনোই প্রিয় দলের এমন পরাজয় কল্পনাও করতে পারে না। ভেঙ্গে পড়ার এটাই মূল কারন। আরেকটা বিষয় তার ভিতর কাজ করে, "আমার বন্ধুদের(ব্রাজিল কে ট্রল করে যারা) তাদের সামনে কোন মুখ নিয়ে যাবো ?" এই হীনমন্যতা তার মাঝে কাজ করে। এমন অবস্থায় আপনি আপনার বন্ধুকে ট্রল করলে কি হবে জানেন? সে আপনার কাছ থেকেও বাচতে চাইবে। সে আর চাপ নিতে পারবে না। এতে বহুদিনের সম্পর্কে ধরবে ফাটল। অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে খেলার জন্য বন্ধুকে দূরে ঠেলে দেয়া ঠিক নয়। কিন্তু ভাই মানুষের আবেগীয় বিষয়গুলোর মধ্যে খেলা উপরের দিকে। এমন কি খেলা মানুষের আবেগ কে যেভাবে নাড়া দিতে পারে, অন্যকিছু সেভাবে পারে না। এই কারনেই বন্ধুতে বন্ধুতে সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী ছাড়াছাড়ি হয়। বন্ধু বন্ধুকে চিমটি দিতে পারে, কিন্তু আপনার ট্রল করার স্টাইল টাই এমন যেন খামচে কিংবা খাবলে রক্ত বার করে দেবেন মাংস তুলে নেবেন। আপনি চিমটি তেই সীমাবদ্ধ থাকুন, রক্ত বের করে আনলে বা মাংস তুলে আনলে সে কিভাবে আপনার সাথে বন্ধুত্ব রাখবে? যেখানে এই রক্ত মাংস টা শরীরের না, হৃদয়ের্। সবকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করা টা আমাদের অভ্যাস। আজ যাদের আপনারা ট্রল করছেন কাল যদি আর্জেন্টিনার একই পরিস্থিতি হয় তখন এই এরাই দ্বিগুণ বিদ্বেষে আপনাদের খোচাবে সেটা মানেন? কি দরকার এসবের?
খেলার মাঝে দুদল পরস্পরের বিপক্ষে খেলে, কিন্তু খেলা শেষেই তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। আপনারা সমর্থক রাও এমন হয়ে যান না! যত বিরোধীতা খেলার সময়টুকু তে করেন, খেলা শেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। তাহলে প্লেয়ার সমর্থক একই কাতারে উঠে যাবেন।

আর সবসময় মনে রাখবেন, বন্ধুতে বন্ধুতে চিমটি চলে, খামচে খাবলে রক্ত মাংস বের করা চলে না।

 
Tricks and Tips