অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার্থীদদের জন্য সুপার টিপস

যারা মেডিকেল এডমিশন টেস্ট দিবা তাদের কে একেবারেই টিপস টুপস (টিপাটিপি বা কপালের টিপ না) না দিলে অপরাধ হবে। কেলাইয়েন না আমার টিপস একেবারে ইস্পেশাল। যাউক গা কাজের কথায় আসি।

প্রথমেই বলে রাখি যারা পড়তে পড়তে ফোনের কী প্যাডের মতো বইয়ের পৃষ্ঠা নাম্বার খাইয়ালাইছো তারা এই পোস্ট দেখলেও কামে দিবো না। যারা অগার ঠ্যাং বগার ঠ্যাং মার্কা প্রিপারেশন নিছো শুধুমাত্র তাদের জন্যই এ টিপস। 

তোমরা ভাবতেছো যে আইজ রাইতের মধ্যেই সব বইয়ের এই মাথা ওইমাথা চৌমাথা কইরালাইবা। সেই লক্ষ্যে মজিলা ফায়ারফক্সের দুই তিনটা ট্যাব চালুর মতো ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি বইয়ের ট্যাব খুইলা বইসা আছো। আরে ব্যাটা একটু পরেই তোর মাথা ক্রাশ করবো, চোখ শাটডাউন দিবো। পরে সকালে বালতি বালতি পানি ঢাইলা তোমারে পরীক্ষা দিতে পাঠাইতে হইবো। তাই যা ট্যাব টুব খুলছো সব ক্লোজ কইরা ঘুমানোর ট্রাই করো। ঘুমের ভিত্রে একটা কিউট পোলা/মাইয়ারে পাশে নিয়া স্বপ্ন দেখো। আরে গাধা বিছানায় না স্বপ্নে দেখো এক্সাম হলে তোমার পাশে একটা কিউট মাইয়া/পোলার সিট।

সকালে ঘুম ভাঙার পর (অবশ্য জল থেরাপি না খাইলে সকালে ঘুম ভাঙার কথা না) মনেই হবে না তোমার এক্সাম আছে। সারারাত তোমার ভিত্রে এন্টিটেনশন প্রোগ্রাম কাজ করছে মিয়া। যাউক গা আম্মুর দাব্রানি খাইয়া শেষমেশ এক্সাম দিতে যাওয়াই লাগবে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়া এমন ভাব ধরবা যেন মেডিকেলে তোমার চান্স হইয়াই গেছে জাস্ট ফর্মালিটির জন্য এক্সাম দিতে আইছো। তোমার আশেপাশে যাদের সিট আছে চামের উপ্রে তাদের প্রিপারেশন কেমন জাইনা নিবা। এইবার মূল পরীক্ষার জন্য ৪টা টিপস দেই।

১। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর প্রত্যেকটা প্রশ্নের জন্য ক,খ,গ,ঘ যেই অপশন টা আগে চোখে পড়বে চোখ কান বুইজা সেইটা দাগাইবা। ভুলেও অন্য অপশন দাগানোর ট্রাই কইরোনা।

২। যদি ১নাম্বার পদ্ধতি পছন্দ না হয় তবে টস পদ্ধতি কাজে লাগাবা। তোমার কাছে এক টাকার কয়েন না থাকলে আশেপাশে কারো কাছ থেকে এক টাকা চাইবা। কয়েন না পাইলে চোখ বন্ধ কইরা দুই হাতের আঙ্গুল মেলানোর সিস্টেম এপ্লাই কইরা দেখতে পারো।

৩। যদি কোনোক্রমে মনে হয় তোমার পাশের কিংবা সামনের কিংবা পেছনের জনের প্রিপারেশনও অগার ঠ্যাং বগার ঠ্যাং মার্কা, তাইলে চোখ ট্যারা কইরা তার উত্তরপত্র হুবুহু কপি করবা। আরে সেট আলাদা, সে যেইগুলা ভুল মারতেছে তোমার উত্তরপত্রে আইসা তার অধিকাংশ সঠিক হয়ে যাবে। তোমার চান্স ঠেকায় কে?

৪। যারা একটু সাহসী তাদের জন্য এই সিস্টেম। হলে গিয়াই খেয়াল রাখবা আশেপাশে চশমা পড়া হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো নরম কোনো মাইয়া পোলা আছে কিনা। যদি থাকে তবে সাহস কইরা এই সিস্টেম এপ্লাই করবা। পরীক্ষা শুরুর পর কিছুক্ষন চুপচাপ হাওয়াই মিঠাইরে খেয়াল কইরা আলগোছে তোমার উত্তরপত্র তারে দিয়া দিবা। একটু হুমকি দিবা এড়িতেড়ি করলে হাওয়াই মিঠাই গাইলা দিমু। উত্তরপত্র তারে দিয়াই বলবা যেইগুলা সঠিক উত্তর সেইগুলা মার। সে হয়তো বলতে পারে "দেখো আমি কিন্তু স্যার কে বলে দেবো"
তুমি ঘাবড়াবে না। ঠান্ডা মাথায় বলবা, "স্যার কে বলে দিবা? আচ্ছা বলো, আমার এক্সাম বাতিল করলে তোমারে ফাসায়া তোমার এক্সামও বাতিল করুম। এইবার ভাবো কি করবা।" নিজের এক্সাম বাচানোর জন্য সে রাজি হয়ে যেতে পারে। তুমি খালি খেয়াল রাখবা সে তোমার উত্তরপত্র ঠিকমতো পূরণ করছে ককিননা। একেবারে লাস্টে তোমার উত্তরপত্র নিয়ে নিজে নিজে একটা মারবা। আরে নিজে নিজে যেইটা মারবা সেইটাই তোমার চান্সের ট্রাম্প কার্ড।

এইসব বুদ্ধি ফলো করলে তোমার চান্স আর ঠেকায় কে!? ধুর মিয়া মেডিকেলে চান্স হইয়া গেছে তোমার।

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সেদিন বৃষ্টি ছিল | ভৌতিক নয়, কৌতুক সিনেমা | মুভি রিভিউ

ইদানিং বাংলাদেশের কিছু কিছু  সিনেমার পোস্টারে "ডিজিটাল সিনেমা" "রেড ক্যামেরায় নির্মিত সিনেমা" "প্রথম অমুক সিনেমা" "ব্যয়বহুল সিনেমা" ইত্যাদী কথাবার্তা বিশেষ ভাবে লেখা থাকে। যখনই এসব লেখা চোখে পড়ে তখনই বুঝে নিতে হবে ঘাপলা আছে। হলে নতুন সিনেমা আসছে "সেদিন বৃষ্টি ছিল"। এটার পোস্টারে আবার বিশেষ ভাবে লেখা আছে "দেশের প্রথম ডিজিটাল ভূতের সিনেমা"। আমি ভাবছিলাম ডিজিটাল ভূত হয়তো কোনো প্রোডাকশন হাউজের নাম। পোস্টারের আরেকটা বিশেষত্ব হল বিশাল একটা কঙ্কাল টাইপ মাথা বসায়া ভৌতিক ব্যপার স্যপার ফুটায়া তোলা হইছে।

ভৌতিক ব্যপার স্যপার টা কেমন তা দেখতে চলে এলাম সিনেমা হলে। সিটে বসার পর পাশের জন বলল, "ভাই পোস্টারের ভূত দেইখাই সিনেমা দেখতে চইলা আইছি"। তারে কইলাম, "ভূত তো যে সে দেখতে পারে না, আপনার চোখে নাও পড়তে পারে" ওমনি "ক্য্য্য্য্য্য্যা" করে একটা সাউন্ড হওয়ায় পাশের জন নেচে উঠলো। আহ সাউন্ডেই বুঝা গেল আইজ সেই লেভেলের ভৌতিক সিনেমা উপভোগ করতে যাইতেছি। সিনেমার দুই তিন মিনিটের মাথায় শুরু হইলো মাইর পিট। বহুদিন পর বাংলা সিনেমার মাইর পিটে ঢোল তবলার বাড়ি শুনলাম। সিনেমা ডিজিটাল হইলেও অতীত ভুলেনাই।

সিনেমার প্রযোজক, গল্পকার এবং নায়িকা হওয়ার সুবাদে রত্নার কিঞ্চিৎ মেদ যুক্ত শরীর দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারন দর্শক জানে তারা ভূতের সিনেমা দেখতে এসেছে ;-) । ভূতের সিনেমায় মুখ নড়বে সাউন্ড হবেনা আবার সাউন্ড হবে মুখ নড়বে না এই বিষয়টাকে স্বাভাবিক ধরে ডাবিং এর ত্রুটিটাকে হজম করে নিলাম। নায়িকা একজন ছাগল প্রেমী। নায়কের সাথে পরিচয়ও এই ছাগল কেন্দ্রীক। নায়কের কোটি টাকার গাড়ির মাঝেই নায়িকার ছাগল দুইটা নাদুস নুদুস ছাগলের বাচ্চা প্রসব করলো কোনো রকম ম্যা ম্যা ডাক ছাড়াই।

নায়িকার সাথে নায়কের বিয়ে হওয়ার পর তারা তাদের পুরাতন জমিদার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সিনেমার অনেক খানি হয়ে গেছে, আমাদের চোখও ভূত দেখার জন্য নিশপিশ করছিল। যাক এবার বুঝি সুযোগ পাওয়া গেল। জমিদার বাড়িতে আইসা কাউয়া দেখলাম বিলাই দেখলাম কিন্তু ভূতের দেখা এখনো পাইলাম না। হঠাত হঠাত  জমিদার বাড়ির একটা স্টিল ছবি দিয়া আর জোরে "ক্য্য্য্য্যা" কইরা একটা সাউন্ড দিয়া পরিচালক মনে করাইয়া দিতেছিল "ভয় নাই এইটা ভূতের ছবি"। এইভাবেই শেষ হল ভূত বিহীন ভৌতিক প্রথম পর্ব।

বিরতির পর সাদা শার্ট আর পায়জামা পরা নরম চেহারার এক সুদর্শন যুবক এসে ধরলো দু:খের গান, শিল্পী মনির খান। সাদা পোশাক দেখে ধরে নিলাম এইটাই মেবি ভূত। নায়িকা একবার ছাদে কাপড় চোপড় তুলতে গিয়ে এই নিরীহ চেহারার ভূত টাকে দেখে ভয়ে চিল্লায়ে কান ঝালাপালা করে ফেলল। এত জোরে চিল্লানি দিছে যে ভূত ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। আর পরিচালক তো মাঝে মাঝেই জমিদার বাড়ির স্টিল ছবি আর ক্যা কু চিৎকুর থেরাপী দিয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছিল এটা ভৌতিক ছবি।

নায়িকার উপর যেহেতু ভূতের আছড় হয়েছে তাই ওঝার ব্যবস্থা করা হল। ওঝা আসার আগেই নায়িকার মাঝে ভূত ভর করে নায়কের গলা টিপে উচু করে ধরলো। গলা টিপে উচু করে ধরা যেন তেন নায়ক পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকলো। যেই কেবল দিয়ে নায়ক কে ঝোলানো হয়েছিল সেটা মুছতে গিয়ে নায়কের শার্টের কলারও খেয়ে ফেলছে এডিটর সাহেব।  ওঝা এসে অবশেষে ভূত কে শান্ত করলো। কিন্তু এই ব্যাটা খালি "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোলেমিন" এই এক দোয়া পড়ে "পুফ" শব্দ করে ফুঁ দিয়ে তার ওঝাগিরির কারিশমা দেখাতে লাগলেন। নায়িকা রত্না কোথায় গেল তা জানা যায়নি তবে ওঝার কারিশমায় বিছানায় ভূত কে শুয়ে থাকতে দেখা গেল।

সুদর্শন ভূত এবার ফ্ল্যাশব্যাকে গিয়ে তার ভূত হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করতে লাগলো। মানতেই হবে ভূতের ব্রেইন যথেষ্ঠ শার্প। এই ভূত হল সিনেমার আরেক নায়ক যার নাম বিশাল। ফ্ল্যাশব্যাকের কাহিনীতে দেখা গেল বিশাল কলেজের পরীক্ষা পেছানোর জন্য পিঠে ছুরি খেয়ে পরীক্ষার হলে পড়ে আছে। আর বিশালের বন্ধুরা পুলিশ সেজে এসে প্রিন্সিপালকে ভয় দেখাচ্ছে। এই পুলিশ গুলার কারো প্যান্টের চেইন খোলা, কারো মুখে এক খাবলা আলগা দাড়ি, কারো দৈত্যের শিং এর মতো নাকের দুই পাশ দিয়ে গোঁফ, কেউ আবার এক পায়ে স্যান্ডেল এক পায়ে জুতা, কেউ আবার পাঞ্জাবীর উপর পুলিশের পোশাক পরে চলে এসেছে। সম্ভবত স্কুলের কোনো নাটকে পারফর্ম করতে যাচ্ছিল তাদের ধরে আনা হয়েছে।

বিশাল ভূত হয় এই জমিদার বাড়িতে পিকনিক করতে এসেই। বৃষ্টিভেজা রাতে জমিদার বাড়ির ছাদে বিশাল নায়িকাকে ভালো বাসার কথা বলবে। অতি উত্তেজনায় সে আই লাভ ইউ বলতে গিয়ে পিছলা খেয়ে ছাদ থেকে পড়ে গেল। এই মর্মান্তিক ঘটনা দেখেও দর্শক হো হো করে হেসে দিলো। এই কারনেই ভূতের রাগ বেশি। এদিকে বিশাল মরে ভূত হওয়ার পর গাড়ি এক্সিডেন্টে নায়িকার মেমোরির কিছু কিছু ফাইল ডিলেট হয়ে গেল যার ভিতর বিশাল ফাইলও ছিল। ভাগ্যিস পুরা ফর্মেট হয়নাই।

ফ্ল্যাশব্যাক থেকে বাস্তবে ফিরে আসার পর দেখা গেল নায়িকা ছাদে হাটাহাটি করছে। সেই সময় বৃষ্টি শুরু হল। বৃষ্টিতে ভিজেই নায়িকার অতীতের কথা বিশালের কথা মনে পড়ে গেল। আগে দেখতাম স্মৃতি হারায় বাড়ি খাইয়া আবার স্মৃতি ফিরেও বাড়ি খাইয়া, আর এখন দেখতেছি বৃষ্টির ফোটাতেই স্মৃতি ফিরে আসে। ভূত তাড়ানোর জন্য ওঝা একটা তাবিজ দিয়েছিল। কিন্তু নায়িকা স্বপ্নেই সেই তাবিজ খুলে ফেলল। আর যায় কই, তাবিজ নাই, ভূত কি এখন তোমারে ছাড়বো চান্দু? ভূত ছাড়েনাই, নায়িকারে উপরে তুলতেই আছে তুলতেই আছে। কাহিনী হইলো নায়িকারে শূন্যে ভাসালো ঠিক আছে, কিন্তু যেই কেবল দিয়া উঠাইলো সেই কেবল মুছতে গিয়ে পিঠে উপর থেকে বাকি অংশের বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা বানিয়ে ফেলল। আরে বাপ, শূন্যে ভাসানোর দৃশ্য যদি চিত্রায়নই না করতে পারিস তবে কি দরকার সেই দৃশ্য রাখার?

তবে শেষ দৃশ্যে ভাললাগছে ভূতের সাথে নায়কের মারামারি, এক বার ভূত নায়করে মাইরা কাইত কইরা ফালায় আরেকবার নায়ক ভূতরে মাইরা উল্টায়া ফালায়। ভূতের লগে কিল ঘুসি লাত্থি গুতা চলতেই থাকে। শেষমেশ নায়িকা ভূতের পা চেপে ধরে অনুরোধ করে নায়ক কে ছেড়ে দিতে। এই ভূত নামেই ভূত। সে বৃষ্টির পানিতে ভিজে, মানুষের সাথে মারামারি করে, চেহারাতেও ভৌতিকতা নেই, আবার মন টাও নরম। নায়িকার অনুরোধেই সে নায়ক কে ছেড়ে দিল। বিটিভিতে আগে শক্তিমান নামে একটা সিরিয়াল হইতো। ভূত সেই সিরিয়ালের শক্তিমানের মত ঘুরান্টি দিয়া শূন্যে ভেসে বিদায় নিল। এই সিনেমার একেকটা শূন্যে ভাসার দৃশ্য মাস্টার পিস। যেই শূন্যে ভাসে, তারই পিঠের উপরে পিরামিড, পিরামিডের উপরের রশি মোছার বৃথা চেষ্টা, আর যে ঝোলে তার পুরো শরিরের অবস্থা দেখে মোটেও এইটারে ভৌতিক ব্যপার মনে হয়না।

আসছিলাম ভৌতিক সিনেমা দেখতে, কিন্তু সিনেমার একেকটা দৃশ্য দেখে মনে হয় কৌতুক সিনেমা। পাশের জন একটা কঙ্কালের মাথা দেইখা চইলা আইছিল। আহারে বেচারা :-/
কঙ্কালের চুল টাও দেখতে পেল না। পুরা সিনেমায় ডাবিং এর যথেষ্ঠ সমস্যা ছিল। অভিনয় বিরক্তিকর। আড়াই ঘন্টার সিনেমায় ভূতের উপস্থিতি ১৫মিনিটের বেশি না,  কিন্তু তাকেও আমাদের ভূত বলে ধরে নিতে হবে, এমনিতে দেখে বোঝা যাবে না। ভৌতিক সিনেমা হলেও ভয়ঙ্কর কিছু নেই। আর ঝোলাঝুলির দৃশ্যগুলা ছিল হাস্যকর। আমার কাছে এইটারে ভৌতিক সিনেমা মনে হয়নাই, কৌতুক সিনেমা মনে হইছে।

রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৪

গণিতবিদ বয়ফ্রেন্ড

গার্লফ্রেন্ড যখন গণিত বোঝে…
মেয়ে: জান তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো?
ছেলে: সামথিং বাই জিরো।
মেয়ে: ওয়াও!! সো সুইট :-*

গার্লফ্রেন্ড যখন গণিত বোঝেনা…
মেয়ে: জান তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো?
ছেলে: সামথিং বাই জিরো
মেয়ে: কি??? >_< তুই আমার সাথে আর কথা বলবি না >_<

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৪

বাংলাদেশের কোন জেলার মেয়ে কেমন

দেখে নিন কোন জেলার মেয়ে কেমন।

ঢাকা: এখানে কিছু মেয়ে আছে বেশ বুদ্ধিমতি, কয়েকটা আবেগী মেয়েও পাবেন, তবে কিছু বিচ্ছু মেয়ে আপনাকে গরম তেলে ভাজবে, সুন্দরী ফিটফাট মেয়ে প্রচুর আছে (ময়দা সহ ও বাদে) তা এদের ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরলেই বুঝতে পারবেন, তবে এমন কিছু মেয়েও পাবেন যারা আপনাকে প্রান খুলে ভালোবাসবে।

চট্টগ্রাম: আপনি খুজে দেখেন এখানেও কিছু মেয়ে বয়ফ্রেন্ড কে প্রচুর ভালোবাসে, তবে আপনে যদি বিটলা টাইপ মেয়ের খপ্পরে পড়েন তবে কপাল খারাপ, মাম্মা কসম চিটাগাং এর বুদ্ধিমতি মাইয়া আপনে হালি হালি পাইবেন, সুন্দরী মাইয়া অনেক, তয় কিছু মাইয়ার আবেগ দেইখা আবেগে কাইন্দা দিবেন।

বরিশাল: কিছু মাইয়া আপনারে ছিল্লা কাইটা বিটলবন লাগাইয়াও দিতে পারে, অনেক অনেক সুন্দরী মাইয়া পাইবেন, আর বুদ্ধিমতি? সেইটা আর বলতে, দেখা যাইতেছে বরিশাইল্যা কিছু মাইয়ার কাছে আপনে ভ্যাদা, আবেগী মাইয়া খুজতেছেন? বরিশালেও পাইবেন, স্বামীরে ভালোবাসার মত মাইয়াও অনেক।

খুলনা: কিছু মেয়ে স্বামীদের প্রান দিয়ে ভালোবাসে, কিছু আছে বোকা টাইপ আবেগী, আবার কিছু বুদ্ধিমতি মেয়ে বুদ্ধিমত্তায় আপনাকেও ছাড়িয়ে যাবে, তবে এমন কিছু মেয়ে পাবেন যারা আপনার জীবনটারে ভাজা ভাজা করে দেবে, অবশ্য সুন্দরী মেয়ে আছে প্রচুর।

কুষ্টিয়া: এই এলাকার কিছু মেয়েরে দেখে মনে হবে বোকা বোকা কিন্তু এদের চেয়ে চালাক বুদ্ধিমতি মেয়ে পাবেন না, সুন্দরী মডেল কন্যা মেয়ে অহরহ আছে, আবার কয়েকটা আছে আপনার সাথে ফেভিকলের আঠার মতো লেগে থাকবে, তবে যেই কয়টা বিচ্ছু মাইয়া আছে তারা আপনারে বক্সিং মাইরা নাকও ফাটায়া দিতে পারে, সবশেষে কিছু মাটির মনের মতো আবেগী মেয়েও পেয়ে যাবেন যাদের আবেগের কাছে সবসময় আপনি পরাজিত হবেন।

রাজশাহী: এইখান কার অনেক মাইয়া সেইরাম চালাক আর বুদ্ধিমতি, সুন্দরী মাইয়ার অভাব নাই।  আবার বোকাসোকা আবেগী মেয়েও আছে, তবে কসম বয়ফ্রেন্ডকে জানপ্রান দিয়ে ভালোবাসার মতো মেয়ে কম না, বিচ্ছু গুলা থেকে সাবধান।

রংপুর: আবেগ এর বেগ ঠেকাইতে পারবেন না এই এলাকার কিছু মেয়ের আবেগ দেখে, ফাজিল টাইপ মেয়েগুলা ফতুর করে ছাড়বে, তবে পিওর ভালোবাসা দেয়ার মতো মেয়েও আছে, সুন্দরী মেয়েও কিছু পাবেন আবার অনেক বুদ্ধিমতি মেয়েও আছে।

সিলেট: এই এলাকার মেয়ের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারনা পেতে উপরের গুলো আবার পড়ুন ।

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৪

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং আমার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি

বিষয়টা একটু ফ্ল্যাশব্যাক থেকেই বলি। চতুর্থ শ্রেনীতে থাকাকালীন আমি পঞ্চম শ্রেনীর কয়েকটা বই নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছিলাম। তবে পঞ্চম শ্রেনীতে উঠে দেখলাম বই চেঞ্জ হয়ে গেছে, আমি যা ঘাটাঘাটি করেছিলাম তা আর নেই।  বই চেঞ্জ মানে শিক্ষক রাও একটু আধটু বিপত্তি তে পড়েছিল। এতবছর ধরে যে সিলেবাস অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে এসেছে সেটা পরিবর্তন হলে বিপত্তিতে পড়াই স্বাভাবিক। তাদের আগে নতুন পাঠ্যপুস্তক ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে তারপর ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দিতে হবে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মতো দেশের অনেক স্টুডেন্ট শিক্ষকদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সার্ভিস পায়নি। এটা শিক্ষকদের দোষ না, শিক্ষাব্যবস্থার দোষ।

ষষ্ঠ শ্রেনীতে উঠার পর বই চেঞ্জ হয়েছিল কিনা জানা নেই। তবে তখনও সৃজনশীল সিস্টেম চালু হয়নি। ফলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেনীতে আমরা পুরাতন ফর্মেটেই পড়াশোনা করলাম। এই ফর্মেটে পরীক্ষায় সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর করতে হতো,  গণিতের ক্ষেত্রে পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি মিলিয়ে ১০০মার্কের পরীক্ষা হতো। অনেক পোলাপাইন (সবাই না) বাজার থেকে গাইড কিনে এনে প্রশ্ন আর উত্তর মুখস্থ করতো এবং পরীক্ষার হলে উগরে দিতো। ব্যস টুকটাক এই ছিল ২০০৮সাল পর্যন্ত সারাদেশের পরীক্ষা পদ্ধতি তথা শিক্ষা ব্যবস্থা। একটা চরম সত্য কথা হলো দেশের খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য জায়গায় শিক্ষকরাই ছাত্রছাত্রীদের মুখস্থ বিদ্যায় অভ্যস্থ করিয়ে নিতেন। অনুপ্রেরনা দান কারী শিক্ষকের সংখ্যা খুবই কম, খুবই কম। ছিল, আছে হয়তো থাকবে। তাই পোলাপাইন মুখস্থ ছাড়া কিছু বুঝতো না, জ্যামিতির উপপাদ্য সম্পাদ্য তো মুখস্ত করতোই সাথে অনেকে বীজগনিত পাটিগনিতও মুখস্থ করতো। এমন অবস্থা ছিল ডিনামাইট মেরে এভারেস্ট ধসিয়ে দেয়া গেলেও মুখস্থ করার অভ্যাস ছাড়বে না পোলাপাইন।

২০০৯ সালে অষ্টম শ্রেনীতে উঠার পর চালু হলো সৃজনশীল পদ্ধতি। পোলাপাইন নামই শুনলো প্রথম চেহারা দেখা তো দূরের কথা। স্যারেরাও জানেনা এই সৃজনশীল পদ্ধতিটা আসলে কি? তাদের জিজ্ঞাসা করলেও আম আম করে মুখটা বাংলার "৫" করে রাখে। পড়াশোনাও তাই খাপছাড়া ভাবে হতে থাকলো। অল্প কিছুদিন যাওয়ার পর প্রশ্নের কাঠামো সম্পর্কে টুকটাক ধারনা পেলাম। কিন্তু চিরকাল মুখস্থ বিদ্যায় অভ্যস্থ স্টুডেন্ট সত্যিই কিছু "সৃজন" করবে সে ব্যপারে সন্দেহ করা তো দূরে থাক, বিষয়টাকে অবাস্তব বলেই মনে হলো। আমার মুখস্থ করার অভ্যাস ছিলনা দেখে টুকটাক আনন্দেই ছিলাম। প্রথম সাময়িক পরীক্ষার আগেও জানতাম না আসলে আমরা ঠিক কি সৃজন করবো। অন্যান্য সাবজেক্টে যাই হোক সৃজনশীলের নামে সবাই মুখস্থবিদ্যাই উগরাচ্ছিল। সমস্যা বাধলো গনিতে। যারা চিরকাল উপপাদ্য সম্পাদ্য মুখস্থ করে এসেছে তাদের তো গনিতের সৃজনশীল প্রশ্ন দেখে মাথা খারাপ। তার উপর গনিতে অবজেক্টিভ থাকায় প্যান্ট খারাপের উপক্রম। ফলস্বরুপ সেবার গনিতে সারাদেশেই রেজাল্ট খারাপ। অন্যান্য সাবজেক্টেও রেজাল্ট খারাপ ছিল। সে রেজাল্ট অভিভাবক কে দেখানোর পর তারা যে তার সন্তান কে স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ কান মলা দিয়েছেন এ ব্যপারে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। কারন আমাদের অভিভাবক দের শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই, তাদের চাই রেজাল্ট। এই একটা বছর আমরা বুঝলাম না সৃজনশীলে মুখস্থ করে না সৃষ্টি করে। তবে এটুকু বুঝলাম লিখতে লিখতে হাত ব্যথা হলেও লিখা ফুরাবে না।

নবম শ্রেনিতে উঠে আমরা দুইদিন পরপরই নতুন নতুন খবর পেতে থাকি। একবার শুনি সৃজনশীল সিস্টেম মার খেয়ে গিয়েছে, আরেকবার শুনি সব সাবজেক্ট সৃজনশীল হবে তো আরেকবার শুনি চার সাবজেক্ট সৃজনশীল হবে। এমন হরেক রকম নিউজ পেতে থাকি তাই প্রায় সবগুলো নিউজকেই অবিশ্বাস করলাম। গাইড ব্যবসায়ীদেরই মজা। তারা প্রথমে সাধারন পদ্ধতির গাইড বের করলো, কিছুদিন পর সৃজনশীল গাইড বের করলো। গাইড পড়ুয়ারা দুই ধরনের গাইডই কিনলো। প্রথম সাময়িক পরীক্ষা যেদিন শুরু সেদিনও আমরা জানিনা আসলে আমাদের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে না মুখস্থবিদ্যা উদ্গীরন করন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। যদিও আমার তখন মনে হয়েছিল সৃজনশীল বলে কিছু নেই। সবই মিডিয়ার সৃষ্টি। যাই হোক প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শেষে বুঝলাম গনিত বাদে সব সাবজেক্ট সৃজনশীল।

"এদেশে বাজারে সৃজনশীল পদ্ধতির হরেক রকমের গাইড পাওয়া যায়, স্টুডেন্টরা সৃজনশীল পদ্ধতির গাইড কিনে সেটা মুখস্থ করে এবং পরীক্ষায় তা উদগীরন করে। এ পদ্ধতিটা এখনো চালু আছে কারন বাজারে সৃজনশীল গাইডের চাহিদা কমে যাইনি।" এভাবেই সৃজনশীল পদ্ধতির মুখস্থবিদ্যা প্রতিষ্ঠা লাভ করলো।  দশম শ্রেনীতে উঠে খেয়াল করলাম ফিজিক্স কেমিস্ট্রিতে উচ্চমাধ্যমিকের টপিক থেকে প্রশ্ন করা আরম্ভ করেছে। মানে কি? সৃজনশীল মানেই কি মাধ্যমিক লেভেলে থেকে উচ্চমাধ্যমিক লেভেলের প্রশ্নের উত্তর করা? যাই হোক টুকটাক ৩বছর আমরা এই সৃজনশীল পদ্ধতির নামে নাস্তানাবুদ হতে থাকলাম। কারন গতানুগতিক ধারার প্রশ্ন থেকে সেগুলো অনেক জটিল ছিল আর আমরাও এ পদ্ধতিতে দক্ষ হতে পারিনি তখন।  ৩বছরে না শিক্ষকরা জানলো সৃজনশীল কি না জানলো শিক্ষার্থীরা। অবস্থাটা ঠিক গভীর পানিতে হাবুডুবু খাওয়া সাঁতার না জানা মানুষটার মতো। এই হাবুডুবু খেতে খেতেই এস এস সি পার করলাম।

কলেজে উঠে আবার আমাদের বেলায়ই সব সাবজেক্ট সৃজনশীল হলো। কলেজের শিক্ষকদেরও অবস্থা সেই একই। কিভাবে প্রশ্ন করবে কিভাবে পড়ালে ঠিক হবে সেটাই ঠিক করতে পারলো না। অনেকে সঠিকভাবে সৃজনশীল প্রশ্নটাও করতে পারেনা। মোটামুটি আমাদের মাঝে বদ্ধমূল ধারনা জন্মে গিয়েছে সৃজনশীল মানেই প্যারা। এইখানে মুখস্থের আর কোনো কারবার নেই। সম্ভবত প্রয়োজনের তাগিদেই অনেকে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছিল। তবে অবশ্যই সেটা পর্যাপ্ত নয়। সেকেন্ড ইয়ারে উঠে দেখলাম আমাদের পরের ব্যাচের সব বইয়ের সাইজ চেঞ্জ হয়ে ছোট হয়ে গেছে। মোটামুটি ভেতরের টপিকেও বেশ পরিবর্তন। আচ্ছা এই বছর বছর বই চেঞ্জ সিলেবাস চেঞ্জ কোন ধরনের রসিকতা? শিক্ষকরা এর ফলে কোনো পদ্ধতিতেই ভালোভাবে অভ্যস্থ হতে পারছে না, না পারছে ভালো করে শেখাতে।

এবারের এইচ এস সি পরীক্ষার ব্যপার তো সবাই জানেন। ব্যপক আকারে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে এদেশের স্টুডেন্টদের এক বিরাট অংশকে নীতিহীন বানানোর প্রাথমিক প্রক্রিয়া চলল। যারা এই বয়সেই এসে নীতি বিসর্জন দিলো তারা ভবিষ্যতে কেন নীতি বিসর্জন দেবেনা? আজ নীতি বিসর্জন দিতে বাধ্য করা হলো, কাল হয়তো সে স্বেচ্ছায় দূর্নীতি করবে। প্রশ্ন ফাঁসের এই জোয়ারে ক্লাসের সবচেয়ে ভালো স্টুডেন্ট টিও প্রশ্ন নিলো কাপা কাপা হাতে। তার ভয় কি লাভ রিস্ক নিয়ে? এমনিতেই সৃজনশীল তাই উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করলে বেকায়দা। তাই সে ভালো ছাত্র হওয়া স্বত্ত্বেও পারিপার্শিক অবস্থার প্রেক্ষিতে নীতিটা বিসর্জনই দিয়ে দিলো। এবার মনে করি ২০% স্টুডেন্ট স্রোতের বিপরীতে গা ভাসিয়েছে। তাদের মাঝে কিছু বিশ্বাস করেনি প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, কিছু নিজের উপর আস্থা রেখেছে থেকেছে নীতিবান আর কিছু আছে এক্সট্রা অর্ডিনারি। এক্সট্রা অর্ডিনারিদের আমি আলোচনায় না টানি। এই প্রশ্ন না নেওয়া ছাত্রটি নিজের মেধা অনুযায়ি রেজাল্ট করেছে, কেউ হয়তো এ প্লাসও পেয়েছে। অন্যসময় হলে সে হয়তো এটাকে মেনে নিতো, কিন্তু যখন দেখছে প্রশ্ন পেয়ে একজন তার চেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে তখন কি তার খারাপ লাগবে না? যখন দেখবে প্রশ্ন পাওয়া ছাত্রটি দেশের সব পাবলিক ভার্সিটি তে পরীক্ষা দিতে পারছে অথচ সে পারছে না তখনও কি তার খারাপ লাগবে না? ফিজিক্স প্রশ্ন হার্ড হওয়ায় সে এটাতে একটু খারাপ করে ফেলেছে তাই সে অনেক পাবলিক ভার্সিটি তে পরীক্ষা দিতে পারছে না, অথচ প্রশ্ন পেয়ে ফিজিক্সে ভালো করে ফেলা ছাত্রটি সব ভার্সিটি তে পরীক্ষা দিতে পারছে সেটা দেখেও কি তার খারাপ লাগবে না? প্লাস মিস হয়েছে দেখে বাবা বকছে, অথচ প্রশ্ন নিয়ে প্লাস পাওয়া ছাত্রটির বাবা তার সন্তানকে মাথায় তুলে রেখেছে তখনও কি নীতিবান ছেলেটার ইচ্ছা হবে না নীতি বিসর্জন দিতে?

অনেকেই বলবে যারা যোগ্য তারা প্রশ্ন না পেলেও প্লাস পেতো। হ্যা এটা আমিও মানি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় এইচ এস সির রেজাল্টের প্রতিফলন ঘটেনা এটা কিন্তু সত্য। অনেকেই প্লাস না পেয়েও চান্স পায় অনেকে প্লাস পেয়েও চান্স পায় না।  কিন্তু যে ছেলেটা প্লাস না পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় তাকে কি এইচ এস সির রেজাল্টের ভিত্তিতে অযোগ্য বলা যাবে? সে হয়তো প্রশ্ন না পেয়ে এ গ্রেড পেয়েছে কিন্তু নিজের যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে, তবে কি সে এইচ এস সির রেজাল্টের ভিত্তিতে প্লাস পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়া ছাত্রটির চেয়ে অযোগ্য হয়ে যাবে? তো সমস্যা কি? বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময়ই দেখা যাবে কোনটা গাছপাকা আম আর কোনটা ফরমালিন দেয়া আম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কি আসলেই যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ দিচ্ছে? তারা বিভিন্ন গ্রেডিং এর মার প্যাচে আগেই তো নীতিবান ছেলেটাকে সরিয়ে দিলো। তার বদলে সুযোগ দিলো প্রশ্ন পাওয়া ছেলেটাকে। একটু ব্যাখ্যা করি। মনে করি একজন শুধু ফিজিক্স বাদে সব সাবজেক্টে প্লাস পেয়েছে। দূর্ভাগ্যক্রমে ফিজিক্সে চলে এসেছে মাইনাস। সে নিজ মেধাতেই এ রেজাল্ট করেছে। এবার আরেকজন প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়ে সব সাবজেক্টে এ গ্রেড পেয়েছে। তাহলে তার টোটাল পয়েন্ট দাড়ালো ৪.৪। বাস্তবতা হলো এই প্রশ্ন পেয়ে ৪.৪ পাওয়া ছেলে সব পাবলিক ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবে অথচ প্রশ্ন না পেয়ে ফিজিক্সে মাইনাসধারী ছাত্রটি সব ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবেনা। ভার্সিটি গুলো না মূল্যায়ন করলো নীতিবান ছেলেকে না মূল্যায়ন করলো জিপিএ ৫ পাওয়া ছেলেকে।    বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এ ২০% ছাত্রকে যদি সুযোগ না দেয় ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার তবে কি অবিচার করা হবেনা? যেহেতু প্রশ্নফাঁস হয়েছিল তাই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর উচিত ছিল প্রাপ্ত গ্রেড কে যথাসম্ভব কম প্রাধান্য দেয়া।
     
আবার আরেকটা বিষয় লক্ষনীয় তা হলো এবছর সব বোর্ডের পাশের হারই ৮০% এর আশেপাশে, অথচ যশোর বোর্ডের পাশের হার ৬০%। অর্থাত এখানে অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় খাতা যথেষ্ঠ কঠিন করে দেখা হয়েছে ফলে সামগ্রিক ভাবে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছে এ বোর্ডের স্টুডেন্ট রা।

এইচ এস সিতে পাশ করা স্টুডেন্ট দূরের কথা, মোট প্লাস পাওয়া স্টুডেন্টদের অর্ধেকও সিট নেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে। ফলে ক্রমশই হতাশাবাদীর সংখ্যা বাড়ছে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের করছে হতাশ। সত্যি কথা জগাখিচুড়িও এর চাইতে ঢের ভালো।

"আমরা  হাটতে শেখার আগেই আমাদের পায়ে একবার ছোট জুতা, আরেকবার বড় জুতা, একবার উচু জুতা, আরেকবার নিচু জুতা, আরেকবার চাকা লাগানো জুতা পরিয়ে দেয়া হচ্ছে পরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে আমরা হাটতে শেখার আগেই অভ্যস্থ না হওয়ায় পা মচকে ফেলছি নয়তো ভেঙ্গে ফেলছি। শেষমেশ কাউকে হয়তো হুইল চেয়ারেই বাকি জীবন টা কাটাতে হচ্ছে। এই হচ্ছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা"

 
Tricks and Tips