প্রথমত আমি ফুটবল একদম পছন্দ করিনা। বাংলাদেশে যেহেতু ব্রাজিল আর্জেন্টিনা ফ্যান বেশি তাই চাচ্ছিলাম জার্মানী জিতুক। কিন্তু এত বড় ব্যবধানে জেতার পর ব্রাজিলীয়ান প্লেয়ার এবং দর্শক দের মানসিক অবস্থার কথা ভেবে আমার নিজেরই খুব খারাপ লেগেছে। লুইজ এর কান্নাটা হৃদয় বিদারক। ঠিক এই মূহুর্তে আমার স্বদেশীদের মনে সাইক্লোন বয়ে যাচ্ছে। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে তাদের ভিতর টা। কেউ কখনোই প্রিয় দলের এমন পরাজয় কল্পনাও করতে পারে না। ভেঙ্গে পড়ার এটাই মূল কারন। আরেকটা বিষয় তার ভিতর কাজ করে, "আমার বন্ধুদের(ব্রাজিল কে ট্রল করে যারা) তাদের সামনে কোন মুখ নিয়ে যাবো ?" এই হীনমন্যতা তার মাঝে কাজ করে। এমন অবস্থায় আপনি আপনার বন্ধুকে ট্রল করলে কি হবে জানেন? সে আপনার কাছ থেকেও বাচতে চাইবে। সে আর চাপ নিতে পারবে না। এতে বহুদিনের সম্পর্কে ধরবে ফাটল। অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে খেলার জন্য বন্ধুকে দূরে ঠেলে দেয়া ঠিক নয়। কিন্তু ভাই মানুষের আবেগীয় বিষয়গুলোর মধ্যে খেলা উপরের দিকে। এমন কি খেলা মানুষের আবেগ কে যেভাবে নাড়া দিতে পারে, অন্যকিছু সেভাবে পারে না। এই কারনেই বন্ধুতে বন্ধুতে সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী ছাড়াছাড়ি হয়। বন্ধু বন্ধুকে চিমটি দিতে পারে, কিন্তু আপনার ট্রল করার স্টাইল টাই এমন যেন খামচে কিংবা খাবলে রক্ত বার করে দেবেন মাংস তুলে নেবেন। আপনি চিমটি তেই সীমাবদ্ধ থাকুন, রক্ত বের করে আনলে বা মাংস তুলে আনলে সে কিভাবে আপনার সাথে বন্ধুত্ব রাখবে? যেখানে এই রক্ত মাংস টা শরীরের না, হৃদয়ের্। সবকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করা টা আমাদের অভ্যাস। আজ যাদের আপনারা ট্রল করছেন কাল যদি আর্জেন্টিনার একই পরিস্থিতি হয় তখন এই এরাই দ্বিগুণ বিদ্বেষে আপনাদের খোচাবে সেটা মানেন? কি দরকার এসবের?
খেলার মাঝে দুদল পরস্পরের বিপক্ষে খেলে, কিন্তু খেলা শেষেই তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। আপনারা সমর্থক রাও এমন হয়ে যান না! যত বিরোধীতা খেলার সময়টুকু তে করেন, খেলা শেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। তাহলে প্লেয়ার সমর্থক একই কাতারে উঠে যাবেন।
আর সবসময় মনে রাখবেন, বন্ধুতে বন্ধুতে চিমটি চলে, খামচে খাবলে রক্ত মাংস বের করা চলে না।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন