অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

ব্লগার একটি গালি

দু:সম্পর্কের কয়েকজন কাজিনের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম । আর এইদিকে ব্লগে ঘোরাঘুরি করছিলাম। হঠাত এক কাজিন বলে উঠলো
-তুই সবসময় ফোনে কি করিস? যখনই দেখি হাত চলতেই থাকে?
*এইতো হাতের ব্যয়াম করি।
-সবসময় তোর ফাইজলামি। কি করিস সেইটা বল। নয়ত বক্সিং মারবো ।
বক্সিং খাওয়ার ভয়েই হয়ত বললাম
*এইতো ব্লগে ঘোরাঘুরি করি।
-ব্লগ কি?
*তোর মাথা, তুই বুঝবি না।
-বোঝালেই বুঝবো। তাড়াতাড়ি বোঝা ।
*ব্লগার নাম শুনেছিস?
-হ্যা শুনেছি।

তবুও ভালোবাসি মুভি রিভিউ : দেখার পর তৃপ্তি নিয়ে ফেরা যায় (মুভি রিভিউ)

গাজীপুরে বন্ধুর বাড়ি আসার পর প্রথম অভিজ্ঞতাটা মোটেও ভাল হয়নি সংগ্রামের । অতিথি কে চোর বলে পেটালে অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর হওয়ার কথা নয় । সব এই দস্যি মেয়ে সুনয়নার জন্য হয়েছে । সুনয়না তো নয় আসলে কুনয়না হবে । একের পর এক অঘটন ঘটিয়েই চলেছে । এমন দস্যি মেয়ে বাপের জনমেও দেখেনি সংগ্রাম। উফ চোর সাজিয়ে কি মার টাই না খাওয়ালো সবার কাছে । সিনেমা হলে গিয়েও মেয়েটা গ্যাঞ্জাম পাকালো । সিনেমা হলের দর্শকদের ভিতর মারামারি বাধিয়ে দিয়েছে । উল্টো সংগ্রাম কে হুমকি দিয়ে রেখেছে এই কথা বাড়িতে জানালে তারও ঠ্যাং ভেঙ্গে দেবে ।
সিগারেটের নেশায় সংগ্রামের মাথা ঠিক নেই । কিন্তু তার বন্ধুর বাড়িতে অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে । তাই এখানে সিগারেট খাওয়া নিষেধ । বন্ধুর কথা মত সংগ্রাম বাড়ির পাশে তালতলায় চলে যায় সিগারেট টানতে । কিন্তু তালতলায় এসেই সংগ্রামের চোখ ছানাবড়া ।
-তুমি সিগারেট খাচ্ছো!?
*খাচ্ছি না । পা----ন করছি ।

সংগ্রামের মুখে একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে কথাগুলো বলে সুনয়না । একটা গ্রামের মেয়ে যে এভাবে সিগারেট টানছে তা বিশ্বাস হচ্ছে না সংগ্রামের । কিন্তু হঠাতই সুনয়নার বাবা চলে আসায় সংগ্রামের হাতে সিগারেট টা ধরিয়ে পালিয়ে যায় সুনয়না । এ সাক্ষাত ফুলনদেবী যেন সংগ্রাম কে বিপদে ফেলানোর জন্যই এর জন্ম হয়েছে ।
দেখতে দেখতে বেশ কয়েকটা দিন কেটে যায় । সংগ্রামের বন্ধুরও বিয়ে হয়ে যায় । কিন্তু দস্যি মেয়েটার পাগলামী কমে না । আজ সারা বাড়ি পোস্টারিং করেছে "সুনয়না লাভ(প্রতিক) সংগ্রাম" । কি সাংঘাতিক ব্যপার! পোস্টার ছিড়তে ছিড়তে সুনয়নার বাবার সামনে পড়ে যায় সংগ্রাম ।
-তোমার হাতে ওগুলো কিসের কাগজ ?
*জ্বী জ্বী মানে … বাচ্চাদের গণতন্ত্র চর্চা করাচ্ছি ।
ইতস্তত ভাবে জবাব দেয় সংগ্রাম ।
এদিকে হঠাতই সংগ্রামের মায়ের ফোন আসে । সংগ্রামকে এখনি ময়মনসিংহ যেতে হবে । উল্লেখ্য সংগ্রামের মা ময়মনসিংহের পৌরসভার চেয়ারম্যান ।
সংগ্রাম সবার কাছ থেকে বিদায় নেয় । এদিকে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসায় সুনয়না । সে এখনো জানেইনা সংগ্রাম তাকে ভালবাসে কিনা । কিন্তু সংগ্রামের আর ময়মনসিংহ যাওয়া হয়না । এলাকার ত্রাস লাল ভাই অনির্দিষ্ট কালের জন্য এলাকায় হরতাল ডাকে । কোন গাড়িই এলাকা থেকে বেরুতে পারবে না । তাই আবার ফিরে আসে সংগ্রাম । এবার সুনয়নার কান্না অটোমেটিক খুশিতে কনভার্ট হয়ে যায় ।
সুনয়নার চুড়ি ভরা হাত ধরে টান দেয়ার ফলে সুনয়নার হাত কেটে রক্ত ঝরছে । সংগ্রামের এটা করা মোটেও ঠিক হয়নি । অযথা হাত টা কেটে গেল, তাই সংগ্রাম নিজেও নিজের হাত কেটে ফেলে । সুনয়না নিজের রক্তের সাথে সংগ্রামের রক্ত মিশিয়ে দেয় । লাল রক্তের সাথে লাল রক্ত । মনের সাথে মন ।
লাল ভাই সুনয়নার বাবাকে হুমকি দিয়েছে । পত্রিকা অফিস বরাবর লালের বিরুদ্ধে লেখা চিঠিটা লালের হাতেই পৌছে যায় । লালের হুমকিতে অসুস্থ হয়ে যায় সুনয়নার বাবা । কিন্তু ওষুধ না থাকায় বিপত্তি ঘটে । এদিকে হরতালের কারনে সব দোকান পাট বন্ধ থাকে । ওষুধ আনার দায়িত্ব সংগ্রাম নিজের কাধে তুলে নেয় । হরতাল না মেনে ফার্মেসী থেকে ওষুধ নেয়ার কারনে লাল আর লাল বাহিনীর সাথে সংগ্রামের ফাইট হয় । লাল কে মেরে সংগ্রাম অর্ধ উলঙ্গ করে দেয় । এই মারামারির দৃশ্য কেউ একজন ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় । লাল সংগ্রামের উপর প্রতিশোধ নিতে পারে বলে সুনয়নার পরিবার সংগ্রাম কে তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয় ।
সুনয়না কে রক্তাক্ত অবস্থায় ময়মনসিংহের রাস্তায় পাওয়া যায় । অবেশেষে সংগ্রামের মা তাকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেয় । সংগ্রাম যখন ডাইনিং এ যায় তখন সুনয়না কে দেখে চমকে ওঠে । ও কিভাবে তার বাড়িতে ? কিন্তু সুনয়নার চোখের ভাষা তাকে ভয় পাইয়ে দেয় । সেই রাতেই সুনয়না বটি নিয়ে সংগ্রাম কে আক্রমন করতে যায় । সংগ্রাম কিছুই বুঝতে পারেনা । শুধু নিজেকে সুনয়নার কাছ থেকে রক্ষা করে চলে । এক পর্যায়ে সুনয়না কে সে শান্ত করে ।
সংগ্রামের উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য লাল সুনয়নার পরিবারের সবাইকে হত্যা করে । সংগ্রামের কারনে তার পরিবার শেষ হয়ে যাওয়ায় সে সংগ্রামের উপর প্রতিশোধ নিতে আসে ।
সংগ্রামের বাড়িতে লাল বাহিনী আক্রমন করে । কিন্তু এ যাত্রায় সংগ্রামের প্যাদানি আর গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে লাল পালিয়ে যায় । রাতের আধারে গ্রামের বেশ কয়েকটা বাচ্চা কে লাল তুলে নিয়ে যায় । বাচ্চার বিনিময়ে দাবি করে সংগ্রাম কে । সংগ্রামের মা শিশু বাচ্চাদের কথা ভেবে নিজের ছেলেকে লালের হাতে তুলে দেয় । লাল সংগ্রামের মা, বোন আর সুনয়নার গলায় অস্ত্র ধরে সংগ্রাম কে পেটাতে থাকে আর তা ক্যামেরাম্যান দিয়ে ভিডিও করে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংগ্রামেরই জয় হয় ।
সংগ্রাম চরিত্রে অভিনয় করে বাপ্পী আর সুনয়না চরিত্রে মাহী ।
যা ভালো লাগেনি :
আমার দৃষ্টিতে সিনেমার নামকরন অনুযায়ী পুরো সিনেমায় রোমান্টিকতার অভাব ছিল । নায়ক নায়িকার প্রেম কিভাবে হয় এবং কেন হয় তা দর্শক ভালভাবে ধরতে পারেনি । এটা কাহিনীকার ও পরিচালকের ব্যর্থতা বলব। এক দৃশ্যে ডাবিংএর কিছু ত্রুটি চোখে পড়ে । কথা শোনা যাচ্ছিল অথচ সোহেল রানার (সুনয়নার বাবা) মুখ নড়ছিল না । সম্ভবত মুখ নড়ছিল না । সম্ভবত মুখ বুজে কথা বলছিলেন । মাহীর হাত ধরে টান দেওয়ার সময় চুড়ি ভেঙ্গে মাহীর হাত কেটে গিয়েছিল । বাপ্পীও ইচ্ছা করে হাত কাটে । অনেক রক্ত পড়েছিল, কিন্তু ঠিক কি ধরনের চিকিতসা নিয়ে এক রাতের মাঝে হাত কাটার সমস্ত চিহ্ন হারিয়ে গেল তা জানার ইচ্ছা ছিল । অমিত হাসান (লাল) যখন ফোনে সোহেল রানাকে হুমকি দেয় তখন ছিল রাত । অথচ সোহেল রানার ওখানে ছিল দিন । গাজীপুরের দুইটা এলাকা পৃথিবীর দুই প্রান্তে চলে গেল কিনা তা ছিল ভাববার বিষয় ।
হরতালের মাঝে ওষুধ আনতে গিয়ে বাপ্পী ফার্মেসী তে ঢুকল কিভাবে আর ঢুকেছেই যেহেতু তবে সাটার কেটে বের হওয়া লাগলো কেন তা বোধগম্য নয় । বাপ্পীর মা কে ভিলেন রা মারার জন্য প্রথমে ভ্যানে বেধে ফেলে এবং একজন ভ্যানের উপর উঠে অস্ত্র নিয়ে শাসাতে থাকে । পেছনে পেছনে আসতে থাকে ভিলেন দের ট্রাক ও মোটর বাইক বহর । বুঝলাম না, যদি মারারই ইচ্ছা থাকে তবে ভ্যানে বেধে এতোকিছু করার কি দরকার । এবার বাপ্পী উড়ে এসে ভ্যান এর নিয়ন্ত্রন নেয় এবং দ্রুত চালিয়ে সামনে থাকা ট্রাককে ধরে ফেলে(!) সেই ট্রাকে ছিল গাছের গুড়ি । একেক টা গুড়ির আঘাতে ভিলেন দের ট্রাক বিস্ফোরিত হতে থাকে . মনে হয় গাছের গুড়িতে বোমা ছিল(!) বাপ্পী যখন ভ্যান থেকে পড়ে যায় তখন গতিজড়তার কারনে ভ্যান টিকে সামনের দিকে যাওয়ার কথা । কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞান কে ভুল প্রমান করার জন্য ভ্যান টি পেছনের দিকে যেতে থাকে এবং মোড় নিয়ে বাধের ঢালু পথে নেমে যায় । কিন্তু সামনের চাকার পেছনের দিক একটি পাথরের সাথে আটকে যায় আর তাতেই ভ্যান টা থেমে যায় (!) সব অপদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র । অবশেষে বাপ্পী একটি দড়ি (দড়ি পেল কোথায়?) ছুড়ে মেরে ভ্যান টিকে তুলে আনে (!!!)
কোরিওগ্রাফি ভাল হয়নি ।
সিনেমায় দুই শিশু শিল্পীকে আরো ভালোভাবে ব্যবহার করা যেত । তাদের মৃত্যু না ঘটালেও হত ।
শেষ দৃশ্যে বাপ্পী যখন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে তখন তাকে হাসপাতালে নেয়ার বদলে দিতির(বাপ্পীর মা) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দেয়া মোটেও যুক্তিযুক্ত ছিল না । পৌরসভার চেয়ারম্যান তো তাই সব জায়গায় ভাষন ।
যা ভালো লেগেছে :
পুরো সিনেমায় অমিত হাসানের অভিনয় দর্শকদের প্রচুর বিনোদন দিয়েছে । অমিত হাসানের অর্ধ উলঙ্গ হওয়ার পরের অভিব্যক্তি দারুন ছিল । শেষ দৃশ্যে অমিত হাসানের "পাতা খামু পাতা খামু, আমারে ছাগল পাইছে" এই বলে গাছের পাতা ছিড়ে ফেলার দৃশ্যটা ফাটাফাটি । মাহীর সিগারেট টানার দৃশ্য এবং এর পরবর্তী দৃশ্য উপভোগ্য ছিল । গান গুলোর চিত্রায়ন ভাল ছিল বিশেষ করে "তুমি আছো নজরে নজরে" গানটার চিত্রায়ন আসলেই অনেক ভাল হয়েছে । মাহীকে এই গানে কালো পোষাকে খুব সুন্দর লাগছিল বলা যায় মাহীর এযাবতকালের সেরা লুক । ব্যাকগ্রাউন্ড দর্শকদের ব্যবহার টাও কিছুটা ভাল ভাবেই হয়েছে । অন্যান্য সিনেমায় এই উতসুক জনতা কে স্ক্রিনে দেখানো খুবই দৃষ্টিকটু লাগত ।
সর্বোপরি কিছু ভুল ত্রুটি থাকলেও সিনেমাটা দেখা যায় । ভুল ত্রুটি অন্যান্য সিনেমার তুলনায় কম তাই সিনেমাটা দেখা উচিত ।

আমার ভালোবাসা আজকাল দর্শন : কমেডি নয় তবুও সিনেমাটা আপনাকে হাসাবে (মুভি রিভিউ)

যদিও সিনেমাটা কিছু দিন আগের কিন্তু মজা তো সবসময়ই নেয়া যায় .। তাই লিখলাম রিভিউ টা .। রিভিউ বলতে যা দেখেছি তাই লিখছি .।
আমার লাইফে সিনেমা দেখতে গিয়ে এতো মজা কোনদিন করিনি। চেয়ারের উপর দুই পা তুলে দিয়ে কুটুম হয়ে বসে উপভোগ করলাম শাকিবের ভালোবাসা আজকাল।
সিনেমার শুরুতেই বিয়ে বাড়ির দৃশ্য। বিয়ে বাড়িতে দেখা গেল কাবিলা কে, যে কিনা তার এক সহকারী কে বারে বারে বিয়ে করায় । সহকারী বাসর রাতে কনেকে দুধের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গয়না চুরি করে। তাও যেই সেই ঘুমের ওষুধ না। খাওয়ানোর সাথে সাথে একশন(!), আবার গয়না চুরি হয়ে গেলেই একশন ফুরিয়ে যায়। এই ওষুধের নাম দেয়া যায় কারযসিদ্ধি ওষুধ
হঠাতই টাশকি খাওয়ার মত দৃশ্য! জ্বী ভাই আমি সহ হলের সবাই টাশকিই খেয়েছিল নায়কের আবির্ভাবে।
গ্রামের একদল বখাটে মেয়ে আমাদের নায়ক কে তাড়া করতে করতে নিয়ে যায়। সে কি তাড়া! দেখার মত দৃশ্য। ভাগ্যিস অন্যান্য সিনেমায় বখাটেরা মেয়েদের তাড়া করে যেমনটা করে তেমন কিছু ঘটেনি। ঘটলে(?) আমার দোস্ত বলে উঠল “দোস্ত শাকিব কেস না করলে আমি কেস করুম, এডাম টিজিং এর এই ইস্যু হাতছাড়া করা যাইবো না”
শাকিব মায়ের মাথায় হাত রেখে কসম করে কাবিলার সাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। প্রথম দিকে শাকিব কাবিলার কথা মত কাজ করতে রাজি না হলেও কাবিলা যখন শাকিব কে কসম এর কথা মনে করিয়ে দিল তখন শাকিবের অবস্থা আর আবহ সঙ্গীত দেখে আমাদের চোখেও পানি চলে এলো (!)। আপ্নার চোখেও আসবে সিওর
এবার নিঃস্বার্থ ঘটক খোজ দিলো বড়লোকের মেয়ে মিস চুমির। ডিরেক্টর এর তেলেসমাতিতে গ্রামের ছেলে শাকিব হেভি ড্রাইভিং করে এয়ারপোর্টে গেলেন মিস চুমি কে আনতে। এতোক্ষনে দেখা মিলল নায়িকা মাহীর। যাকে কিনা ১৪ বছর হেভি সিকিউরিটি দিয়ে এক ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল (সিকিউরিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই)। হেভি সিকিউরিটি কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মাহি চলে এলো বাংলাদেশে। এই পরযায়ে শাকিব কে দেখলাম “Mrs. & Miss Sumi” লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অপেক্ষা করতে(!) আচ্ছা “Mrs. & Miss Sumi” দ্বারা কি বোঝায়? চুমি কি অর্ধেক বিবাহিত আর অর্ধেক অবিবাহিত? ভাবনার বিষয়
মাহি এবারো সকলের চোখে ধুলা দিয়ে নকল মিস চুমি সেজে শাকিবের সাথে চলে এলো। নায়িকার রুপ দেখে নায়ক অভিভুত, পুলকিত হবেনা তা কি হয়? মাহি কে বাসায় আনার পর শাকিব যে এক্সপ্রেশান টা দিল তা আমার লাইফে দেখা বেস্ট। আপনি শুধু এক্সপ্রেশান টা দেখার জন্য সিনেমা টা দেখতে পারেন। শাকিবের মোচড়ানী আর লাল ঠোট দেখে পাশের থেকে বন্ধু বলে উঠলো “দোস্ত নায়ক কই গেল? :-o “ জ্বী ভাই, ওই মোচড়ানি দাতাই আমাদের নায়ক
এরপর খাওয়া দাওয়া পরব। কিন্তু আমার দৃষ্টি ছিল ডাইনিং টেবিলের খাবারের দিকে না, পেছনে কয়েকটা টিকটিকি দেখলাম। ডিরেক্টর সাহেব টিকটিকি গুলোকে ভাড়া করেছেন কিনা কে জানে। এবার শুরু হল গান, গানের ভিতর ব্যবহৃত এতো ছোট ছোট পিরামিড ডিরেক্টর সাহেব কোথায় পেলেন বুঝতে পারলাম না। নাকি শাকিব মাহি কে কোনো উপায়ে পিরামিডের সমান বানিয়ে দিলেন(!) নতুন আবিষ্কার
একটু পরে মাহি বলল “আমি ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখেছি বান্দরবানের কাছে একটা পুরনো রাজবাড়ি আছে”। বুঝলাম না দেশে এতো রাজবাড়ি রেখে কি ইন্টারনেটে শুধু বান্দরবানের বান্দর বাড়িই দেখায়? মনে হয় সার্ভারে প্রবলেম ছিল।
একটু পর দেখা যায় মাহি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে মাহির খোজ দেয়ার জন্য মাহির বাবা পেপারে বিজ্ঞাপন দেয়। সেই বিজ্ঞাপন দেখে মাহি কে গুন্ডা রা তাড়া করে। হঠাত শাকিব কে দেখলাম বাশি বাজাতে। শাকিব কি নাইটগার্ড না রেফারী যে সবসময় পকেটে বাশি থাকে? যাক আমরা একটা সব্যসাচী নায়ক পেলাম যে কিনা পার্ট টাইম নাইটগার্ড আর রেফারীর জব করে।
বিরতির পর মাহি কে দেখালাম বান্দরবান নিয়ে যাওয়া হল। বুঝলাম না, মাহি কে বেধে ঢাকা থেকে বান্দরবান কিভাবে আনা হল? মনে হয় তিনজন পিঠে পাখনা লাগিয়ে আকাশ দিয়ে উড়ে এসেছে। কাবিলা এখনো শাকিব কে শাকিবের মায়ের কসম দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন। টিস্যু পেপার নিয়ে যাবেন। কসমের কথা মনে করিয়ে দিলে যে আবহ সঙ্গীত আর শাকিবের যে মুখের চেহারা হয় তাতে আপনারই কান্না চলে আসবে
হঠাতই ফোন এলো শাকিবের মা মারা গেছেন। শাকিব ম্যারাথন দৌড় দিয়ে বান্দরবান থেকে তার মায়ের বাড়িতে চলে এলেন। কিন্তু একি! সিনেমার প্রথম দৃশ্যে দেখা গেলো শাকিবদের পাকা বাড়ি! পারেও বটে। শাকিব কে যেন নেক্সট অলিম্পিকে পার্টিসিপেট করানো হয়। দিনের দিনই শাকিব কে তার মায়ের কবরে মাটি দিয়ে ফিরে আসতে দেখা গেলো। শাকিব কে খালি দৌড়াতেই দেখলাম
এবার নায়ক মাহি কে উদ্ধার করল কাবিলার কারাগার থেকে। ওমা একি! কি সুন্দর জোনাকি! মাহির আবদারে শাকিব পানিতে নেমে পড়লেন জোনাকি ধরতে(ডাঙ্গায়ও জোনাকি ছিল)। জোনাকি ধরার সেকি ইশটাইল! আমি ভাবছি শাকিব কি পানিতে নেমে মশা মারছে? অনেক কষ্টে শাকিবের হাতে ধরা দিল জোনাকি। আজব ব্যাপার। জোনাকি গুলো শাকিবের হাতে আসতেই আলো বেড়ে গেলো ১০০ গুন। জোনাকি পোকা ফ্লাশ মারছে। লাইফে এই ফার্স্ট ফ্লাশ মারা জোনাকি দেখলাম। ডোন্ট মিস ইট। জীবনে অনেক কিছু দেখতে পাবেন কিন্তু ফ্লাশ মারা জোনাকী দেখতে পাবেন না
এক দৃশ্যে দেখলাম মাহি বলছে “মনে হয় বৃষ্টি আসবে” । কিন্তু “বৃষ্টি” বলার আগেই ডিরেক্টর এনিমেটেড বৃষ্টি দিয়ে দিলেন। অথচ নায়ক নায়িকা টের পেলেন না বৃষ্টি পড়ছে(!) বৃষ্টিতে যখন ভিজে দুজনেই চপচপে তখন শাকিব নিয়ে আসলো একটা কচু পাতা(!) এইবার এক কচুপাতা দিয়া দুইজন বৃষ্টি ঠেকা।
কিছু ট্রাক চালক পেপারে মাহির খোজ দেয়ার বিজ্ঞাপন টি দেখছে। ভাল করে খেয়াল করলাম খোজ দেয়ার জন্য ০১৭৩৭৩৬৬০** এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আমি সাথে সাথে ফোন দিয়ে বললাম “আমি মাহি কে ধরিয়ে দিতে পারব, ১৫লাখ আপনার আর ১৫লাখ আমার” । উত্তর আসলো “আপনি কেডা?”। অতঃপর লাইনটা কেটে গেলো। আমার আর ১৫লাখ পাওয়া হল না
এক দৃশ্যে শাকিব মাহিকে নিয়ে মোটরসাইকেলে পালাচ্ছেন। ভিলেন রাও তাদের পিছু তাড়া করেছে। একসময় শাকিব ত্রিমুখি রাস্তার মোড়ে মোটরসাইকেল পার্ক করল। আর আত্মবিশ্বাসের সাথে বলল “মোটরসাইকেল এখানে পার্ক করা দেখে ওরা ভাববে আমরা ওই পথে চলে গেছি(কি আত্মবিশ্বাস!)। তাই বলে তারা অন্য পথে চলে গেল। আপনি তিন রাস্তার মোড়ে মোটর সাইকেল রেখে ভাববেন “আমি এই পথে চলে যাই, ওরা ভাববে আমি অন্য পথে গেছি”। পারবেন তো ভাবতে? সবচেয়ে বড় কথা কোন আবুল মোটর সাইকেল রেখে হেটে যায়?
শাকিব আর মাহি ঘুরতে ঘুরতে তাদের কাঙ্ক্ষিত রাজবাড়ির কাছে চলে এসেছে। শাকিব ভেতরে দেখতে গেলেন কোনো সাপ টাপ আছে কিনা। কিন্তু একি! শাকিব উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে আলিরাজ তার টেপ রেকর্ডার চালু করলেন। যদিও শিবা জানত তিনি মাহির আসল বাবা না, তবুও শাকিব কে শোনানোর জন্য অকপটে আবার সব বললেন। আশ্চরযের বিষয় আলিরাজ যদি মাহির আসল বাবা নাই হন তবে সিনেমার শুরুতে তিনি বাবা হিসেবে যে কান্নাটা করেছিলেন তা বড্ড ‪#‎বেমানান‬। গোপন কথা শুনে ফেলার অপরাধে শাকিব কে মেরে অজ্ঞান করে ফেলা হল। শাকিব কে গাড়িতে বসিয়ে অভিনব কায়দায় দেখানো হল শাকিব মাহি কে ধোকা দিচ্ছে। তার জন্য শাকিবের হাত টা কে ধরে টাটা দেয়া হল। কিন্তু অজ্ঞান হলে যে কব্জি টাটা দেয়ার মত সোজা থাকে তা হয়ত আপ্নারাও প্রথম দেখবেন।
মাহি একটা স্বপ্ন দেখে প্রায়ই। স্বপ্ন টা সিনেমায় ইনভার্ট বা নেগেটিভ ভিডিও হিসেবে দেখানো হচ্ছিল। সিনেমার শেষে এসে স্বপ্ন টা রঙ্গিন হয়ে যায়। কিন্তু কি আশ্চরয! মাহি কে যে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে তাকে এতোকাল স্বপ্নে দেখা যায়নি, কিন্তু এখন মাহি একই স্বপ্নে তাকে দেখে ফেলে। পেছন থেকে চেপে ধরা ‪#‎লোকটাকে‬ কিভাবে দেখে ফেলল তা ভাবনার বিষয়। মাহির কি পেছনে চোখ লাগানো ছিল নাকি ক্যামেরার সাথে চোখ লাগানো ছিল তা বুঝতে পারলাম না।
এবার নায়িকা কে জিম্মি করে সব সম্পত্তি লিখে নেয়ার পালা। না না এটা আর দশটা বাংলা সিনেমার মত না। এখানেও ব্যাতিক্রম আছে। নায়িকার বাবা কে যে চুক্তিপত্রে সই করতে বলা হল খোদার কসম সেটাতে তিনি উল্টা সই করলেন। ধরুন চুক্তিপত্র টা আমি আমার দিক থেকে সোজা করে ধরে আছি। নায়িকার বাবা আমার বিপরিতে বসে আছে। তিনি ওই ভাবেই সই করে দিলেন। অর্থাৎ সই টা করলেন চুক্তিপত্রের উপরে বাম দিকে তাও আবার উল্টা। মাথায় বুদ্ধি আছে বস
হঠাতই নায়কের আগমন, সাই সুই করে কিছু মারামারি অতঃপর নায়কের পেটে ছুরি। ব্যাপার নাহ, নায়ক কখনো মরে না। নায়িকা কা কে দেয়া কিছু ঔষধি পাতা নায়িকার পকেটে এতোদিন পরও যে তাজা থাকবে তা ছিল আমার ভাবনার বাইরে। মনে হয় নায়িকার পকেটে ফ্রিজের সুবিধাদি ছিল। তিনি গাছ গুলো নায়কের পেটে গুজে দিলেন আর নায়ক সুস্থ হয়ে উঠলেন (!) ভাবুন(!)। উল্লেখ্য নায়ক নায়িকা বেশ কিছুক্ষন আবেগি আলাপ করলেন, ভিলেন রা সেইসময় আমাদের মত টিকেট কেটে তাদের আবেগী ডায়ালগ শুনছিলেন। নায়ক একটা কুড়াল জোগাড় করে সপাত সপাত কোপাতে লাগলেন। একসময় শুণ্যে কয়টা চক্কর দিলেন। শুণ্যে ‪#‎চক্কর‬ দেয়ার জন্যও তাকে অলিম্পিকে পাঠানো উচিত। শুণ্যে চক্কর দেয়া শেষে অভিনব কায়দায় চেয়ার নিয়ে বসলেন ভিলেনের উপরে। হঠাত নায়ক পেছন থেকে কুড়াল বের করলেন। তার মানে নায়ক এতক্ষন পিঠে কুড়াল নিয়ে শুণ্যে ঘুরছিলেন! কিন্তু শুণ্যে ঘোরার সময় তো কোনো কুড়াল ছিলো না তার পিঠে। যদি থেকেও থাকে তবে তা কিভাবে? আমার মনে হয় নায়ক ম্যাজিক জানে। আমরা একটা জাদুকর নায়ক পেয়েছি যে কিনা আমাদের নিত্য নতুন জাদু দেখিয়ে যাচ্ছে।
আপ্নেরা সিনেমাটা যদি না দেখেন তবে পুরাই মিস। সিনেমা দেখুন, মজা নিন আর চামের উপ্রে সিনেমা টা হিট করে দিন

 
Tricks and Tips