অগ্নি (মুভি রিভিউ)

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই..

এরশাদোলজি (রম্য)

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নারীদরদীয়া প্রেমিক পুরুষ আলহাজ হোমিওপ্যাথিক এরশাদ ওরফে পল্টিবাদি লাফাইন্যায়ে ডিগবাজীকে নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আজকের আলোচনা অজ্ঞানে বিজ্ঞানে সজ্ঞানী এরশাদ।

ফেসবুকে প্র্তারনার হাত থেকে সতর্কতা

আপনার অনেক পরিচিত কারো ফেইক আইডি খুলে আপনাকে হয়ত ফাদে ফেলানো হবে, আপনার গার্লফ্রেন্ড, আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে ফাদে ফেলানো হবে। আর লুল বালক হলে তো কথায়ই নেই, মিষ্টি কথাতেই আপনার ঘুম হারাম করে দেবে।

ইশি (ছোটগল্প)

বিল্ডিং গুলোর ছুটে চলা খুব উপভোগ করছে ইশি। কিন্তু একটু পরেই বিল্ডিং গুলো দৌড় থামিয়ে দিল। এই জ্যাম একদম ভাললাগেনা ইশির। সবকিছু কে থামিয়ে দেয়। তবে পথের নোংড়া ছেলেমেয়ে গুলো জ্যাম কে খুব ভালবাসে।

আজব প্রশ্নের গজব উত্তর

প্রশ্নঃ দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কি কি করা যায়? উত্তরঃ বিবাহ করা থেকে নারী পুরুষ কে বিরত থাকার জন্য উদবুদ্ধ করতে হবে। স্বামী স্ত্রীর বিছানা আলাদা করা যায়। বিছানা এক হলেই মহামারী দেখা দেবে এমন আতঙ্ক ছড়ানো যায়

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৫

আশিকি (মুভি রিভিউ)



বেশ কিছুদিন বিরতির পর আবারও সিদ্ধান্ত নিলাম হলে গিয়ে সিনেমা দেখবো। একা একা যেতে ইচ্ছা করছিল না তাই আঁখিকেও রাজী করিয়ে ফেললাম। তো আমরা দুজন যৌথভাবে দেখতে গেলাম যৌথ প্রযোজনার ছবি আশিকি।

যৌথ  প্রযোজনার এদেশী কলাকুশলী বলতে নুসরাত ফারিয়া, মৌসুমী এবং রেবেকা রউফ। আর বাকি সব ভারতীয় প্রতিনিধিদের মাঝে অঙ্কুশ, রজতাভ দত্ত, অরিন্দম দত্ত, সৌরভ দাস ছিলেন। ও হ্যা কয়েকটা সাদা ও কালো চামড়ার মানুষও ছিলেন যাদের নাম আমাদের বলা হয়নি :-/

 শুরুতে দেখা গেল রাহুলের (অঙ্কুশ) এক বন্ধু সাঙ্গপাঙ্গো নিয়ে রাহুল কে আক্রমন করতে গেল। কিন্তু রাহুলের ইমোশনাল ডায়লগে সাঙ্গপাঙ্গো সহ রাহুলের বন্ধুও গেল গলে। তারা এতই ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিল যে আমাদের চোখ দিয়েও দু'ফোটা জল বেরিয়ে যায় যায় অবস্থা। আরে ব্যাটা ডায়লগের সাথে এক্সপ্রেশনের তো মিল রাখবি?
জোর করে মানুষ হাসানোর চেষ্টা করলে তো সিনেমাই "হাঁস" মারবে আফ্রিদির মত।

নায়ক দর্শন যেহেতু হলো তাই ফরমেট অনুযায়ী এবার নায়িকা দেখার পালা। মেয়েদের কত না "বিচিত্র" জায়গায় ট্যাটু করতে দেখি, কিন্তু আমাদের নায়িকা ট্যাটু করেছেন পায়ে। যাক এটা কোনো ব্যপার না। যেহেতু নায়কের দৃষ্টিতে নায়িকার পা কে হাইলাইট করা হয়েছে তাই লাভ এট ফার্স্ট সাইটের মতো একে "লাভ এট লেগসাইট" বলে সংজ্ঞায়িত করা যায়।

এবার নায়িকার টার্ন। একটা ডাবল ডেকার বাসের দোতলা থেকে এক বাচ্চা পুতুল নিয়ে  খেলতে খেলতে
সেটা তার হাত থেকে পড়ে যায়। নায়ক সেই পুতুল নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে চলন্ত বাসের বাচ্চার হাতে পৌছে দেয়। পুরো ব্যপারটি নায়িকা নায়কের পেছন দিক থেকে অবলোকন করে। এবং এতেই সে ফিদা হয়ে যায় এবং বিয়ের ক্ষিধা পেয়ে যায়। সে তখনই দেশে ফোন করে জানিয়ে দেয় এই ছেলেকেই বিয়ে করবে। হাউ সুইট! এ তো "লাভ এট ব্যাকসাইট"। সব ছেলের "ব্যাক সাইড" দেখে যদি মেয়েরা প্রেমে পড়তো তাহলে দুনিয়াটা কতই না সুন্দর হত।

পরিচালক সাহেব এবার হিস্টরি রিপিটস উক্তির বারংবার ব্যবহার করে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গের কাহিনীই কপি পেস্ট করা শুরু করলো। নায়িকাকে হাত ধরে ট্রেনে তোলা, নায়ক নায়িকার ট্রেনের একই কম্পার্টমেন্টে অবস্থান যখন মনে করিয়ে দিচ্ছিল কোথায় যেন দেখেছিলাম এ কাহিনী। নায়ক তখন নিজেই জানিয়ে দিলো "আরে মিয়া এত ভাবার কি আছে? এ তো দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গের কাহিনী। হিস্টরি রিপিটস"। আমাদের দেশের ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে বড়জোর সিগারেটের পশ্চাদ্দেশ, কলার বস্ত্র ইত্যাদি থাকে। কিন্তু লন্ডনের ট্রেনের ফাকা কম্পার্টমেন্টে মেয়েদের "অন্তর্বাসও" পাওয়া যায়।

অন্তর্বাস আসলো কই থিকা সেই চিন্তা বাদ দিয়ে আবার সিনেমায় মনোযোগ দিলাম। তখন নায়িকার এক স্বল্পবসনা ফ্রেন্ড তাদের কম্পার্টমেন্টে ঢুকে পড়লো। কিন্তু নায়ক কে দেখেই এমন মুচড়ামুচড়ি শুরু করলো যে আমি ভাবলাম তার স্বল্পবসনের ভিতর কেউ মে বি তেলাপোকা অথবা "মোরগ( :-P ) " ঢুকিয়ে দিয়েছে।

পুরো সিনেমায় শুধু কো ইন্সিডেন্সের ছড়াছড়ি। যেভাবেই হোক যেকোনো সিচুয়েশনেই নায়ক নায়িকার দেখা হয়ে যাচ্ছে। ওয়েলস থেকে ফেরার পথে আবার নায়ক নায়িকার পাশাপাশিই সিট পড়লো। নুসরাত ফারিয়া ক্ষুধার্থ হয়ে যখন বললো "আই অ্যাম হাংরি" তখন সেটা আমরা ভুল করে অন্যকিছুও শুনে ফেলতে পারি। তাই ফারিয়া যেন পরবর্তীতে বাক্যটি বলার সময় একটু স্পষ্টতা অবলম্বন করে। নায়িকা ক্ষুধার ঠেলায় ট্রেন থেকে নেমে খাবার খুজতে গিয়ে ট্রেনই মিস করে ফেলল। আর তখন লেডি এন্ড জেন্টস  গুন্ডা মিলে নায়িকাকে আক্রমন করলো। নায়িকার উপর আক্রমন হলে নায়ক সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে এসে নায়িকাকে বাচাবে। আমাদের নায়কও চলন্ত ট্রেন থেকে এসে নায়িকাকে বাচিয়েছেন। রাত  টা তারা একটা বাড়িতেই কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলো। এখানেই এসে হিস্টরি ব্রেক করলো। নায়ক নায়িকা দুজনই ড্রিংক্স করে মাতাল হয়ে দুজন দুজন কে কিস করার জন্য উদ্যত হলো। এই কিসের দৃশ্যটাই সিনেমার বেস্ট সিন ছিল। এই মূহুর্তে পাশ থেকে আঁখি আমাকে বললো সব ডান। আঁখির সব ডান বলার উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম যখন নায়িকাকে চাদর পড়ে সোফায় বসে থাকতে দেখলাম। আমি এত টিউবলাইট ক্যান? :-P আমি বুঝিনা এই কাজ ডানের পর নায়িকারা কেন চাদর জড়িয়ে বসে থাকে? :-P

যাক অবশেষে তাহাদের প্রেম হইলো। যেহেতু প্রেম হইলো সেহেতু ঘাপলা তো একটা থাকবেই। ঘাপলা টা হলো নায়িকার ভাই এককালে নায়কের বোন মৌসুমীকে উত্ত্যক্ত করতো। একারনে তিনি নায়কের হাতে প্যাদানিও খেয়েছেন। যেহেতু নায়কের ভাইয়ের হাতে উনি প্যাদানি খেয়েছেন তাই তিনি এ প্রেম মেনে নেবেন না স্বাভাবিক। নায়ক একারনে তার পাঞ্জাবী ফ্রেন্ড কে পাঠায় নায়িকার ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত করতে। সবই ঠিক ছিল কিন্তু নায়িকার ভাইয়ের এসিস্ট্যান্স কে দেখে আমার মনে হলো উনি পাইলসের রোগী। পরিচালক জোর করে মানুষ হাসানোর জন্য এই পাইলসের রোগীর ব্যবহার করেছেন, যে কিনা ফাইল হাতে দাঁত কেলিয়ে অধিকাংশ সময় অর্ধ হামাগুড়ি টাইপ অবস্থায় থাকেন।

এ সিনেমার এক পর্যায়ে নায়িকার ভাই গাড়ি নিয়ে নায়ক কে তাড়া করে। নায়কের গাড়িতে তখন নায়িকা মওজুদ। তিনি রিয়েল কার চেজিং এর মজা নিচ্ছিলেন। কিন্তু দুইটা গাড়িরই তেল এক পর্যায়ে ফুরিয়ে যায়। এসময় দুইটা গাড়ির দুরত্ব বড়জোর ১০০ মিটার ছিল। কিন্তু নায়িকার ভাই গাড়ি থেকে বেরিয়ে নায়কের গাড়ির উদ্দেশ্যে সেই যে দৌড় শুরু করলেন আর থামাথামি নাই। ১০০ মিটার দৌড়াইতে ৩-৪মিনিট লাগে নাকি?? মনে হয় তিনি একটু করে দৌড়িয়ে হাপিয়ে গিয়ে আবার নিজের গাড়ির কাছে ফিরে গিয়ে রেস্ট নিয়ে আবার দৌড় শুরু করছিলেন। এই ফাকে নায়ক গাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজের গাড়িতে তেল ভরে আবার গাড়িতে গিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলেন। আরেক দৃশ্যে দেখা গেল নায়ক মুখে আঘাত পেয়ে নায়িকার বাড়িতে হাজির। তিনি দুই হাত দিয়ে নায়িকার ভাইয়ের গলা জড়িয়ে ধরে হসপিটালে গেলেন। কিন্তু ডাক্তার সাব তার মুখ বাদ দিয়ে হাতেই ব্যান্ডেজ করে দিলেন। মানে লন্ডনের ডাক্তাররা অনেক আগে থেকেই ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে ডাক্তার হন। হুদাই আমরা ১৫ ব্যাচ আর স্বাস্থ্যমন্ত্রীরে পঁচাই।

আরেকটা দৃশ্যে নায়িকার ভাই বিলাতী ভিলেনের হাতে মার খেয়ে পড়ে থাকে। নায়ক যায় তার শালাবাবুকে বাচাতে। কিন্তু এড্রেস তো জানেনা। তাই ফোন নাম্বার ট্র্যাক করে সে নির্দিষ্ট এলাকায় পৌছায়, কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছাতে পারেনা। কিন্তু রাস্তায় ৪বিলাতী গেরুয়া পোশাক পরে ঢোল ডুগি নিয়ে লন্ডনের রাস্তায় হরে কৃষ্ণ জপতে ছিল। ব্যপারটা যদি ভারতীয়দের দিয়েও করা হত তবুও মানানসই ছিল। এদিকে ভিলেন কয় "রাহুল এখনো আসেনা ক্যান?" আরে ব্যাটা তুই কি টেলিপ্যাথির মাধ্যমে নায়ক রে আইতে কইছস? যাই হোক নায়ক হর্ন টিপে ভিলেনের আস্তানায় পৌছালো (হর্ন টিপে কেমনে পৌছাইলো ব্যপার টা আমার মাথার উপর দিয়া গেল)।

সিনেমাটায় যত জায়গায় গাড়ি কিংবা ট্রেনের ভিতর থেকে বাইরের দৃশ্য ধারন করা হয়েছে ততবারই স্পষ্ট বোঝা গেছে সেই মান্ধাতার আমলের প্রজেক্টর আর পর্দার সিস্টেম এপ্লাই করা হয়েছে। এই ডিরেক্টর এত ফাকিবাজ ক্যান? একেতো শুরুর দিকে হিস্টরি রিপিটস বলে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গের কপি পেস্ট করা শুরু করেছিল, আবার গাড়ির দৃশ্যগুলাও প্রজেক্টর দিয়ে সারছে। ফাকিবাজি আসলে গোড়াতেই। সিনেমাটা তেলেগু "ইশক" সিনেমার নকল। এই ইশক সিনেমার অনুকরনে ২০১৪ সালে ঢালিউডে লাভ স্টেশন নামে একটা সিনেমা হয়েছিল। মানে কপির উপ্রে কপি। প্রশ্ন ফাঁসের এই যুগে এসব কপি পেস্ট জায়েজ আছে। বিভিন্ন পন্যের গায়ে লেখা থাকে "নকল হইতে সাবধান"। কিন্তু বাংলা সিনেমা গুলোর যা অবস্থা তাই প্রচারনার সময় পোস্টার এবং ট্রেইলারে "আসল হইতে সাবধান" লেখাটা যুক্ত করা জরুরি।

সিনেমায় প্রেম হয়ে যাওয়ার পর নায়ক নায়িকার একে অপরকে "তুই" সম্বোধন করে কথা বলাটা সাবলীল হয়নি। আমার মনে হয় প্রেমের সম্পর্কে "তুই তুকারির" ব্যপার টা ঠিক যায়না। যাওয়াতে হলে অনেক হার্ড ওয়ার্কের প্রয়োজন আছে।

আর সবচেয়ে বড় কথা হলো যেহেতু যৌথ প্রযোজনার সিনেমা এটা, তাই দর্শক খুজবে এতে নিজের দেশের প্রেক্ষাপট কতটুকু আছে? কলাকুশলী কতজন আছে? কিন্তু এ ব্যপারটাতে জাজ পুরোপুরি ব্যর্থ। সিনেমায় আমি বাংলাদেশকে খুজে পায়নি। যদিও যৌথ প্রযোজনায় এমন কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই যে উভয় দেশের প্রেক্ষাপট থাকতে হবে, কলাকুশলী থাকতে হবে। কিন্তু সিনেমা তো দর্শকদের জন্যই। এখন দর্শক যদি যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় নিজের দেশকে না পায় তবে সেটা যৌথ প্রতারনাই হবে। সিনেমায় তো বাংলাদেশের কোনো প্রেক্ষাপটই নেই। কলাকুশলী বলতে মাত্র তিন টা নারী চরিত্র। মৌসুমীর মত গুনী অভিনেত্রীকে পর্দার সামনে খুব বেশি আনাই হয়নি।

এবার কিছু ভালো দিক বলা যাক। সিনেমার গান গুলো ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে ভালোই লেগেছে। কোরিওগ্রাফিও খারাপ না। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের ব্যবহৃত লোকেশন গুলো ভালো ছিল। আর সবচেয়ে ভালো ব্যপার হলো সিনেমাটা নকল। এতে করে আমি আমার পাশে বসে থাকা বন্ধুকে সিনেমার পরবর্তী সিন গুলো আগে আগে বলে দিয়ে অবাক করে দেয়ার অফুরন্ত সুযোগ আছে :-P

শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ঃ আমাদের ক্যাম্পাস ( University of Barisal )

আচ্ছা একটা দৃশ্য কল্পনা করুন তো? আপনার ক্যাম্পাসের কোল ঘেষে বয়ে চলেছে একটি নদী এবং সেই নদীর উপর রয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ধনুকের মতো বাঁকা ব্রীজ! দৃশ্যটা দারুন না!? আপনার মনে হবে এ তো কোনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি!কিন্তু ঠিক এই দৃশ্যটাই রয়েক্সহে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। একটি ব্রীজ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রান্ত দিয়ে বেরিয়ে গেছে দুটি দীর্ঘ ব্রীজ(দুটিই প্রায় এক কিলোমিটার করে দীর্ঘ)।


University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১

university of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২





university of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৩

University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৪

University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৫
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৬
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৭
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৮
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ৯
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১০

University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ১১

University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১২
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৩
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৪
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৫
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৬
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৭
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৮
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ১৯

University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২০
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২১
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২২
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২৩
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২৪
দুইটি ব্রীজের মাঝখানেই যে অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থক্যটা এখানেই। এই দুইটা ব্রীজই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য শতগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্রীজ দুটি ক্যাম্পাসের কোল ঘেষে হওয়ায়ব্রীজ দুটিকে ক্যাম্পাসেরই অংশ বলা যায়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মান শৈলীতেও রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। পুরো ক্যাম্পাসে টাইলসের ব্যবহারের ফলে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের রঙ বিভিন্ন রকম মনে হবে। বর্তমানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ২২ টি বিভাগ।
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২৫
University of Barisal, Barisal University
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছবি ২৬

বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০১৫

এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের জন্য সুপার টিপস

আজ শুরু হচ্ছে বহুল আলোচিত এইচ এস সি (হরতাল সফল সার্টিফিকেট না আবার ;-) ) পরীক্ষা। এ নিয়ে দেশের বিপুল সংখ্যক পোলাপাইন টেনশিত। টেনশনের ঠেলায় কেউ কেউ খাটের নিচেও গিয়ে শুয়ে আছে হয়তো। আবার এই পরীক্ষার প্রিপারেশন স্বরুপ কেউ হয়তো বিস্তর শপিংও করে ফেলেছে।
আবার অনেকের মনে সদ্য শেষ হওয়া আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপের উত্তেজনাও কাজ করছে। 

যথারীতি আগামী কালকের পরীক্ষায় এমন কিছু পরীক্ষার্থী থাকবে যারা ফেসবুকে বাংলিশে লিখে অভ্যস্থ। তাদের উচিত অন্তত পরীক্ষার জন্যও অভ্র ভালো করে শেখা। নয়তো আগামী কাল বাংলা পরীক্ষাতে দেখা যাবে অভ্যাসের দরুন ভুল বশত ইংরেজী ফন্টে লিখে রেখে চলে এসেছে। পোলাপাইন সারাদিন যেইহারে ফেসবুকে থাকে তাই এহেন ভুল করা অসম্ভব না। অভ্র শিখো, কিংবা রিদ্মিক কি বোর্ড কোনো উপায়ে কলমের ভিতর ঢুকিয়ে নিয়ে যেও :-P

পরীক্ষার হলে যদি আলিম দার কে গার্ড হিসেবে পেয়ে যাও তবে তো তোমাদের বৃহ:স্পতি তুঙ্গে। দেখা যাবে তিনি তোমাদের পুরো পরীক্ষার সময় টাই ফ্রী হিট দিয়ে দিয়েছেন :3 বাছারা ইচ্ছা মতো কুপাও :3

পরীক্ষার তিন ঘন্টা সময় কে একটা ক্রিকেট ম্যাচ মনে করবে। মাঝে মাঝে পাওয়ার প্লে পাবে সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার করবে। মিড ওভারে একটু দেখেশুনে এক্সাম দেবে যাতে ভুল করে আউট না হয়ে যাও। স্যারদের বাউন্সার গুলো এড়িয়ে যাবে। দেখা যাবে বেশ ভালো একটা স্কোর দাড় করাতে পেরেছো।

নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার  সতর্কতার সাথে এবং ভালোভাবে ফিঙ্গারিং করবে। অবশ্য ফিঙ্গারিং আর সাথে হালকা পাতলা সাউন্ডের মাধ্যমেও কাঙ্খিত বন্ধুকে সংকেত দিতে পারো :3

আর সবচেয়ে বড় কথা হলো পরীক্ষাযেমন তেমন হোক, সিঙ্গেল রা জোড়া খুজে নিতে ভুল করবে না :3

শুক্রবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৫

জেলার দূরত্ব দুই তিনশো কিলোমিটার, কিন্তু মনের দূরত্ব দুই তিন মিলিমিটার।

একটা সময় যখন স্কুলে পড়তাম তখন আমাদের ক্লাসমেটরা ছিল সব আশেপাশের এলাকারই। প্রত্যেকের বাড়ি থেকেই প্রত্যেকের বাড়ি ২-৩কিলোমিটারের ভিতরই থাকতো। সকালে "আম্মু খেতে দাও, স্কুলে যাবো" বললেই প্লেটে খাবার চলে আসতো। সেটা নাকে মুখে খেয়েই স্কুলে ছুটতাম। স্কুলে অধিকাংশ পোলাপাইনই বাঁদরামি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আমার এখনো মনে আছে ক্লাস সেভেনে থাকতে একজনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলাম এবং তারপরই হুমকি পেয়েছিলাম তার বাড়ির সামনে দিয়ে গেলে আমারও মাথা ফাটবে। কিন্তু স্যারের কোলাকুলি থেরাপীতে আমি মাথা ফাটার হাত থেকে বেচে যাই, এবং যার মাথা ফাটিয়েছিলাম তারই বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাই।

স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠলাম। কলেজে উঠে পাওয়া ফ্রেন্ডগুলোর বাসা আর ২-৩কিলোমিটার সীমার মাঝে থাকলো না। এখানে অধিকাংশ ফ্রেন্ডই জেলার একেক প্রান্ত থেকে এসেছিল। একই জেলার ভিতরই কালচারের বিভিন্নতা লক্ষ্য করেছিলাম কলেজ লাইফেই। বাসার কাছেই কলেজ ছিল বিধায় এখানেও মায়ের রান্না খেয়েই কলেজ করেছি।

কলেজ শেষ করে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠেছি। এখন চাইলেই "আম্মু খেতে দাও, ভার্সিটিতে যাবো" বলতে পারবো না কারন বাসা থেকে ২৬১কিলোমিটার দূরে পড়তে এসেছি। এতে আমার আফসোস নেই বরং অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারী করার নেশায় মাতাল হয়ে আছি। এখানে যেসব ফ্রেন্ড পাবো তারা ২-৩কিলোমিটার নয় দুই-তিনশত কিলোমিটার দূরের। বিভিন্ন জেলার বন্ধুদের সাথে কাধে হাত রেখে দু:খিত কাধে থাবা মেরে অভিজ্ঞতা অর্জন করবো। উঠতে বসতে কিল ঘুষিতে খুনসুটিতে অভিজ্ঞতা ট্রান্সফার করবো। এটাই বা কম কিসে? ভাষাগত বিভিন্নতা খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করা যাবে। এই যা ভাষার ব্যপার আসতেই বরিশালে প্রথম আসার একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেলো।
নথুল্লাবাদ থেকে আমতলা যাবো তাই একটা ইজিবাইক থামালাম। ভাড়া জিজ্ঞাসা করলাম, আমাদের কানে এলো "ষাট ট্যাকা কইরা"। আমার ফ্রেন্ড তো বলল দেখতো, "বরিশালের বদলে ভুল করে অন্য জেলায় রেখে গেল কিনা? ৪০টাকা করে মিটা।" সুমন কে ধামকি দিয়ে বললাম, "আরে রাখ ব্যাটা, অন্য ভাবে জিজ্ঞাসা করি।" ইজিবাইক ওয়ালাকে দুজনের ভাড়া কত জিজ্ঞাসা করায় উত্তর পেলাম "দুইজন চৌদ্দ ট্যাকা" এরকম হয়ত আরো অনেক অভিজ্ঞতার সম্মুক্ষীন হতে হবে। তবে সব কথার এক কথা এই কালচারের বিভিন্নতা গ্রহনের সাথে সাথে বিভিন্ন জেলার বন্ধুদের কাধে হাত রাখার মতো নয় বরং থাবা মারার মতো আপন করে নিতে হবে। অনেকেই হয়ত ভাবছি নতুন বন্ধুদের সাথে মানিয়ে নিতে পারবো তো? আরে ব্যাটা এরকম চিন্তা থাকলে ঝেড়ে ফেল, থাবার বদলে লাত্থি খাবি কইলাম। বস আমাদের জেলার দূরত্ব দুই-তিনশত কিলোমিটার হতে পারে কিন্তু মনের দূরত্ব দুই তিন মিলিমিটারও হবে না কথা দিলাম। এখানে তুমি ভুলে যাবা তোমার জন্মদিন কবে কিন্তু আমরা তোমার মাথায় কেক কেটে খাবো। আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া উচিত এতদিন যা ছিলাম না ছিলাম ভার্সিটিতে বন্ধুত্বের সংজ্ঞাই পাল্টে দেবো।

[ও আরেকটা কথা, যার মাথা ফাটিয়েছিলাম সে আর আমি দুজনেই বরিশাল ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি :-P ]

বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার্থীদদের জন্য সুপার টিপস

যারা মেডিকেল এডমিশন টেস্ট দিবা তাদের কে একেবারেই টিপস টুপস (টিপাটিপি বা কপালের টিপ না) না দিলে অপরাধ হবে। কেলাইয়েন না আমার টিপস একেবারে ইস্পেশাল। যাউক গা কাজের কথায় আসি।

প্রথমেই বলে রাখি যারা পড়তে পড়তে ফোনের কী প্যাডের মতো বইয়ের পৃষ্ঠা নাম্বার খাইয়ালাইছো তারা এই পোস্ট দেখলেও কামে দিবো না। যারা অগার ঠ্যাং বগার ঠ্যাং মার্কা প্রিপারেশন নিছো শুধুমাত্র তাদের জন্যই এ টিপস। 

তোমরা ভাবতেছো যে আইজ রাইতের মধ্যেই সব বইয়ের এই মাথা ওইমাথা চৌমাথা কইরালাইবা। সেই লক্ষ্যে মজিলা ফায়ারফক্সের দুই তিনটা ট্যাব চালুর মতো ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি বইয়ের ট্যাব খুইলা বইসা আছো। আরে ব্যাটা একটু পরেই তোর মাথা ক্রাশ করবো, চোখ শাটডাউন দিবো। পরে সকালে বালতি বালতি পানি ঢাইলা তোমারে পরীক্ষা দিতে পাঠাইতে হইবো। তাই যা ট্যাব টুব খুলছো সব ক্লোজ কইরা ঘুমানোর ট্রাই করো। ঘুমের ভিত্রে একটা কিউট পোলা/মাইয়ারে পাশে নিয়া স্বপ্ন দেখো। আরে গাধা বিছানায় না স্বপ্নে দেখো এক্সাম হলে তোমার পাশে একটা কিউট মাইয়া/পোলার সিট।

সকালে ঘুম ভাঙার পর (অবশ্য জল থেরাপি না খাইলে সকালে ঘুম ভাঙার কথা না) মনেই হবে না তোমার এক্সাম আছে। সারারাত তোমার ভিত্রে এন্টিটেনশন প্রোগ্রাম কাজ করছে মিয়া। যাউক গা আম্মুর দাব্রানি খাইয়া শেষমেশ এক্সাম দিতে যাওয়াই লাগবে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়া এমন ভাব ধরবা যেন মেডিকেলে তোমার চান্স হইয়াই গেছে জাস্ট ফর্মালিটির জন্য এক্সাম দিতে আইছো। তোমার আশেপাশে যাদের সিট আছে চামের উপ্রে তাদের প্রিপারেশন কেমন জাইনা নিবা। এইবার মূল পরীক্ষার জন্য ৪টা টিপস দেই।

১। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর প্রত্যেকটা প্রশ্নের জন্য ক,খ,গ,ঘ যেই অপশন টা আগে চোখে পড়বে চোখ কান বুইজা সেইটা দাগাইবা। ভুলেও অন্য অপশন দাগানোর ট্রাই কইরোনা।

২। যদি ১নাম্বার পদ্ধতি পছন্দ না হয় তবে টস পদ্ধতি কাজে লাগাবা। তোমার কাছে এক টাকার কয়েন না থাকলে আশেপাশে কারো কাছ থেকে এক টাকা চাইবা। কয়েন না পাইলে চোখ বন্ধ কইরা দুই হাতের আঙ্গুল মেলানোর সিস্টেম এপ্লাই কইরা দেখতে পারো।

৩। যদি কোনোক্রমে মনে হয় তোমার পাশের কিংবা সামনের কিংবা পেছনের জনের প্রিপারেশনও অগার ঠ্যাং বগার ঠ্যাং মার্কা, তাইলে চোখ ট্যারা কইরা তার উত্তরপত্র হুবুহু কপি করবা। আরে সেট আলাদা, সে যেইগুলা ভুল মারতেছে তোমার উত্তরপত্রে আইসা তার অধিকাংশ সঠিক হয়ে যাবে। তোমার চান্স ঠেকায় কে?

৪। যারা একটু সাহসী তাদের জন্য এই সিস্টেম। হলে গিয়াই খেয়াল রাখবা আশেপাশে চশমা পড়া হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো নরম কোনো মাইয়া পোলা আছে কিনা। যদি থাকে তবে সাহস কইরা এই সিস্টেম এপ্লাই করবা। পরীক্ষা শুরুর পর কিছুক্ষন চুপচাপ হাওয়াই মিঠাইরে খেয়াল কইরা আলগোছে তোমার উত্তরপত্র তারে দিয়া দিবা। একটু হুমকি দিবা এড়িতেড়ি করলে হাওয়াই মিঠাই গাইলা দিমু। উত্তরপত্র তারে দিয়াই বলবা যেইগুলা সঠিক উত্তর সেইগুলা মার। সে হয়তো বলতে পারে "দেখো আমি কিন্তু স্যার কে বলে দেবো"
তুমি ঘাবড়াবে না। ঠান্ডা মাথায় বলবা, "স্যার কে বলে দিবা? আচ্ছা বলো, আমার এক্সাম বাতিল করলে তোমারে ফাসায়া তোমার এক্সামও বাতিল করুম। এইবার ভাবো কি করবা।" নিজের এক্সাম বাচানোর জন্য সে রাজি হয়ে যেতে পারে। তুমি খালি খেয়াল রাখবা সে তোমার উত্তরপত্র ঠিকমতো পূরণ করছে ককিননা। একেবারে লাস্টে তোমার উত্তরপত্র নিয়ে নিজে নিজে একটা মারবা। আরে নিজে নিজে যেইটা মারবা সেইটাই তোমার চান্সের ট্রাম্প কার্ড।

এইসব বুদ্ধি ফলো করলে তোমার চান্স আর ঠেকায় কে!? ধুর মিয়া মেডিকেলে চান্স হইয়া গেছে তোমার।

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সেদিন বৃষ্টি ছিল | ভৌতিক নয়, কৌতুক সিনেমা | মুভি রিভিউ

ইদানিং বাংলাদেশের কিছু কিছু  সিনেমার পোস্টারে "ডিজিটাল সিনেমা" "রেড ক্যামেরায় নির্মিত সিনেমা" "প্রথম অমুক সিনেমা" "ব্যয়বহুল সিনেমা" ইত্যাদী কথাবার্তা বিশেষ ভাবে লেখা থাকে। যখনই এসব লেখা চোখে পড়ে তখনই বুঝে নিতে হবে ঘাপলা আছে। হলে নতুন সিনেমা আসছে "সেদিন বৃষ্টি ছিল"। এটার পোস্টারে আবার বিশেষ ভাবে লেখা আছে "দেশের প্রথম ডিজিটাল ভূতের সিনেমা"। আমি ভাবছিলাম ডিজিটাল ভূত হয়তো কোনো প্রোডাকশন হাউজের নাম। পোস্টারের আরেকটা বিশেষত্ব হল বিশাল একটা কঙ্কাল টাইপ মাথা বসায়া ভৌতিক ব্যপার স্যপার ফুটায়া তোলা হইছে।

ভৌতিক ব্যপার স্যপার টা কেমন তা দেখতে চলে এলাম সিনেমা হলে। সিটে বসার পর পাশের জন বলল, "ভাই পোস্টারের ভূত দেইখাই সিনেমা দেখতে চইলা আইছি"। তারে কইলাম, "ভূত তো যে সে দেখতে পারে না, আপনার চোখে নাও পড়তে পারে" ওমনি "ক্য্য্য্য্য্য্যা" করে একটা সাউন্ড হওয়ায় পাশের জন নেচে উঠলো। আহ সাউন্ডেই বুঝা গেল আইজ সেই লেভেলের ভৌতিক সিনেমা উপভোগ করতে যাইতেছি। সিনেমার দুই তিন মিনিটের মাথায় শুরু হইলো মাইর পিট। বহুদিন পর বাংলা সিনেমার মাইর পিটে ঢোল তবলার বাড়ি শুনলাম। সিনেমা ডিজিটাল হইলেও অতীত ভুলেনাই।

সিনেমার প্রযোজক, গল্পকার এবং নায়িকা হওয়ার সুবাদে রত্নার কিঞ্চিৎ মেদ যুক্ত শরীর দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারন দর্শক জানে তারা ভূতের সিনেমা দেখতে এসেছে ;-) । ভূতের সিনেমায় মুখ নড়বে সাউন্ড হবেনা আবার সাউন্ড হবে মুখ নড়বে না এই বিষয়টাকে স্বাভাবিক ধরে ডাবিং এর ত্রুটিটাকে হজম করে নিলাম। নায়িকা একজন ছাগল প্রেমী। নায়কের সাথে পরিচয়ও এই ছাগল কেন্দ্রীক। নায়কের কোটি টাকার গাড়ির মাঝেই নায়িকার ছাগল দুইটা নাদুস নুদুস ছাগলের বাচ্চা প্রসব করলো কোনো রকম ম্যা ম্যা ডাক ছাড়াই।

নায়িকার সাথে নায়কের বিয়ে হওয়ার পর তারা তাদের পুরাতন জমিদার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সিনেমার অনেক খানি হয়ে গেছে, আমাদের চোখও ভূত দেখার জন্য নিশপিশ করছিল। যাক এবার বুঝি সুযোগ পাওয়া গেল। জমিদার বাড়িতে আইসা কাউয়া দেখলাম বিলাই দেখলাম কিন্তু ভূতের দেখা এখনো পাইলাম না। হঠাত হঠাত  জমিদার বাড়ির একটা স্টিল ছবি দিয়া আর জোরে "ক্য্য্য্য্যা" কইরা একটা সাউন্ড দিয়া পরিচালক মনে করাইয়া দিতেছিল "ভয় নাই এইটা ভূতের ছবি"। এইভাবেই শেষ হল ভূত বিহীন ভৌতিক প্রথম পর্ব।

বিরতির পর সাদা শার্ট আর পায়জামা পরা নরম চেহারার এক সুদর্শন যুবক এসে ধরলো দু:খের গান, শিল্পী মনির খান। সাদা পোশাক দেখে ধরে নিলাম এইটাই মেবি ভূত। নায়িকা একবার ছাদে কাপড় চোপড় তুলতে গিয়ে এই নিরীহ চেহারার ভূত টাকে দেখে ভয়ে চিল্লায়ে কান ঝালাপালা করে ফেলল। এত জোরে চিল্লানি দিছে যে ভূত ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। আর পরিচালক তো মাঝে মাঝেই জমিদার বাড়ির স্টিল ছবি আর ক্যা কু চিৎকুর থেরাপী দিয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছিল এটা ভৌতিক ছবি।

নায়িকার উপর যেহেতু ভূতের আছড় হয়েছে তাই ওঝার ব্যবস্থা করা হল। ওঝা আসার আগেই নায়িকার মাঝে ভূত ভর করে নায়কের গলা টিপে উচু করে ধরলো। গলা টিপে উচু করে ধরা যেন তেন নায়ক পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকলো। যেই কেবল দিয়ে নায়ক কে ঝোলানো হয়েছিল সেটা মুছতে গিয়ে নায়কের শার্টের কলারও খেয়ে ফেলছে এডিটর সাহেব।  ওঝা এসে অবশেষে ভূত কে শান্ত করলো। কিন্তু এই ব্যাটা খালি "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোলেমিন" এই এক দোয়া পড়ে "পুফ" শব্দ করে ফুঁ দিয়ে তার ওঝাগিরির কারিশমা দেখাতে লাগলেন। নায়িকা রত্না কোথায় গেল তা জানা যায়নি তবে ওঝার কারিশমায় বিছানায় ভূত কে শুয়ে থাকতে দেখা গেল।

সুদর্শন ভূত এবার ফ্ল্যাশব্যাকে গিয়ে তার ভূত হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করতে লাগলো। মানতেই হবে ভূতের ব্রেইন যথেষ্ঠ শার্প। এই ভূত হল সিনেমার আরেক নায়ক যার নাম বিশাল। ফ্ল্যাশব্যাকের কাহিনীতে দেখা গেল বিশাল কলেজের পরীক্ষা পেছানোর জন্য পিঠে ছুরি খেয়ে পরীক্ষার হলে পড়ে আছে। আর বিশালের বন্ধুরা পুলিশ সেজে এসে প্রিন্সিপালকে ভয় দেখাচ্ছে। এই পুলিশ গুলার কারো প্যান্টের চেইন খোলা, কারো মুখে এক খাবলা আলগা দাড়ি, কারো দৈত্যের শিং এর মতো নাকের দুই পাশ দিয়ে গোঁফ, কেউ আবার এক পায়ে স্যান্ডেল এক পায়ে জুতা, কেউ আবার পাঞ্জাবীর উপর পুলিশের পোশাক পরে চলে এসেছে। সম্ভবত স্কুলের কোনো নাটকে পারফর্ম করতে যাচ্ছিল তাদের ধরে আনা হয়েছে।

বিশাল ভূত হয় এই জমিদার বাড়িতে পিকনিক করতে এসেই। বৃষ্টিভেজা রাতে জমিদার বাড়ির ছাদে বিশাল নায়িকাকে ভালো বাসার কথা বলবে। অতি উত্তেজনায় সে আই লাভ ইউ বলতে গিয়ে পিছলা খেয়ে ছাদ থেকে পড়ে গেল। এই মর্মান্তিক ঘটনা দেখেও দর্শক হো হো করে হেসে দিলো। এই কারনেই ভূতের রাগ বেশি। এদিকে বিশাল মরে ভূত হওয়ার পর গাড়ি এক্সিডেন্টে নায়িকার মেমোরির কিছু কিছু ফাইল ডিলেট হয়ে গেল যার ভিতর বিশাল ফাইলও ছিল। ভাগ্যিস পুরা ফর্মেট হয়নাই।

ফ্ল্যাশব্যাক থেকে বাস্তবে ফিরে আসার পর দেখা গেল নায়িকা ছাদে হাটাহাটি করছে। সেই সময় বৃষ্টি শুরু হল। বৃষ্টিতে ভিজেই নায়িকার অতীতের কথা বিশালের কথা মনে পড়ে গেল। আগে দেখতাম স্মৃতি হারায় বাড়ি খাইয়া আবার স্মৃতি ফিরেও বাড়ি খাইয়া, আর এখন দেখতেছি বৃষ্টির ফোটাতেই স্মৃতি ফিরে আসে। ভূত তাড়ানোর জন্য ওঝা একটা তাবিজ দিয়েছিল। কিন্তু নায়িকা স্বপ্নেই সেই তাবিজ খুলে ফেলল। আর যায় কই, তাবিজ নাই, ভূত কি এখন তোমারে ছাড়বো চান্দু? ভূত ছাড়েনাই, নায়িকারে উপরে তুলতেই আছে তুলতেই আছে। কাহিনী হইলো নায়িকারে শূন্যে ভাসালো ঠিক আছে, কিন্তু যেই কেবল দিয়া উঠাইলো সেই কেবল মুছতে গিয়ে পিঠে উপর থেকে বাকি অংশের বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা বানিয়ে ফেলল। আরে বাপ, শূন্যে ভাসানোর দৃশ্য যদি চিত্রায়নই না করতে পারিস তবে কি দরকার সেই দৃশ্য রাখার?

তবে শেষ দৃশ্যে ভাললাগছে ভূতের সাথে নায়কের মারামারি, এক বার ভূত নায়করে মাইরা কাইত কইরা ফালায় আরেকবার নায়ক ভূতরে মাইরা উল্টায়া ফালায়। ভূতের লগে কিল ঘুসি লাত্থি গুতা চলতেই থাকে। শেষমেশ নায়িকা ভূতের পা চেপে ধরে অনুরোধ করে নায়ক কে ছেড়ে দিতে। এই ভূত নামেই ভূত। সে বৃষ্টির পানিতে ভিজে, মানুষের সাথে মারামারি করে, চেহারাতেও ভৌতিকতা নেই, আবার মন টাও নরম। নায়িকার অনুরোধেই সে নায়ক কে ছেড়ে দিল। বিটিভিতে আগে শক্তিমান নামে একটা সিরিয়াল হইতো। ভূত সেই সিরিয়ালের শক্তিমানের মত ঘুরান্টি দিয়া শূন্যে ভেসে বিদায় নিল। এই সিনেমার একেকটা শূন্যে ভাসার দৃশ্য মাস্টার পিস। যেই শূন্যে ভাসে, তারই পিঠের উপরে পিরামিড, পিরামিডের উপরের রশি মোছার বৃথা চেষ্টা, আর যে ঝোলে তার পুরো শরিরের অবস্থা দেখে মোটেও এইটারে ভৌতিক ব্যপার মনে হয়না।

আসছিলাম ভৌতিক সিনেমা দেখতে, কিন্তু সিনেমার একেকটা দৃশ্য দেখে মনে হয় কৌতুক সিনেমা। পাশের জন একটা কঙ্কালের মাথা দেইখা চইলা আইছিল। আহারে বেচারা :-/
কঙ্কালের চুল টাও দেখতে পেল না। পুরা সিনেমায় ডাবিং এর যথেষ্ঠ সমস্যা ছিল। অভিনয় বিরক্তিকর। আড়াই ঘন্টার সিনেমায় ভূতের উপস্থিতি ১৫মিনিটের বেশি না,  কিন্তু তাকেও আমাদের ভূত বলে ধরে নিতে হবে, এমনিতে দেখে বোঝা যাবে না। ভৌতিক সিনেমা হলেও ভয়ঙ্কর কিছু নেই। আর ঝোলাঝুলির দৃশ্যগুলা ছিল হাস্যকর। আমার কাছে এইটারে ভৌতিক সিনেমা মনে হয়নাই, কৌতুক সিনেমা মনে হইছে।

 
Tricks and Tips